শিরোনাম
◈ যে কারণে বাংলাদেশকে লাখ লাখ ডলার জরিমানা দিতে হচ্ছে ◈ পলাতক পুলিশ সদস্যদের বেতন বন্ধ, হচ্ছে মামলা, বেশির ভাগই ভারতে অবস্থান করছেন ◈ আওয়ামী লীগ এখনই নিষিদ্ধ নয়, তবে রাজনীতি করার অধিকার হারিয়েছে : উপদেষ্টা নাহিদ ◈ ক্ষমতার ভারসাম্য, একজন দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয় : বিএনপির সংস্কার প্রস্তাব ◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে ১০ বছর আগে যা বলেছিলেন নরেন্দ্র মোদি ◈ জামায়াত কাদের সঙ্গে জোট করবে, জানালেন সেক্রেটারি গোলাম পরোয়ার ◈ ৫৩ বছর দেখেছি, আমরা আরও দু-এক বছর ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে দেখতে চাই:  নুরুল হক (ভিডিও) ◈ নবীনগরে বিপনী মার্কেটে আগুন, পুড়ে ছাই ১২ দোকান ◈ ‘ওরেশনিক’ রাশিয়ার নতুন ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে যা জানা গেল ◈ ফেসবুকে দাবি ‘মুগ্ধ ও স্নিগ্ধ একই ব্যক্তি’, যা বলছে ফ্যাক্ট চেক

প্রকাশিত : ০১ মে, ২০১৯, ১০:০৩ দুপুর
আপডেট : ০১ মে, ২০১৯, ১০:০৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নারায়ণগঞ্জে সুইপার কলোনীর প্রথম গ্রাজুয়েট সনু রাণী

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : ‘ওরা জানতেই পারছে না ওদের জন্যে পৃথিবীতে কত বিস্ময় অপেক্ষা করছে। অথচ বাংলা ভাষাটাই ওদের কাছে ভয়ের বিষয়। পড়াশোনায় আনন্দ পায় না। আমরা এই শিশুদের বিস্ময়ের সন্ধান দিতে চাই। প্রাথমিক পর্যায়ে ভালোভাবে বাংলা শেখাতে পারলে ওরা নিজেরাই নিজেদের স্বপ্নের জন্য ছুটবে।’কথাগুলো সনু রানী দাসের। নারায়ণগঞ্জের টানবাজার সুইপার কলোনির প্রথম স্নাতক (গ্র্যাজুয়েট) তিনি।

সনু বলেন, বাংলাদেশে এখনো একজন নারীকে উঠে আসতে হলে অনেক সংগ্রাম করতে হয়। আর সুইপার কলোনিতে জন্ম নেওয়া একটি শিশুর জন্য ভিন্ন ভাষায় পড়াশোনা করাটা আরও কঠিন। সনু এবং তার দুই বান্ধবী মিনা ও পূজা নারায়ণগঞ্জের হরিজনদের মধ্যে প্রথম এসএসসি পাস করেন।

১৫০টি পরিবারের এই কলোনিতে ১৯৬৪ সাল থেকেই একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। তবু ২০০৬ সালের আগে সেই কলোনির কেউ মাধ্যমিকের গণ্ডি পার করতে পারেননি। সনুর মতে, ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা, পরিবারগুলোর অসচেতনতা ও অর্থনৈতিক দৈন্যই এর জন্য দায়ী। সুইপারদের মাতৃভাষা হিন্দি হলেও পাঠ্যবইগুলো বাংলায়। বাংলা বুঝতে না পারায় প্রাথমিক পর্যায়েই ছেলেমেয়েরা ঝরে পড়ে। স্কুলের শিক্ষকেরা ভিন্ন ভাষা ও ভিন্ন সংস্কৃতির হওয়ার কারণে পড়াশোনাটা শিশুদের জন্য আনন্দদায়ক হয়ে ওঠে না।

মেথরপট্টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিকের পাঠ চুকিয়ে সনু ও মিনা ভর্তি হন র‌্যালি বাগান গণবিদ্যা নিকেতন উচ্চবিদ্যালয়ে। নারায়ণগঞ্জ কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করার পর সরকারি তোলারাম কলেজ থেকে স্নাতক (বিবিএস) করেন দুজন। সনু বলেন, ‘উচ্চমাধ্যমিকের (এইচএসসি) পাঠ চোকানোর পরই আমি ও মিনা (সনুর বান্ধবী) ভাবলাম, শিক্ষক হতে হবে।’

কলোনিতেই বিয়ে করেছেন তারা। স্বামী ও সন্তান নিয়ে কলোনির বাইরে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন মিনা রানী। সেখানে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, গৃহিণী পরিচয় দেওয়াটা নিজের জন্য জুতসই মনে হয় না। আমরা যখন পড়াশোনা করতে বাইরের স্কুলে গেলাম, তখন অনেকেই ভর্ৎসনা করল। মা বাবাকে এসে বলল, মেয়েমানুষ এত পড়াশোনা করে কী হবে? শেষ পর্যন্ত তো চুলাই সামলাতে হবে। যদি নিজের স্বপ্নটা পূরণ না হয়, তবে তাদের কথাটাই সত্য হয়ে যাবে। আমরা আমাদের স্বপ্ন ছুঁতে না পারলে মেয়েদের জন্য বাজে উদাহরণ হয়ে যাবো।

মেথরপট্টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা অর্চনা রানী সাহা মনে করেন, সুইপার কলোনির স্কুলগুলোতে সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্য থেকে উঠে আসা লোকজনকেই শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া উচিত। তিনি বলেন, শুধু ভাষা না বোঝার কারণেই কলোনির ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ শিক্ষার্থী প্রাথমিক পর্যায়ে ঝরে পড়ে। কলোনির বাসিন্দাদের মধ্য থেকে শিক্ষক হলে ভাষার প্রতিবন্ধকতা যেমন দূর হবে, তেমনি শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বোঝাপড়া নিবিড় হবে।

নারায়ণগঞ্জের জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মজিব আলম বলেন, কলোনির বাচ্চাদের মাতৃভাষা হিন্দি, পড়াশোনা বাংলায়। ফলে সামান্য প্রতিবন্ধকতা আছে। কলোনি থেকে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে আমাদের তেমন ভাবনা নেই। এটা জাতীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়