ডেস্ক রিপোর্ট : বিদ্যুৎ কেন্দ্র (ছবি সংগৃহীত)বিদ্যুৎ উৎপাদনে নেপালে বিনিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারে আগামী শুক্রবার (২১ জুন)। দেশটির কোন কোন জায়গায় জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিনিয়োগ করতে পারবে, ওইদিন নেপালের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হতে পারে। এর আগে আগামী বুধবার (১৯ জুন) থেকে কক্সবাজারে ২ দেশের বিদ্যুৎ সচিব পর্যায়ের ৩ দিনের বৈঠক শুরু হচ্ছে। বাংলা ট্রিবিউন
বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, ‘আমরা বিদ্যুৎ খাতে আঞ্চলিক সহযোগিতার কথা বলছি বার বার। শুধুমাত্র ভারত নয়, আশেপাশের দেশগুলো থেকে বিদ্যুৎ আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। এরই ধারাবাহিকতায় নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আনার এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আনতে যে স্টিয়ারিং কমিটি করা হয়েছে সেই কমিটির এটি দ্বিতীয় সভা। এর মাধ্যমে এরই কার্যক্রমগুলো আরও সুদৃঢ় হচ্ছে এবং আরও জোরদার হচ্ছে।’
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নেপাল-বাংলাদেশ যৌথ স্টিয়ারিং কমিটি গত ফেব্রুয়ারিতে প্রথম বৈঠক করে। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় নেপালের কোন কোন জায়গায় বিনিয়োগ সম্ভব, সে বিষয়ে দুই দেশের কারিগরি কমিটি প্রতিবেদন দেবে। একই সঙ্গে উৎপাদিত বিদ্যুৎ কোন পথে বাংলাদেশে আনা যায় সে বিষয়েও প্রতিবেদন দেবে। আগামী বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার তিন দিন যথাক্রমে টেকনিক্যাল কমিটি, ওয়ার্কিং কমিটি ও স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবেশী দেশগুলোর নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৮ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন করেন। এরপর থেকেই বিদ্যুৎ বিভাগ প্রতিবেশী দেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছিল। জলবিদ্যুৎকে বলা হয়, সব থেকে কম দামে উৎপাদিত নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ। নেপালে অন্তত ৩০ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে। বিনিয়োগ করার পাশাপাশি ভারতীয় কোম্পানি জিএমআর-এর মাধ্যমে নেপাল থেকে আপাতত ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আনার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। সফল হলে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ আমদানি করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়।
বাংলাদেশ-নেপাল যৌথ ওয়ার্কিং গ্রপের আহ্বায়ক বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্মসচিব ফয়জুল আমীন বলেন, ‘এখনও নেপালের তরফ থেকে আমাদের জানানো হয়নি কোন কোন জায়গাতে আমরা কেন্দ্র নির্মাণ করতো পারবো। তবে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নেপাল বিষয়টি আমাদের জানাবে।’
তিনি বলেন, এর বাইরেও ভারতীয় কোম্পানি জিএমআর-এর কাছ থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির আলোচনা হচ্ছে। এ বিষয়ে এখনও ট্যারিফ (দাম) নির্ধারণে আলোচনা করছে পিডিবি এবং জিএমআর-এর মধ্যে। জিএমআর এবং পিডিবি ঢাকায় ট্যারিফ নির্ধারণী বৈঠক করলেও তা সফল হয়নি।
প্রসঙ্গত, ২০৪০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে ৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের মহাপরিকল্পনাতে বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। এজন্য ভারত ছাড়াও নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ।
প্রসঙ্গত, ভারত থেকে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পা রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :