তাপসী রাবেয়া ও রমজান আলী : দেশি বিদেশী নানান স্টাইলের পন্য আর যাতায়াততের ঝক্কি না থাকায় অনলাইনে কেনাকাটা এক শ্রেনীর ক্রেতার কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সহজে ঘরে বসে কাক্সিক্ষত পণ্য পেতে সারাদেশই বেশ কিছু অনলাইন শপ গড়ে উঠেছে। পোশাক, শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, বাচ্চার গুড়ো দুধ, কসমেটিক্স, সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনী সবধরণের পণ্য পাওয়া যাচ্ছে অনলাইন কেনাকাটায়। সাইটে গিয়ে অর্ডার করার সঙ্গে সঙ্গে ঠিকানা অনুয়ায়ী বাসায় চলে আসে।
আর ঈদ বাজার ধরতেও অনলাইন ব্যবসায়ীরাও ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন শপিং মলের মতই। নিজেদের পণ্যের বিজ্ঞাপন, পেজে নতুন নতুন পণ্যের প্রচারে ঘাটতি রাখছেন না তারাও। তবে অনলাইন বাজার জনপ্রিয় হলেও ঈদের প্রভাব পরেনি শপিং বা মার্কেট দোকানেগুলোতে। প্রতিবছরের মতোই এবারও ভিড় রয়েছে শপিং ও মার্কেট দোকানগুলোতে। কারণ অনলাইনে সীমিত আর নিদির্ষ্ট শ্রেনীর ক্রেতারাই বেশি কেনাকাটা করেণ বলে জানিয়েছেন অনলাইনের সত্ত্বাধীকারীরা।
অনলাইন ভিত্তিক দেশীয় পোষাকের হাউজ গুটিপোকা। এর ডিজাইনার ও সত্ত্বাধীকারি আফসানা সুমী বলেন, সারাবছর নিদিষ্ট শ্রেনীর ক্রেতারাই এখান থেকে কাপড় কিনে। তবে ঈদের ক্ষেত্রে কিছু অর্ডার বেশি হয়। অনলাইনের বিক্রির সঙ্গে মার্কেটর দোকানগুলোর কোনো দ্বৈরত্ব নেই বলেও মনে করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা থেকে পাস করে নিজেই অনলাইন চালু করেছেন জমজ দুই বোন অন্তরা মেহরুখ আজাদ ও অন্যন্যা মেহপার আজাদ। এই দুই বোন এ প্রতিবেদককে বলেন, দেশি মসলিনের উপর হ্যান্ডপ্যাইন্টের শাড়ি আর ওড়ানা করেন তারা। আর ফেসবুক বা ইন্সটাগ্রামে চালান বিজ্ঞাপনের কাজ। পরিচিত আর আত্মীয় স্বজনরাই এসব পেজের ক্রেতা বলেন জানান তারা। বলেন, মার্কেটের সঙ্গে এই ব্যবসা কোনো কনফ্লিক্ট তৈরী করে না।
রাজধানীর মৌচাক মার্কেট, নিউ মার্কেট, আজিজ সুপার মার্কেট, গুলিস্তানের পীর ইয়ামেনী মার্কেট, বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা যায়, পুরোদমে জমে উঠেছে ঈদ মার্কেট।
মৌচাক মার্কেটের বিউটি পাঞ্জাবী কর্নারের বিক্রেতা ইকবাল হোসেন জানান, অনলাইনের কারণে তেমন কোন প্রভাব আমাদের নেই। কারণ অনলাইনে খুব কম সংখ্যক লোক কাপড়-চোপড় কিনে। আমরা রমজানের প্রথম সপ্তাহ থেকেই ভালো বিক্রি করছি এবং ক্রেতাদে ভীড়ও হচ্ছে। বিক্রিও ভালো। সামনের দিনগুলোতে আরো ভিড় বাড়বে বলেও জানান তিনি।
মৌচাক মার্কেটের মেহেনাজ ফ্যাশনের মালিক মোঃ শাহআলম বলেন, অনলাইন মার্কেটের কারণে তাদের বিক্রির কোন ক্ষতি হচ্ছে না।
এছাড়া মতিঝিলের ফুটপাতের নজরুল বলেন,এখানে পণ্যের দাম অনেক কম। অনলাইনে কারণে কোন প্রভাব পরে না।
স্বপ্না চক্রবর্তী নামে একজন বলেন, অনলাইন মার্কেট থেকে পোশাক কিনে প্রতরণার শিকার হয়েছেন। অনলাইন থেকে ৪টি থ্রীপিছ কিনে যা পড়তে পারেননি তিনি। তাই অনলাইন মার্কেটের উপর অনাস্থার কথাও বলেন তিনি। প্রতরণা শিকার হওয়ার পর থেকে দোকান থেকে মার্কেট করছি।
অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসায়ী আবু বকর বলেন, আমরা যারা অনলাইনে কেনা-বেচা করি সবাই এক রকমের না। তবে মাঝে মাঝে কিছু সমস্যার কথা শুনছি। ক্রেতাদের কাছে আরো আস্থা অর্জন করতে হবে বলে জানান তিনি।
এছাড়া রাজধানীর মতিঝিল, গুলিস্তান, পল্টন ও ফার্মগেটসহ বিভিন্ন এলাকার ফুটপাতে ব্যবসায়ীরা বলেন. অনলাইন মার্কেটের কারণে ঈদের কোন প্রভাব নেই।
তন্দ্রা ফ্যাশন নামে অনালাইন মাকের্টের একজন নারী ব্যবসায়ী দীপা ঘোষ রীতা বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে আপনাদের হাতে সঠিক পন্য পৌছে দেয়া কিন্তু মার্কেটের দোকান এর চাইতে কম দামে। সাধারনত আমরা খুচরা ব্যবসায়ীদের থেকে পণ্য কিনে থাকি, খুচরা ব্যবসায়ীদের দোকান ভাড়া, কর্মচারী, বিভিন্ন বিল ইত্যাদি এর জন্য পন্যের দাম বাড়িয়ে রাখে। আমরা শুধুমাত্র আমাদের লাভটুকু রাখি। আমাদের দোকান ভাড়া, কর্মচারী, বিভিন্ন বিল নেই, কারণ আমরা অনলাইন নির্ভর।
আপনার মতামত লিখুন :