শিরোনাম
◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে ১০ বছর আগে যা বলেছিলেন নরেন্দ্র মোদি ◈ জামায়াত কাদের সঙ্গে জোট করবে, জানালেন সেক্রেটারি গোলাম পরোয়ার ◈ ৫৩ বছর দেখেছি, আমরা আরও দু-এক বছর ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে দেখতে চাই:  নুরুল হক (ভিডিও) ◈ নবীনগরে বিপনী মার্কেটে আগুন, পুড়ে ছাই ১২ দোকান ◈ ‘ওরেশনিক’ রাশিয়ার নতুন ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে যা জানা গেল ◈ ফেসবুকে দাবি ‘মুগ্ধ ও স্নিগ্ধ একই ব্যক্তি’, যা বলছে ফ্যাক্ট চেক ◈ মাগুরায় উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গ্রেপ্তার ◈ জয়নাল থেকে বনে গেছেন ডা.আরিফ, নেই কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা (ভিডিও) ◈ গুমের বিচার ও গুম বিলুপ্ত করা আমাদের টপ প্রায়োরিটি : প্রেস সচিব ◈ ঢাকা মহানগরীতে মহাদুর্ভোগ

প্রকাশিত : ১৫ জুলাই, ২০১৯, ০৪:৪৯ সকাল
আপডেট : ১৫ জুলাই, ২০১৯, ০৪:৪৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আধুনিক নারীর বাহন হিসেবে জনপ্রিয় হচ্ছে স্কুটি, দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাধান হতে পারে নারীর অনেক সমস্যা

শাহীন খন্দকার : আধুনিক নারীর বাহন হিসেবে জনপ্রিয় হচ্ছে স্কুটি। আর যতই দিন যাচ্ছে বাহনটি নারীদের নিকট জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। পাশাপাশি কেউ কেউ এর সমালোচনা যে একেবারেই করছে না তাও নয়! তবে যুগের সাথে পাল্লা দিয়ে নারী স্কুটি নিজের অবস্থান তৈরি করছে এখন। তবে মহানগরীর রাস্তায় একটা মেয়ে স্কুটি চালিয়ে গেলে যেন কারোর-ই নজর এড়াচ্ছে না। আরো খেয়াল করলাম, ট্রাফিক সিগনাল বা জ্যামে থাকার সময় আশেপাশের আরোহীদের বাঁকা চাহনি। কয়েকজন রিক্সাচালকের ব্যাঙ্গাত্মক হাসি। দীপা ঘোষ বলছিলেন, তার প্রতিদিনের অভিজ্ঞতা।

দীপা ঘোষ বলেন, "যখন রাস্তায় স্কুটি নিয়ে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে বের হই তখন তারা স্কুটির চেয়ে আমার দিকেই বেশি চেয়ে থাকে! সব থেকে আশ্চার্য্য বিষয় হল স্কুটি চালানোর সময় পিছন থেকে অনেক ছেলে আছে যারা মোটরবাইক নিয়ে পিছু নেয়, ধাক্কা দেওয়ার জন্য। আমার সাথে এমন ঘটনা অনেকবার হয়েছে।

একবার তেজগাঁ লিংক রোডে ২/৩ টা বাইক এবং প্রতিটাকে তিনজন করে ছেলে। আমি দেখলাম আমার আর কোন জায়গা নেই। তখন আমি থেমে গেলাম। আমাকে সচেতন হতে হবে একই গতিতে ছেলেদের মত স্কুটি চালানো যাবে না, আর যদি চালাতাম তাহলে সেদিন দূর্ঘটনা ঘটতো।

রাজধানীর রাজপথে এখন অনেক মেয়েকেই স্কুটি চালাতে দেখা যায়, এমনকি মেয়েদের দ্বারা চালিত অ্যাপ ভিত্তিক রাইডও রয়েছে। দীপা ঘোষ বলেন, যখন তিনি স্কুটি চালান সেই সময়ে হাতে গোনা কয়েকজন মেয়ে রাজপথে দু’চারজন নারী স্কুটি চালাতেন। সে সময় এর সাথে কি এখন পরির্বতন হয়েছে ?

প্রশ্নে দীপা বলেন,"কোন পরিবর্তন হয় নি। এখন তো আমি চেষ্টা করি ১০টা মধ্যে বাসায় ফিরতে। কারণ বেশি রাত হলে রাস্তায় কী ধরণের দুর্ঘটনা ঘটে কে জানে। মেয়েটি বড় হয়েগেছে অজানা আতঙ্ক কাজ করে সব সময় “ দেশে যে হারে শিশু ধর্ষণ বেড়েগেছে। তাই ১০টার মধ্যেই বাসায় ফিরতে হবে। যেখানে আমার সহ-কর্মী ফটোগ্রার্ফার ছেলে বন্ধুরা রাত ১২টা কখনো কখনো ওরা সারারাত পর্যন্ত কাজ করে।

