জাহিদুল কবীর মিল্টন : যশোর অঞ্চলের ৬ জেলায় গতবছরের চেয়ে চলতি বছর একহাজার ৩শ’ ১৬ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ বেশি হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আবাদ হয়েছে কম। চলতি বছর (২০১৯-২০২০ অর্থবছর) ৬ জেলায় পাটের আবাদ হয়েছে একলাখ ৩৭ হাজার ৫ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল একলাখ ৬১ হাজার ৪শ’ ২৫ হেক্টর জমি। গতবছর (২০১৮-২০১৯) পাটের আবাদ হয়েছিল একলাখ ২৩ হাজার ৮৯ হেক্টর জমিতে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে যশোর জেলায় পাটের আবাদ হয়েছে ১৭ হাজার ৫শ’ ৩০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৬ হাজার ৪শ’ ৫০ হেক্টর জমি।৮ হাজার ৯শ’ ২০ হেক্টর জমিতে আবাদ কম হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলায়ও একই অবস্থা। এ জেলায়ও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ হাজার ৪শ’ ৭০ হেক্টর জমিতে কম আবাদ করা হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলায় পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২২ হাজার ৮শ’ ৯৫ হেক্টর জমি। আবাদ হয়েছে ২০ হাজার ৪শ’ ২৫ হেক্টর জমিতে। একই অবস্থা মাগুরা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলাতেও। মাগুরা জেলায় পাটের আবাদ হয়েছে ৩২ হাজার ৪শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩৬ হাজার একশ ১০ হেক্টর জমি। এ জেলায়ও ৩ হাজার ৬শ’ ৬০ হেক্টর জমিতে কম আবাদ হয়েছে।
কুষ্টিয়া জেলায় পাটের আবাদ হযেছে ৩২ হাজার ৮শ’ ২৫ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩৫ হাজার ৪শ’ ৮০ হেক্টর জমি। চুয়াডাঙ্গা জেলায় পাটের আবাদ হয়েছে ১৩ হাজার ৮শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৫ হাজার একশ ৮০ হেক্টর জমি। একহাজার ৩শ’ ৩০ হেক্টর জমিতে কম আবাদ হয়েছে। মেহেরপুর জেলায় পাটের আবাদ হয়েছে ১৯ হাজার ৯শ’ ২০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৫ হাজার ৩শ’ ১০ হেক্টর জমি। এ জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ হাজার ৩শ’ ৯০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ কম হয়েছে।
যশোর সদরের রায়মানিক গ্রামের বাসিন্দা পাট চাষি লিয়াকত আলী জানান, গত বছর প্রতি মন পাট বিক্রি হয়েছে ১৮শ থেকে ১৯শ টাকা দরে। এবছর পাটের দাম আরো বেশি পাওয়া যাবে বলে তিনি আশাবাদি। কারণ হিসেবে তিনি জানান, বর্তমানে দেশে পাটের উপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া পাটের চাষ হয় কম হওয়ার কারণে এবছর দাম ভাল পাওয়া যাবে। এক বিঘা জমিতে পাট চাষে খরচ হয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। আর পাট হয় ১৫ মন।একই কথা বললেন অপর পাট চাষি রায়হান উদ্দিন।
লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম আবাদ হওয়ার কারণ জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ সমীর কুমার গোস্বামী জানান, পাটের দাম না পেলে কৃষকরা পাটচাষে অনেক সময় নিরুৎসাহিত হয়। যে কারণে তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। এছাড়া আবহাওয়াগত কারণেও অনেক সময় পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয় না। এসব কারণেই পাট চাষের কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ায় কম আবাদ করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :