ডেস্ক রিপোর্ট : আসছে ঈদুল ফিতরে যাত্রীসেবা দিতে দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় ৪০টি কোচের (রেলযান) ভারী মেরামত হচ্ছে। গোটা রমজান মাস জুড়ে ওই মেরামত কাজ চলবে কারখানায়। পরে এসব কোচ আগামী ৩ জুনের মধ্যে রেলওয়ের পরিবহন বিভাগে হস্তান্তর করা হবে। ঈদের ঘরমুখী যাত্রীদের বেশি সেবা দিতেই প্রতিবছরের মতো এবারো এ পদক্ষেপ নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। বাংলানিউজ।
রেলওয়ে কারখানা বিভাগ জানায়, ঈদের ৪০টি কোচ মেরামতে রাজস্ব খাত হতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২০ কোটি টাকা। রেলওয়ে কারখানার নিয়মিত কাজের বাইরে ওই কোচগুলো মেরামত করা হচ্ছে। মঙ্গলবার (০৭ মে-১ রমজান) থেকে ওই কাজ শুরু হয়েছে।
সরজমিনে দেখা যায়, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ক্যারেজ শপ, বগি শপ, জেনারেল ওভার হোলিং শপ, পেইন্ট শপসহ সবখানে কর্মব্যস্ততা। শ্রমিক-কর্মচারীরা অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন কোচ মেরামতের কাজ। তবে কারখানায় লোকবল সঙ্কটের কারণে হিমশিম খেতে হচ্ছে শ্রমিক-কর্মচারীদের।
মেরামত চলছে রোকোচেরকারখানার ক্যারেজ শপের ইনচার্জ ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান জানান, ঈদ এলে আমাদের কাজের গতি বহুগুণ বেড়ে যায়। কেননা এসময় যাত্রীসেবার বিষয়টি মাথায় রেখে অতিরিক্ত কোচ মেরামতের চাপ থাকে। ঈদে ঘরমুখী মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে অতিরিক্ত কাজ করতে হয় শ্রমিক-কর্মচারীদের।
একই শপের কয়েকজন শ্রমিক জানান, অতিরিক্ত কাজের জন্য এবার ওভারটাইম সুবিধা দেওয়া হয়নি। অথচ ওভারটাইম ডিউটি পেলে শ্রমিকরা মূল বেতনের সঙ্গে বাড়তি আয় যোগ করতে পারতেন। প্রতিবছরের মতো এবারও ওভারটাইম ডিউটি দাবি করেন তারা।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় বর্তমানে ৬৭ ভাগ জনবল ঘাটতি রয়েছে। ৩ হাজার ১৭১ জন জনবলের বিপরীতে এখানে কর্মরত আছেন মাত্র ১ হাজার ২০ জন শ্রমিক-কর্মচারী। ফলে বিশাল কর্মযজ্ঞ পরিচালনা দুরূহ হয়ে পড়েছে। এর ওপর ঈদের ৪০টি কোচ সরবরাহকে বাড়তি চাপ মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
একই সূত্র জানায়, এবার ঈদের ঘরমুখো যাত্রীদের তেমন বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে এরই মধ্যে ঢাকা- রাজশাহী পথে ননস্টপ বনলতা আন্তঃনগর ট্রেন চালু হয়েছে। আগামী ২০ মে’র মধ্যে ঢাকা-পঞ্চগড় রুটে নতুন একটি ননস্টপ ট্রেন চালু হবে। এসব ট্রেন ইন্দোনেশিয়া থেকে আনা অত্যাধুনিক কোচ সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়াও সৈয়দপুর রেল কারখানায় মেরামত করা ৪০টি কোচ দিয়ে ঢাকা-পার্বতীপুর, ঢাকা- খুলনা রুটে বিশেষ ট্রেন চালানো হবে। আরও কিছু কোচ যুক্ত হবে অন্যান্য ট্রেনে।
রেলওয়ে ট্রেড ইউনিয়নের শ্রমিক নেতারা জানান, আমরা ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্য ভ্রমণ নিশ্চিত করতে বিশাল কর্মযজ্ঞ হাতে নিয়েছি। কিন্ত জনবল সংকটে অতিরিক্ত কাজ করতে হচ্ছে আমাদের।
এ ব্যাপারে রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) জয়দুল ইসলাম জানান, সীমাবদ্ধতা আছে, তবুও আমরা লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সক্ষম হবো। শ্রমিক-কর্মচারী যাতে ওভারটাইম পান সে বিষয়টি দেখা হচ্ছে। কারখানার জনবল সংকট দ্রুত কেটে যাবে বলে জানান তিনি। ঈদে ঘরমুখো যাত্রী সাধারণে কোনো অসুবিধা না হয় সেদিকে লক্ষ্য কাজ চলছে।
আপনার মতামত লিখুন :