ডেস্ক রিপোর্ট : দুর্গম পাহাড় থেকে জাতীয় পর্যায়ে আগেই আলো ছড়িয়েছেন নারী ফুটবলার মনিকা চাকমা। সম্প্রতি বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে তার একটি দর্শনীয় গোল স্থান পেয়েছে ফিফার দর্শক জরিপে সেরা পাঁচে। রাঙামাটির দুর্গম পাহাড়ে বেড়ে ওঠা এই ফুটবলারই এখন বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে।
কিছুদিন আগেও মনিকাকে কে চিনতো! খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার দুর্গম সুমন্ত পাড়া গ্রামে তার জন্ম। কিন্তু জন্ম তার এই দুর্গম পাহাড়ে হলেও বেড়ে উঠেছেন রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়াতে। ঘাগড়ার মগাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাইমারি শিক্ষা শেষ করে ঘাগড়া উচ্চ বিদ্যালয় হয়ে এখন ঘাগড়া কলেজে পড়াশোনা করছেন মনিকা। ছোট থেকেই ফুটবলের প্রতি ছিল তার প্রচণ্ড ঝোক। একজন মেয়ে হয়েও শত বাধা ডিঙিয়ে ফুটবল শৈলির মাধ্যমে অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দলে ডাক পান মনিকা। এরপরই তার নামটি ইতিহাস হয়ে গেলো।
মনিকার এই সাফল্য ছড়িয়ে পড়েছে দুর্গম এই অঞ্চলেও। এখন তাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে অন্য মেয়েরাও ফুটবলের প্রতি ঝুকে পড়ছে। মনিকা চাকমা বলেন, ‘আমি দেশের জয়ের জন্য গোল করেছিলাম, কিন্তু এই গোলটি ফিফার দর্শক বিচারে সেরা পাঁচে স্থান পাবে এটি কখনও চিন্তাও করিনি। এটা শোনার পর আমার খুব ভালো লেগেছিল। আমি আবারও দেশের জন্য কিছু করতে চাই।’ তিনি আরো জানান, আগামী সেপ্টেম্বরে অনূর্ধ্ব-১৭ দলের বাছাই শুরু হবে। তারপর অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ রয়েছে। সেখানে দেশের জন্য ভালো কিছুর করার চেষ্টা অবশ্যই থাকবে।
মনিকা চাকমামনিকার বাবা বিন্দু কুমার চাকমা বলেন, ‘পাহাড়ি এলাকায় ছোট্ট মনিকা তখন থেকেই ফুটবলের প্রতি এরকম আসক্তি ছিল। বাবা-মা হিসেবে প্রথমে মেনে নিতে পারিনি। এজন্য প্রায় সময় মারও খেতে হয়েছিল তাকে। কিন্তু আমরা এখন মনিকাকে নিয়ে গর্বিত। ফুটবল খেলার মাধ্যমে মনিকা এখন সারা দেশে সুনামসহ এই এলাকার সুনাম বাড়িয়েছে।’
মনিকার প্রথম কোচ শান্তিমনি চাকমা বলেন, ‘হাঁটি হাঁটি পা পা করে মনিকা জতীয় দলে খেলছে, এটা আমার কল্পনার বাইরে ছিল। এখন যখন টিভির পর্দায় মনিকার খেলা দেখি তখন খুব আনন্দ লাগে, কী যে আনন্দ তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। মনিকা সহ ঘাগড়া বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে এবার বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দলে ৫ ফুটবলার খেলার সুযোগ পেয়েছেন।’ বাংলা ট্রিবিউন
আপনার মতামত লিখুন :