নিউজ ডেস্ক : লন্ড্রিতে কাজ করে সংসার চালিয়ে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে নাটোরের নয়ন কুমার সরকার। পরিবারের খরচ জোগাতে বাবার সঙ্গে লন্ড্রির কাজ করেছে সে। এরপরও এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে নয়ন এখন এলাকার দরিদ্র শিক্ষার্থীদের আদর্শ।
সোমবার (৬ মে) প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে জিপিএ-৫ অর্জনের খবর জানার পর থেকেই আনন্দের জোয়ারে ভাসছেন নয়নের বাবা, মা ও পরিবারের সদস্যরা। নয়ন নাটোর সদর উপজেলার দিঘাপতিয়া পিএন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দেয়। ফল জানার পরই প্রতিবেশি আর বন্ধুরা ভিড় করছে তার বাসায়। নয়নের সফলতায় আনন্দিত হয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক আর শিক্ষার্থীরাও।
জানা যায়, পরিবারে দুই ভাই আর এক বোনের মধ্যে নয়ন সবার বড়। বাবা নৃপেন কুমার সরকার আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে বেশিদূর পড়ালেখা করতে পারেননি। অপরদিকে নয়নের মা কাজলী রাণী দরিদ্রতার কারণে বিদ্যালয়ের আঙিনায়ই যেতে পারেননি। তবে তাদের কষ্ট দূর করেছেন নয়ন।
নৃপেন কুমার সরকার জানান, ‘ছোটবেলা থেকেই নয়ন অত্যন্ত মেধাবী। কথায় কথায় প্রশ্নের পর প্রশ্ন আর জানার ইচ্ছা বিষয়টি উপলব্ধি করে তাকে স্কুলে ভর্তি করে দেই। পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় নয়ন সামান্য নম্বরের জন্য জিপিএ-৫ পায়নি। তখন সে প্রায়ই কান্নাকাটি করত। তবে নয়নকে সবসময়ই উৎসাহ আর সাহস দিয়েছি।
নয়নের মা কাজলী রাণী বলেন, ছেলের পড়ার খরচ যোগাতে সংসারের কাজ করেও স্বামীর লন্ড্রির কাজগুলো করেছি। নয়নও তার বাবার সাথে লন্ড্রির কাজ করে পড়ার খরচ আর সংসারের খরচ যুগিয়েছে।’
নয়ন কুমার বলেন, ‘পড়ালেখায় আমার সাফল্যের জন্য প্রথমেই আমি কৃতজ্ঞ বাবা-মায়ের প্রতি। পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষকরাও পড়ালেখার বিষয়ে সাধ্যমতো সহায়তা করেছেন। আমি বড় হয়ে প্রকৌশলী হতে চাই।’
দিঘাপতিয়া পিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলিম উদ্দিন জানান, ‘নয়ন অদম্য মেধাবী ছাত্র। নয়নের স্বপ্ন পূরণে সরকার আর সমাজের প্রভাবশালীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।’ বাংলা ট্রিবিউন
আপনার মতামত লিখুন :