এনামুল হক: ‘গণতন্ত্রের জন্য মুক্ত গণমাধ্যম’ শীর্ষক এক সংলাপ বৈঠক গত শুক্রবার রাজধানীতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা সংস্থা ভয়েস' এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বক্তারা মুক্ত গণমাধ্যমের জন্য সরকারের কাছ থেকে সদিচ্ছা ও আইনি সংস্কারের দাবি করেছেন। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে ওই সংলাপে বক্তারা বলেন, গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে স্বীকৃত এবং জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এই সংলাপে আলোচনা করেন অধ্যাপক গীতিআরা নাসরিন, বিশিষ্ট সাংবাদিক মনঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, সেলিম সামাদ, অক্সফাম বাংলাদেশের এস এম মনজুর রশিদ, পেন ইন্টারন্যাশনালের আইরিন জামান, আইনজীবী ব্যারিস্টার জোতির্ময় বড়ুয়াএবং মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরাম এর খায়রুজ্জামান কামাল। সংলাপে সাংবাদিক, অধিকার কর্মী, ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। ভয়েস এর নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি পরিচালিত হয়। আলোচনায় সাংবাদিক সেলিম সামাদ বলেন, সেলফ সেন্সরশিপ আরও বেড়েছে বিগত দিনের থেকে। সাংবাদিকদেরকে নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে, তবুও তারা অনেক ঝুঁকির মধ্যে তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরাম এর খায়রুজ্জামান কামাল বলেন, সারাদেশে অনলাইন নিউজ মিডিয়া বেড়ে যাওয়ায় এখন তৃণমূল পর্যায়ে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের হুমকি ধামকি নিয়ে সাংবাদিকদের কাজ করতে হচ্ছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণকারী আইন-কানুনের ব্যবহার বাড়ছে বলে জানান ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্ট নিয়ে সংশয়ের কথা তুলে ধরে আইনটির সংস্কারের দাবি করেন পেন ইন্টারন্যাশনাল এর আইরিন জামান। একইসঙ্গে তিনি বলেন, সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজ সম্মিলিতভাবে কাজ করতে পারলে গণ্যমাধ্যমের জন্য আরো স্বাধীনতা নিশ্চিত করা সম্ভব। ফেক নিউজ ও সেল্ফ সেন্সরশিপের ব্যাপারে ব্যাখ্যা করে অধ্যাপক গীতিআরা নাসরিন বলেন, ফেক নিউজ যাতে না আসে সেজন্যই তো সাংবাদিকদের নিউজটা দিতে হবে আগেভাগেই, তাহলে আর বিভ্রান্তি তৈরি হবে না। সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে বাংলাদেশ-এর চার ধাপ নীচে নেমে যাওয়া নিঃসন্দেহে দুর্ভাগ্যজনক। তিনি সাংবাদিকদের আরো দায়িত্ব নিয়ে কাজ করা এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে পেশাগত জ্ঞান বাড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, একজন সাংবাদিক হতে হলে তাকে আগে একজন বুদ্ধিজীবী হতে হয়ে। নইলে কোনো সাংবাদিকই হওয়া যায় না। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আেরা বক্তব্য রাখেন ইউল্যার-এর শিক্ষক বিজয়া আনাম, নাগিরক উদ্যোগের জাকির হোসেন প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :