হাসান মুরাদ সিদ্দিক : আমরা যদি প্রশ্ন তুলি আদিম মানুষের অস্তিত্ব আদৌ পৃথিবীতে আছে কিনা। সম্ভবত পৃথিবীর প্রায় প্রত্যেকটা দেশে কোনো না কোনো নৃ-গোষ্ঠীর আদিম মানুষের উপস্থিতি বিদ্যমান। এই সম্প্রদায়গুলোর জীবনাচরণ যদি চোখের সামনে দৃশ্যমান না হতো তাহলে আমাদের অদৃশ্য গোত্র সম্পর্কে অন্যকে বিশ্বাস জন্মানো কষ্টসাধ্য হতো। আধুনিক মানুষের তৈরি করা কনক্রিটের শহরে, গহীন অরণ্য থেকে বুনো-জীবনে বয়ে বেড়ানো কিছু মানুষ চোখের সামনে ঘুরে বেড়ানোর দৃশ্যকে কোনোভাবেই অস্বীকার করা যায় না।
আদি যুগ থেকে মানুষের দু’টি ধারা এখনো বহমান, এই চিরন্তন সত্যে আর দ্বিমত করার কোনো অবকাশ নেই। ডারউইনের উত্থাপিত দর্শন সত্য বা মিথ্যা হোক, একে ফুঁৎকারে উড়িয়ে দেবার অব্যর্থ যুক্তি আপাতত মানুষের নেই। তাই তাকে, তার দর্শনকে বিশ্বাস করার লোক যেমন পৃথিবীতে প্রচুর, তেমনি অবিশ্বাস করার লোকের সংখ্যাও কম নয়। দর্শন যেহেতু অবিরত নিরীক্ষার বিষয়, আলোচনা-পর্যালোচনা দর্শনের প্রাণ, তাই ডারউইন ঠিক না-বেঠিক, তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছার জন্য আমাদের আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
সম্ভবত ডারউইনই প্রথম ব্যক্তি যিনি, তার সময়কে অতিক্রমী ব্যতিক্রম চিন্তা করার সাহস করেছিলেন, গির্জার আরোপিত কঠোর বিধি-নিষেধ ভেঙে এবং প্রচলিত সামাজিক মতের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে। তিনি ভাবুক সমাজকে ¯্রােতের বিপক্ষে চিন্তা করার যে ধারা তৈরি করে দিয়ে গেছেন তা সভ্যতার ইতিহাসে চাট্টিখানি কথা নয়।
হাজার হাজার বছর মানুষ চিন্তার যে প্রচলিত ম-পে বেড়ে উঠেছে, বহমান প্রথার অনুকূলে গা-ভাসাতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে, তার বিপক্ষে ডারউইনের সাহসী, জাড্য এবং অভিনব প্রস্তাবনা তামাম দুনিয়ার বিদ্ব্যজন ও সারাৎসার সমাজকে আউলা করে রেখেছিলো দীর্ঘদিন। ধর্ম, সমাজ এবং রাষ্ট্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তিনি যে মিসাইল মিশ্রিত পথ চিন্তক সমাজকে বাতলে দিয়ে গেছেন তার রোডম্যাপের উপর উত্তরাধুনিক ভাবুকদের বিচরণ। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :