আমিরুল ইসলাম : ব্রিটিশ হাইকমিশনার বলেছেন, রোহিঙ্গা শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বের জন্য বড় হুমকি। রোহিঙ্গা সমস্যাটা কোনদিকে রূপ নিচ্ছে জানতে চাইলে সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আফসান চৌধুরী বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে একমাত্র ক্ষতিগ্রস্ত দেশ বাংলাদেশ।
আমাদের নতুন সময়কে তিনি বলেন, আমরা মিয়ানমারের জন্য বর্ডার খুলে দিয়েছি। ১৯৭৭ সালে প্রথম রোহিঙ্গারা এসেছে আমাদের দেশে, তারপরও কি আমরা সীমান্ত বন্ধ করেছি? আমরা বর্ডার বন্ধ করিনি। আমরা তাদের জন্য বর্ডার খোলা রেখে এখন কান্নাকাটি করে কি লাভ? ১৯৭৭ সালে আমরা বন্ধ করিনি, ১৯৯২ সালে আমরা বন্ধ করিনি। এখন যখন অনেক বেশি এসেছে মিয়ানমার যখন বুঝতে পেরেছে আমাদের ক্ষমতা বা ইচ্ছা নেই বর্ডার বন্ধ করার, তাই তারা সব পাঠিয়ে দিয়েছে। সসম্যা তৈরি হয়ে যাওয়ার পর আমরা এটাকে বড় সমস্যা বলছি। ব্রিটিশ হাইকমিশনার তার অবস্থান থেকে বলেছে বিশে^র জন্য বড় সমস্যা। জঙ্গিবাদের সঙ্গে এটার সমস্যা আছে, কিন্তু জঙ্গিবাদ আমাদের বিরুদ্ধে কোনদিকে যাবে তা বলতে পারি না। মিয়ানমার জঙ্গিবাদ সামলে নিয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে একমাত্র ক্ষতিগ্রস্ত দেশ বাংলাদেশ। মিয়ানমার, ব্রিটেন, থাইল্যান্ড, চীন, ইন্ডিয়া, পাকিস্তান ক্ষতিগ্রস্ত নয়। বাংলাদেশ গত ৩০ বছরে কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে পারে। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে কখনো আটকানোর কথা বলেনি। সুবিধা নেয়ার আশায় বর্ডার খুলে রেখেছে এখন তারা লোক পাঠিয়ে দিয়েছে। ব্রিটিশ হাইকমিশনার জঙ্গি দৃষ্টিকোণ থেকে আশঙ্কা করছেন, কিন্তু এখনো পর্যন্ত রোহিঙ্গা থেকে সৃষ্টি হওয়া কোনো জঙ্গি বিশ্বের কোথায় আক্রমণ করেনি।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ হলে ব্রিটিশরা সাহায্য করবে না। নিজেদেরটা নিজেদেরই সামাল দিতে হবে। যারা রোহিঙ্গাদের প্রবেশ করতে দিয়েছে তারাই এখন সিদ্ধান্ত নেবে কীভাবে এটা সমাধান করা যায়। তবে আমার মনে হয় রোহিঙ্গা সমাধান খুব সহজে সমাধান হবে না। আমরা এখন রোহিঙ্গাদের বের করতে চাইলেও তারা যাবে না। তাহলে আমরা এখন করবোটা কি? মুক্তিযুদ্ধের গবেষণা করতে গিয়ে দেখেছি রোহিঙ্গাদের তাদের দেশ থেকে বের করে দেয়া হবে ১৯০৫ সালেই মিয়ানমারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। এটা দু’একদিনের সমস্যা নয়, এটা একশো বছরের সমস্যা। আমরা একশো বছর ধরে কি করেছি? রোহিঙ্গারা তো এবার প্রথম এলো না। অন্যান্য সময় আমরা এ সমস্যাটা সমাধানের জন্য কি পদক্ষেপ নিয়েছি? গোটা সমস্যায় বাংলাদেশ ছাড়া কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। বাংলাদেশের গণমাধ্যমও পূর্বে কিছু বলেনি। এখন গণমাধ্যমের এতো তৎপরতা দেখানোর কোনো মানে হয় না। রোহিঙ্গা যে একটি জঙ্গি গোষ্ঠী এটা ১৯৯২ সালে আমি যখন ওইখানে কাজ করেছি তখনই দেখেছি। রোহিঙ্গাদের মধ্যে অনেক জঙ্গি সংগঠন আছে। পৃথিবীর সবাই রাস্তা বন্ধ করে দিলো তবে আমরা কেন খুলে রেখেছি?
আপনার মতামত লিখুন :