শিরোনাম
◈ ইউএসএআইডির সকল কর্মীকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন! ◈ ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে ঠিকানা খুঁজে পাননি লিটন দাস ও মোস্তাফিজ ◈ লা লিগায় জিরোনাকে হারালো রিয়াল মাদ্রিদ ◈ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক মার্চে,  ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই চার্টার ঘোষণা ◈ বগুড়ার নন্দীগ্রামে পাকা সড়কে কাদায় মাখামাখি, বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা ◈ ১৩ মাস পর উৎপাদনে ফিরলো সরিষাবাড়ীর যমুনা সার কারখানা  ◈ আওয়ামী লীগের দোসররা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে: মধ্যরাতে সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (ভিডিও) ◈ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাবিতে বিক্ষোভ (ভিডিও) ◈ মধ্যরাতে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ◈ 'আ. লীগের বিচার না করলে জনগণ আবার আন্দোলনে নামবে' (ভিডিও)

প্রকাশিত : ২৬ মে, ২০১৯, ০৯:০৩ সকাল
আপডেট : ২৬ মে, ২০১৯, ০৯:০৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

স্ট্রিপে প্রেগনেন্সি পরীক্ষার পথ দেখালো জেনোপস ব্যাঙ

খালিদ আহমেদ : প্রেগনেন্সি পরীক্ষায় এই জেনোপস ব্যাঙ ব্যবহার করা হতো ১৯৩০ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত।আফ্রিকার সাব-সাহারান এলাকায় পাওয়া যায় এই বিশেষ জাতের নখওয়ালা ব্যাঙটি। বিবিসি বাংলা

ওই এলাকার পানিতে লাখ লাখ বছর ধরে শান্তিতেই বাস করছিলো ব্যাঙ গুলি। হঠাৎ করেই ১৯৩০ সালে ল্যান্সলট হগবেন নামের এক ব্রিটিশ বিজ্ঞানী তার জীবনে বড়ো ধরনের এক পরিবর্তন ঘটিয়ে দিলেন। ব্যাঙটির শরীরে তিনি ইনজেকশন দিয়ে মানুষের মূত্র ঢুকিয়ে দিলেন।

প্রাণীবিজ্ঞানী হগবেনের কাজই ছিলো বিভিন্ন প্রাণীর শরীরের নানা রকমের জিনিস, বিশেষ করে হরমোন ঢুকিয়ে দেয়া। তার উদ্দেশ্য ছিলো এর ফলে ওই প্রাণীর শরীরে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া ঘটে সেটা লক্ষ্য করা।

জেনোপসের শরীরে এই পরীক্ষার পর, তিনি আবিষ্কার করলেন এই ব্যাঙের ভেতরে প্রেগনেন্সি হরমোন ঢুকিয়ে দিলে সেটি ডিম পাড়তে শুরু করে। তিনি অবাক হয়ে লক্ষ্য করেন জেনোপস ব্যাঙ নির্ভুলভাবে ফলাফল বলে দিতে পারতো।

নারী জেনোপস ব্যাঙের চামড়ার নিচে ইনজেকশনের মাধ্যমে নারীর মূত্র ঢকিয়ে দেয়া হতো। ৫-১২ ঘন্টা পর দেখা হতো ব্যাঙটি ডিম পেড়েছে কিনা। ডিম পাড়লে নিশ্চিত হওয়া যেতো ওই নারী গর্ভবতী। পরীক্ষাগারে করা হতো এই টেস্ট।

 

প্রেগনেন্সি টেস্ট এখন খুব সহজ ও সাধারণ একটি বিষয়। একজন নারী ঘরে বসে একটি স্টিক দিয়েই জেনে নিতে পারেন তিনি গর্ভধারণ করেছেন কিনা। কিন্তু কয়েক দশক আগেও এই কাজটা এতোটা সহজ ছিলো না।

মরেন সাইমন্স নামের এক নারী জানালেন, ১৯৬০ এর দশকের মাঝামাঝি এই ব্যাঙ-এর সাহায্যে কীভাবে তার প্রেগনেন্সি টেস্ট করা হয়েছিলো।

তিনি বলেন, "আমার মাথায় এই দৃশ্যটা এখনও পরিষ্কার গেঁথে আছে, একজন ডাক্তার আমার কাছে এসে বললেন, আপনি গর্ভবতী হয়েছেন - ব্যাঙটা ডিম পেড়েছে।"

সাধারণ লোকজনের জন্যে এই জেনোপস টেস্ট ব্যবহার করা হতো না। শুধুমাত্র জরুরী চিকিৎসাতেই এই পরীক্ষাটা করা হতো। যেমন আসলেই ভ্রুণের মতো কোন কিছুর জন্ম হচ্ছে নাকি তৈরি হচ্ছে টিউমার - সেটা নির্ণয় করতে জেনোপস টেস্ট করা হতো।

ব্রিটেনের অল্প কিছু হাসপাতালের ল্যাবে এই জেনোপস পরীক্ষা করা হতো।

মরেনের দুবার মিসক্যারেজ অর্থাৎ সন্তান জন্ম হওয়ার আগেই গর্ভপাত হয়ে গিয়েছিলো। এবং এই জেনোপস ব্যাঙ-ই সেই সত্যটা বলতে পেরেছিলো।

মরেন বলেন, "আমি এখন বুঝতে পারি ওরকম একটা টেস্ট করিয়ে আমাকে কতোটা গুরুত্ব দেয়া হয়েছিলো।"

চিকিৎসা-ইতিহাসবিদ জেসে ওলসজিঙ্কো-গ্রিন বলেন, আধুনিক কালে এই টেস্টটিকে খুব অদ্ভুত মনে হতে পারে, কিন্তু ১৯৩০-এর দশকে এটা ছিলো খুব বড় ধরনের ঘটনা। আজকে যেমন বাড়িতে পরীক্ষা করেই বোঝা যায় কেউ সন্তানসম্ভবা কিনা, তখনও এই টেস্ট অনেকটা সেরকমই ছিলো।

গর্ভধারণ ও তার পরীক্ষার ব্যাপারে এটা ছিল একটা উল্লেখযোগ্য ঘটনা।

ইতিহাসবিদ গ্রিন বলেন, " ১৯৩০ এর দশকে কেউ গর্ভধারণ করেছেন কিনা সেটা বোঝার উপায় ছিলো না। এ নিয়ে কথাও বলা যেত না। সংবাদপত্রে প্রেগনেন্সি শব্দটাই লেখা যেত না। এটা এতোটাই জীববিজ্ঞানের বিষয় ছিলো।ছিলো অভদ্রতাও।"

তিনি আরও বলেন, এই টেস্টের মাধ্যমেই প্রেগনেন্সি বিষয়টি দৃশ্যমান হলো। আর সেটা করেছিলো জেনোপস নামের এই ব্যাঙটি।

গ্রিন বলেন,"প্রেগনেন্সি পরীক্ষা হচ্ছে বর্তমান পৃথিবীর আবিষ্কার। সেসময়ে জেনোপস টেস্টের মাধ্যমেই গর্ভধারণ, শিশু জন্মদান এবং প্রজননের মতো বিষয়গুলো সাধারণ মানুষের কাছে সাধারণ বিষয় হয়ে উঠেছে।"

১৯৭০ এর দশকেই বাড়িতে বসে প্রেগনেন্সি টেস্টের উপায় বের হলো। এর পর থেকেই জেনোপস ব্যাঙ ফিরে গেলো তার শান্তিপূর্ণ জীবনে।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়