হাসান বিন বাংলা : সাতচল্লিশে ভারত বিভক্তির সময় জিয়াউর রহমানের পিতা মনসুর রহমান পূর্ব বাংলায় অপশন না দিয়ে সামান্য চাকরির মায়ায় পাকিস্তানের করাচি চলে যায়! জিয়ার বয়স তখন ১২ বছর। ৫২ সনে করাচির একাডেমি স্কুল থেকে ২য় বিভাগে ম্যাট্রিক পাস করে জিয়া ডি, জে কলেজে ভর্তি হয়। ভাষা ছিলো উর্দু ও ইংরেজি। ৫৩ সালে জিয়া পাকিস্তান সামরিক একাডেমি থেকে কমান্ডো ট্রেনিং নেন যা ‘খাঁটি পাকিস্তানি’ ছাড়া সম্ভব ছিলো না! সহী উর্দু শিক্ষা নিতে তার প্রচেষ্টার অন্ত ছিলো না! জিয়ার পাকিস্তানপ্রীতি তাকে পাকিস্তানি সামরিক কর্তা ব্যক্তিদের নজরে আনতে সহায়তা করে এবং এর পুরস্কার হিসাবে জেনারেল আইয়ুব খান ৫৮ সালে বাঙালি রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের সম্পর্কে গোপন রিপোর্ট প্রদানের দায়িত্বে নিযুক্ত করে।
জিয়া ৫৯ সালে পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা দপ্তরের কর্মকর্তা হিসাবে পূর্ব পাকিস্তানে পোস্টিং পায়! এই দায়িত্ব নিয়ে তাকে তখন দিনাজপুরে অবস্থান করতে হয়। এই সময়েই অষ্টম শ্রেণিতে স্কুলগামী বেগম খালেদার সঙ্গে তার পরিচয় এবং প্রণয়। ৫৯ থেকে ৬৪ পর্যন্ত জিয়া পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে কাজ করেন। জিয়া ৬৫’র যুদ্ধের পর মেজর পদে উন্নীত হন। ৬৯ সনে ৮ম বেঙ্গলের সেকেন্ড ইন কমান্ড নিযুক্ত হন। ৭০’র অক্টোবর মাসে ৮ম বেঙ্গল রেজিমেন্টকে পশ্চিম পাকিস্তানে বদলি করা হয় এবং জিয়াউর রহমানও বদলির আদেশ প্রাপ্ত হন। ৭০’র নির্বাচনের পর পরই উক্ত রেজিমেন্টের অর্ধেক সংখ্যক সৈন্য চট্টগ্রাম ত্যাগ করে।
বাকি অর্ধেক সৈন্য চট্টগ্রাম ত্যাগের প্রস্তুতিকালে বাংলার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে এবং জিয়ার তখন আর পাকিস্তানে যাওয়া হয়ে উঠেনি। ২৬ মার্চ জিয়া চট্টগ্রাম বন্দরে এমভি সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র নামানোর কাজে সহযোগিতা করার জন্য রওয়ানা হন, কিন্তু পথিমধ্যে খবর পান পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঈস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে। তখন জিয়া সটকে পড়ে। মেজর রফিক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যখন পাক সেনাবাহিনীর সঙ্গে জীবনপণ যুদ্ধে লিপ্ত, তখন জিয়া চট্টগ্রাম হতে পটিয়ার দিকে চলে যায়। জাতির কি দুর্ভাগ্য। সেই জিয়াই আজ আমাদের গৌরবময় স্বাধীনতা সংগ্রামে অনেকটা অসুরের মতোই ঝুলে আছে। এই কারণেই জিয়াকে বলা হয় ‘বাইচান্স মুক্তিযোদ্ধা। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :