রাইসা মনোয়ার: মুদ্রণ জগতে সাধারণ কী-বোর্ডের পরিবর্তে এসেছে কম্পিউটারভিত্তিক নানা উপকরণ। এক সময়কার ঐতিহ্যবাহী 'টাইপ রাইটার' তাই এখন অনেকটাই বিলুপ্তির পথে। সরকারি-বেসরকারি কিছু প্রতিষ্ঠানে প্রচলন থাকলেও বাইরে এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমছে প্রতিনিয়ত। (সময় টিভি)
শত প্রতিক‚লতার মধ্যেও ঢাকার তোপখানা রোডে ধুঁকে ধুঁকে চলছে ছাপার পুরনো কয়েকটি যন্ত্র। আধুনিকতাকে বরণের পাশাপাশি ঐতিহ্যকে ধারণ করার আহ্বান এখানকার মুদ্রাক্ষরিকদের।
কী বোর্ডের এই শব্দ যতটা না কাজের প্রয়োজনে, তার চেয়ে বেশি-অলস সময় কাটানো কিংবা নিশ্চল যন্ত্রকে শান দেয়ার জন্য।
জাতীয় প্রেসক্লাবের উল্টাদিকের শেড দুটো মুদ্রাক্ষরিকদের জন্য বরাদ্দ থাকলেও সেখানে প্রায় সময়ই থাকে শুন্যতা। পুরনো অনেকে এই যন্ত্রগুলোর মায়ায় এতটাই পরেছেন যে, অনিশ্চয়তাকে মেনে নিয়েছেন অবলীলায়। তবুও কালের বিবর্তনের ধারার সঙ্গে পাল্টা দিয়ে ঐতিহ্য হাতছাড়া করতে চাননি তারা।
একজন জানান, বয়স হয়ে গেছে, তাই এখন আর কি করার। এখন তো শেষ বয়স। এটা আগে শিখেছি সরকারি চাকরির আশায়। তার পরে যাইহোক এখন এটাই নিয়ে বসে আছি, এখান থেকে যা মিলায় তা দিয়েই চলবে।
কমেছে আয়, সহজে পাওয়া যায় না যন্ত্রাংশ এমনকি মেরামতকারীও। তবুও পুরনো গ্রাহকদের ভরসায় বছরের পর বছর আঁকড়ে থাকা। তাঁদের মতে, এখনও অনেক মানসম্মত কাজ করার সুযোগ আছে এ যন্ত্র দিয়ে।
১৯৭৩ সালে তোপখানা রোডের এ জায়গাটিতে ৬৫ জন সদস্য শুরু করেন মুদ্রণের কাজ। সমিতির বর্তমান সদস্য ৩৪ জন। জায়গাটিতে অনেকেই ফটোকপি, বাইন্ডিংসহ অন্যান্য উপকরণ দিয়ে কর্মসংস্থান করতে বাধ্য হয়েছেন।
তোপখানা রোড মুদ্রাক্ষরিক সমবায় সমিতির কোষধ্যক্ষ মো.আকরামুল ইসলাম বলেন, প্রফেশানাল ভাবে যারা কাজ শুরু করেছে, তারা এখন কষ্টেই চলছে। কারণ এখানে তেমন আগের মতো কাজ কাম নেই। তবে যে যতটুকু পারছে। সেই ভাবেই এখন করছে।
উপার্জন কমে যাওয়া এবং অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কারণে শঙ্কিত কর্মীদের দাবি, জায়গাটি যেন স্থায়ীভাবে সমিতির নিজস্ব জায়গা হিসেবে বরাদ্দ দেয়া হয়।
আপনার মতামত লিখুন :