সোহেল রানা, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : কৃত্রিম সংস্কারে হুমকিতে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের জীববৈচিত্র্য। প্রকৃতির প্রাণ বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য নিরাপদ আবাসস্থল লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান আজ ইট কংক্রিটের সংস্পর্শে আবৃত। সৌন্দর্যের অজুহাতে অপরিকল্পিত ভাবে তৈরি করা হচ্ছে ইট পাটকেলের স্হাপনা। প্রাকৃতিক এই বনের ভিতর তৈরি করা হয়েছে ইট, সিমেন্টের ছাতা, পর্যটক ছাউনি, পাকা সড়ক, দৃষ্টিনন্দন গেট, তথ্য কেন্দ্র (ইন্টারপ্রিটিশন সেন্টার) এবং অপ্রয়োজনীয় রেলগেট যা বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আবাসস্হলের জন্য মারাত্বক হুমকি।
জীববৈচিত্র্য ভরপুর প্রাকৃতিক এই বনটি আজ যেন ইট, সিমেন্টের নগরী। ১৯৯৬ সালে পশ্চিম ভানুগাছ রিজাব ফরেষ্টের ১২৫০ হেক্টর এলাকাকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষনা করা হয়। জাতীয় উদ্যান ঘোষনার পর থেকে উন্নয়নের নামে তৈরি করা হচ্ছে অপরিকল্পিত ভাবে ইট সিমেন্টের সব স্হাপনা যা পরিবেশ বান্ধব (ইকো ট্যুরিজম) পর্যটনের জন্য মারাত্নক হুমকি। এছারও সংরক্ষিত ১২৫০ হেক্টর বনের অনেক জায়গা ভৃমিদস্যুদের দখলে। দখলকৃত জায়গা পাকাপুক্ত করতে আবাদ করা হচ্ছে লেবু ও পান চাষ, সঞ্চালন করা হচ্ছে বিদ্যুৎ লাইন, যা বিরল প্রজাতির বানর, হুনুমান, বাদুরের জন্য জীবননাশক। এক দিকে কৃতিম সংস্কার অন্যদিকে বনভৃমি দখল ফলে বন্যপ্রাণী হারাচ্ছে তাদের নিরাপদ আবাসস্হল, হানা দিচ্ছে লোকালয়ে ধরা পরছে শিকারিদের ফাঁদে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষক ও গভেষক শাহরিয়ার সিজার রহমান বলেন বন বনের মতই থাকবে, প্রাকৃতিক বনে যদি কৃতিম সংস্কার যেমন ইট,কংক্রিটের স্হাপনা তৈরি করা হয়,তা বন্য প্রাণীর নিরাপদ আবাসস্থল এর উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এমন কি বন্য প্রাণীর প্রজননের ক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটে। লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের জন্মলগ্ন থেকে রেলওয়ে ও জনপদের সড়ক এবং বনের ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া ৩৩ হাজার ভল্টের বিদ্যুৎ লাইন সেই সাথে ইট পাটকেলের কৃতিম সংস্কার যেন বনটি ধ্বংস দিকে ঢেলে দিচ্ছে।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন সংরক্ষক আবু মুসা শামসুল মোহিত চৌধুরী সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন পর্যটক এর সুবিধার্তে ইট-সিমেন্টের ব্রাঞ্চ, ছাউনি, তৈরি করা হয়েছে তবে বনের ভিতর এগুলো না করাই শ্রেয়।
তিনি আরো বলেন ভবিষ্যতে মনের মধ্যে এরকম ইটপাটকেলের কৃত্রিম সংস্কার করার কোন পরিকল্পনা নেই। আরো জানতে লাউয়াছড়া সহ ব্যবস্থাপনা কমিটির এবং কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আহমেদ মানিক সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
প্রকৃতি প্রেমিক ও পরিবেশবাদীরা বলছেন বন বনরে মতোই থাকবে এখানে কোন কৃত্রিম সংস্কার করার প্রয়োজন নেই। বন তার ইকোসিস্টেমেই বেঁচে থাকবে যা বন ও বন্যপ্রাণী জন্য সুফল বয়ে আনবে।
আপনার মতামত লিখুন :