রাশিদ রিয়াজ : সংযুক্ত আরব আমিরাতের জলসীমার কাছে কয়েকটি বাণিজ্যিক জাহাজে ‘নাশকতামূলক’ হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রোববার রাতে এক বিবৃতিতে বলা হয়, দেশটির পানিসীমার কাছে চারটি বাণিজ্যিক জাহাজে কে বা কারা ‘নাশকতামূলক অভিযান’ চালায়। তবে এসব নাশকতামূলক তৎপরতায় কেউ নিহত হয়নি। এতে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর কোনো ক্ষতি হয়েছে কিনা বা জাহাজগুলো কোন্ কোন্ দেশের সে সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ বিবৃতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ডাব্লিউএএম প্রকাশ করে। তবে সৌদি আরবের জালানিমন্ত্রী খালিদ এ আল-ফালিহ এ হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, তার দেশের দুটি জাহাজ এ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রয়টার্স/স্পুটনিক/ আল-আরাবিয়া
রয়টার্স জানায়, হামলার কবলে পড়া একটি জাহাজে সৌদি তেল ভরা হচ্ছিল এবং এ জাহাজটি রাস তানুরা থেকে আরামকো’র এ তেল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথা ছিল। হামলায় দুটি সৌদি জাহাজের বেশ ক্ষতি সাধিত হয়। তবে এ হামলায় কোনো হতাহতের বা তেল নিঃসরণের ঘটনা ঘটেনি। সৌদি তেলমন্ত্রী তার বিবৃতিতে আরো বলেন, তেল ও জাহাজের নিরাপত্তায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যৌথ ভূমিকা ও দায়িত্ব রয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে আমিরাত উপকূলে তেলবাহী জাহাজের ওপর নাশকতামূলক হামলা ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে বলে সাবধান করে দেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের তরফ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয় এধরনের নাশকতামূলক হামলায় সমুদ্রে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলকে বিপজ্জনক করে তুলতে পারে। এর আগে রোববার দিনের শুরুতে লেবানন-ভিত্তিক আল মায়াদিন টেলিভিশন চ্যানেল জানায়, আল-ফুজাইরা তেল ট্যাংকার টার্মিনালের সাতটি ট্যাংকারে ভয়াবহ আগুন লেগেছে। টার্মিনাল থেকে কয়েকটি ভয়াবহ বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় বলে টিভি চ্যানেলটি জানায়।
তবে ওদিন ফুজাইরাহ প্রশাসনের তরফ থেকে এধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানানোর পর দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেয়া বিবৃতিতে ৪টি জাহাজে হামলার কথা স্বীকার করা হয়। মধ্যপ্রচ্যের তেল নিয়ে হরমুজ প্রণালি হয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বিদেশি জাহাজ ও তেল ট্যাংকারগুলোকে ফুজাইরা বন্দরের পাশ দিয়ে যেতে হয়। এছাড়া লেবাননের গণমাধ্যমে আগুন ধরে যাওয়া তেল ট্যাংকারের ছবি প্রকাশিত হয়।
আরব আমিরাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, বাণিজ্যিক জাহাজগুলো ক নাশকতামূলক তৎপরতার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা এবং এসব জাহাজের কর্মীদের জীবন বিপদাপন্ন করে তোলাকে ভয়ানক কাজ হিসেবে দেখা হচ্ছে। হামলার কারণে ফুজাইরা বন্দরের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়নি বলে বিবৃতিতে দাবি করা হয়।
তবে ফুজাইরা কর্তৃপক্ষের গণমাধ্যম বিভাগ এ খবরে সত্যতা অস্বীকার করে। এ ছাড়া, ফুজাইরা’র সিভিল ডিফেন্স বিভাগের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার আলী ওবাইদ আল-তানিজি ‘এমিরাত আল-ইয়াওম’ দৈনিককে বলেন, বন্দরে কোনো বিস্ফোরণ বা অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেনি। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা বিস্ফোরণ ও আগুনের ঘটনা নিশ্চিত করেন এবং এমনকি তারা আগুন ধরে যাওয়া জাহাজের নাম ও তাদের হল নাম্বার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে দেন। এরপরই রাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফুজাইরা বন্দরে ‘নাশকতামূলক তৎপরতা’র খবর নিশ্চিত করে।
আপনার মতামত লিখুন :