মারুফুল আলম : মুখে মুখেই শুধু জাতীয় কবির নাম উচ্চারিত হয়। কিন্তু সরকারি রেজিস্টার্ড দলিলপত্রের কোথাও নেই কবি নজরুল ইসলামের নাম। জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন আয়োজনেও জাতীয় কবি হিসেবে লেখা হয়, কিন্তু কাজী নজরুলকে জাতীয় কবি ঘোষণা করার সরকারি কোনো প্রজ্ঞাপন বা অন্য কোনো দলিল পাওয়া যায়নি। কাগজে-কলমে প্রাতিষ্ঠানিক ঘোষণায় নেই জাতীয় কবির নাম। প্রথম আলো
কাজী নজরুলকে জাতীয় কবির প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে নজরুল ইনস্টিটিউটের উদ্যোগ নেওয়া উচিত বলে মনে করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, স্বীকৃতির বিষয়টি অবশ্যই গেজেট আকারে প্রকাশ করা উচিত।’
নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. আবদুর রাজ্জাক ভূঞা বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি বিষয়টি অবগত করতে কেবিনেটে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু পরে তা আর চূড়ান্ত হয়নি।
জাতীয় কবির প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতির বিষয়ে কাজী নজরুল ইসলামের নাতনি খিলখিল কাজী বলেন, ‘আমরা অনেকবার দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু আজও সরকারি গেজেট আকারে আমার দাদুকে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি।’
এ বিষয়ে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, তার মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তাদের বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করতে বলেছেন। খুব শিগগির এ বিষয়ে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ঘোষণার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
তবে, নজরুল ইনস্টিটিউট বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম মনে করেন, কাজী নজরুল ইসলাম যে জাতীয় কবি, এর জন্য নতুন করে আইন পাসের প্রয়োজন পড়ে না। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু নিজে কাজী নজরুল ইসলামকে ঢাকায় এনেছিলেন। ধানমন্ডিতে নজরুলের বাড়ির সামনে বিউগলের সুরে পতাকা উড়ত, নামত। নজরুলের জাতীয় কবি হওয়াটা গেজেটের অপেক্ষা রাখে না।
সংস্কৃতিকর্মীরা বলছেন, এটা সত্যি যে সরকারি দলিলে বিভিন্ন প্রসঙ্গে নজরুলকে জাতীয় কবি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তাকে জাতীয় কবি উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশও প্রণীত হয়েছে। এটি পরোক্ষ স্বীকৃতি। কিন্তু নজরুল পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে অনেকেই বলছেন, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি কেবল মৌখিক বিষয় নয়, আনুষ্ঠানিকতা ও সার্বভৌম শক্তির দাপ্তরিক ঘোষণার বিষয়টিও এর সঙ্গে যুক্ত। সম্পাদনায় : কায়কোবাদ মিলন
আপনার মতামত লিখুন :