প্রভাষ আমিন : বাজেট প্রস্তাবনার আগের দিন সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের একটি অঙ্গ-সংগঠনের পক্ষ থেকে এসএমএস এলো। তার শুরুর লাইনটি ছিলো, ‘সফল বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল’। দেখে আমি সেই সংগঠনের নেতাকে ফোন করলাম। বললাম, ভাই, আপনার দল ক্ষমতায়। তাদের বাজেট প্রস্তাবকে আপনারা স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল করবেন, সেটাও ঠিক আছে। কিন্তু বাজেটটি যে সফল হবেই, পেশ করার আগেই সেটি আপনারা নিশ্চিত হলেন কী করে? আমার প্রশ্ন শুনে তিনি শুধু হাসলেন। এখন যেমন পেশের আগেই বাজেটকে সফল দাবি করে আনন্দ মিছিলের আয়োজন করা হয়। আগে তেমনি ‘এই বাজেট গণবিরোধী, এই বাজেট মানি না’ স্লোগান লেখা ব্যানার তৈরি থাকতো। বাজেট শেষ হওয়ার সঙ্গেই সঙ্গেই বা কখনো কখনো পেশ হওয়ার আগেই রাজপথে স্টক ব্যানার নিয়ে মিছিল বেরিয়ে যেতো। সন্ধ্যায় বেরুতো মশাল মিছিল।
অনেকদিন ধরেই দেশে রাজনৈতিক শূন্যতা চলছে। সবকিছু এখন একতরফা। রাজপথে প্রতিবাদ এখন যেন দূর অতীত। মশাল মিছিল বিষয়টি নতুন প্রজন্মকে বোঝাতে ডমেন্টারির সাহায্য নিতে হবে। প্রতিবাদহীন এই নির্বিকার সময়ে আমরা সবার সঙ্গে ‘সহমত’ পোষণ করতে ব্যস্ত। তবে প্রতিবাদ একেবারেই হয় না, তা নয়। দেশের বৃহত্তম বিরোধী দল ফেসবুক কিন্তু রাজনীতিবিদদের মতো অতোটা নির্বিকার নয়। তারা সব ইস্যুতেই সোচ্চার। ফেসবুকের তীব্র প্রতিবাদের মুখে বাংলাদেশে অনেক দাবি আদায় করা গেছে। তবে এবার বাজেট নিয়ে ফেসবুক অতোটা সোচ্চার নয়। তা থেকে একটা প্রাথমিক ধারণা করা যায়, প্রস্তাবিত বাজেট অতো খারাপ হয়নি। তবে ফেসবুকের একটি কথা দিয়েই লেখাটি শুরু করছি। একজন লিখেছেন ‘টেলিফোনে কথা বলার খরচ বেড়ে যাওয়ায় এক তরুণের প্রেম ভেঙে গেলো। ব্রেকআপের দুঃখে সে সিগারেট খেতে গেলো। গিয়ে দেখলো, সিগারেটের দামও দ্বিগুণ হয়ে গেছে।’ এমন ছোটখাটো ফান ছাড়া এবারের বাজেটে তেমন বড় কোনও বদল নেই। নতুন অর্থমন্ত্রীর বাজেট প্রস্তাবনায় কোনো নতুনত্ব নেই। সরকারের আগের ১০ বছরের ধারাবাহিকতাই বজায় রেখেছেন আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতবার যা যা প্রশংসা করেছিলেন, বসিয়ে দিন; গতবার যা যা সমালোচনা করেছিলেন, বসিয়ে দিন; কোনো ভুল হবে না। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :