শেখ নাঈমা জাবীন : ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব শব্দবন্ধটি এখনও প্রতিশ্রুতির তালিকাতে রয়েছে। অথচ, এফএও, আইএফএডি ও ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজের গবেষণা বলছে, ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গড়তে বছরে মাত্র ২৬ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের তহবিল প্রয়োজন। শুধু তাই নয়, এই অর্থে সারা বিশ্বের শিশুদের অপুষ্টির সমস্যা মিটিয়ে ফেলা সম্ভব। আন্তর্জাতিক খাদ্যনীতি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ইফপ্রি) এক গবেষণা বলছে, শুধু এশিয়াকে ক্ষুধামুক্ত করতে পারলেই এই অঞ্চলের মানুষের উৎপাদনশীলতা এক প্রজন্মের ব্যবধানে এতটাই বাড়বে যে, তা বছরে দেড় লাখ কোটি ডলার অর্থনীতিতে যোগ করবে। বর্তমান
সিপ্রি বা স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সাম্প্রতিকতম রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরই ভাবতে হচ্ছে কোনটা অগ্রাধিকার? সকলের পেটে ভাতের জোগান নাকি কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা দিয়ে নিরাপত্তার অজুহাতে অস্ত্রসম্ভার বাড়ানো!
২৯ এপ্রিল প্রকাশিত সিপ্রির রিপোর্টে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক সামরিক ব্যয় গত বছর বেড়ে ১ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছে। অর্থের বিচারে এটি আগের সব হিসেবকে টপকে বিশ্বে ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে রীতিমতো চোখ রাঙাচ্ছে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত দ্বন্দ্বই এই সামরিক প্রতিযোগিতার সূচনা করেছে। আর এতে ইন্ধন জুগিয়েছে আমেরিকা ও চীনের দ্বন্দ্ব।
আমেরিকার সামরিক বাজেট এমনিতেই বিপুল ছিল। ২০১৮ সালে তা আরও বাড়ানো হয়। এর মূল লক্ষ্য অবশ্যই ছিল চীন এবং রাশিয়া। আর এই দুই দেশ খুব দ্রুত এর পাঠোদ্ধার করে ‘শক্তি দেখানোর প্রতিযোগিতা’য় নেমে পড়ে। যার ফল হল ভয়াবহ। সিপ্রির তথ্য বলছে, গত বছর সারা বিশ্বে সামরিক খাতে ব্যয় হয়েছে ১ লক্ষ ৮২ হাজার কোটি ডলার। আগের বছরের চেয়ে এই পরিমাণ ২.৬ শতাংশ বেশি। আর এই ব্যয়ের প্রায় অর্ধেকই করেছে আমেরিকা ও চীন মিলে। এ দুই দেশ মিলে গত বছর সামরিক খাতে ব্যয় করেছে ৮৯ হাজার ৯০০ কোটি ডলার।
এই দিক থেকে চীন কিছুটা পিছিয়েই আছে বলা যায়। আমেরিকা যেখানে জিডিপির ৩.২ শতাংশ সামরিক খাতে ব্যয় করে, চীন সেখানে মাত্র ১.৯ শতাংশ। এর অর্থ হচ্ছে চীনের সামরিক সম্প্রসারণের আরও বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। ইউএস নেভাল ওয়ার কলেজের অধ্যাপক অ্যান্ড্রু এরিকসন ‘দ্য ইকোনমিস্ট’কে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট জি জিনপিংয়ের আমলে চীন যে মাত্রায় সামরিক সম্প্রসারণ ঘটিয়েছে, তা চীনের ইতিহাসেই বিরল।’ সম্পাদনা : কায়কোবাদ মিলন
আপনার মতামত লিখুন :