অফিসের এই বিষয়টিও আমার মাথায় রাখতে হয় সব কাজ ফেলে ১০ টার মধ্যে বাসায় ফেরার আমাকে তারা করে। আর এখানেই প্রশ্ন উঠে ‘কিন্ত কেন ’? পুরুষেরা যদি বাইক চালিয়ে কর্মস্থলে যেতে পারেন বা কত পারদর্শী তার প্রতিযোগিতা হতে পারে তাহলে নারীরা নয় কেন? এত গেল দৈনন্দিন জীবনের রাস্তায় চলার ক্ষেত্রে একটা উদাহরণ। আরিফা সুলতানা এই মেয়েটি রাজধানীর খামার বাড়ী কৃর্ষি অফিস কাজ করেন। কাজের প্রয়োজনে তাকে প্রতিদিনই মীরপুর নিউ ডিএইচ ও থেকে আসতে হয়। কিন্তু প্রশ্নের মুখে পরতে হয় তাকেও তিনি অফিস সময়ে নিয়মিত অফিস করতে পারেনা।

তিনি বলছিলেন "সকাল ৮টায় বাসা থেকে বেরহয়ে কিন্ত রাস্তায় জ্যামের কারণে যথা সময়ে অফিসে উপস্থিত হতে পারেন না। আমি স্কুটি করে এখন অফিসে আসি, আমার আশে-পাশের ফ্ল্যাট থেকে আমার মা- কে জিজ্ঞেস করেছে আপনার মেয়ে এভাবে গাড়ি চালিয়ে যায় আসে মরতে হবে না ! মেয়ে মেয়ের মতই চলা কি ভালো নয় । অফিস আদালে ত স্কুটি এখন জনপ্রিয় একটি বাহন। আর এই বাহনটি যুগের সাথে বাস্তব জীবনেও গুরুত্বসহকারে নিজের প্রয়োজনীয়তা বাস্তবমুখি করে তুলেছে। তবে স্কটিটি সবার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নেই বলে কেউ কেউ অভিমত ব্যাক্ত করেন।

পাশাপাশি প্রতিক্রিয়া ও জানিয়েছেন কেউ কেউ কেন স্কুটি ব্যাবহার কিংবা ব্যাবহার করা ঠিক নয়। আসলেই আমি রাজধানীতে নানা পেশার কয়েকজন নারী এবং পুরুষের সাথে কথা বলেছিলাম পুরুষের জন্য যেটা সাবলীল সেটা নারীদের জন্য স্বাভাবিক আচরণ নয় কেন? একজন পুরুষ বলছিলেন " যেমন ধরেন আমি অনায়াসে আমার বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে কক্সবাজা চলে যাচ্ছি বেড়াতে। কিন্তু আমার বোন কলেজে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে সে যদি যেতে চায় তাহলে আমি যেতে দিচ্ছি না”।

প্রশ্ন : কেন দিচ্ছেন না? উত্তরে তিনি বলেন, আমি দেখে এসেছি মেয়েরা সন্ধ্যার পরে বাইরে থাকতে পারবে না। আমি রাত ১০টায় এলেও ক্ষতি নেই। অপর আরেক পুরুষ বলছিলেন “ আমরা আসলে সাইকোলজিক্যাল স্থানে দাড়িয়ে আছি।
আমার বোন বা বাড়ীর মেয়েরা যদি রাত ১০টার পরে ঘরে ফিরে তাহলে আমি মেনেনিতে পারবো না। যদিও আমি বুঝতে পারছি এই মানুষিকতা থেকে বের হয়ে আসা প্রয়োজন। কেন মেনে নিতে পারছেন না? উত্তর: "এক্ষেত্রে আমার মাথায় কাজ করে তার সিকিউরিটির কথা। আমাদের দেশে সেই নিরাপত্তাটা নিশ্চিত করা হয়নি"।

রাজধানীর নামকরা স্কুলের শিক্ষিকা সাদিকা রহমান। তিনি বলছিলেন রাজধানী ঢাকা শহরের মত ঢাকার বাইরেও একই রকম পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয় মেয়েদের। তিনি বলছিলেন এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসতে হলে প্রথমত দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করতে হবে। তিনি বলছিলেন "আমি একজন শিক্ষক হিসেবে বলতে চাই এর পরিবর্তন করতে হলে গোড়া থেকে অর্থাৎ পরিবার থেকে কাজ শুরু করতে হবে।

সেখানে মেয়ে অথবা ছেলেদের আলাদা করে দেখার কোন সুযোগ যাতে তৈরি না হয় সে ব্যাপারটা যথেষ্ট শক্ত ভাবে শিখিয়ে দিতে হবে পরিবার থেকে। এরপর স্কুল। কারণ স্কুলে পঞ্চম,৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়া ছেলেদের মধ্যে আমি দেখেছি তার মেয়ে সহপাঠীদের অবজ্ঞা করতে। স্কুল পর্যায়ে প্রথম থেকে পদক্ষেপ নিতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়