খোকন আহম্মেদ হীরা : শিক্ষার্থীদের টানা ৩৫ দিনের ও শিক্ষকদের দশদিনের আন্দোলনের পর মেয়াদকাল পর্যন্ত ছুটি দেওয়া হয়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. এসএম ইমামুল হককে। সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নেতা লোকমান হোসেন ও শফিকুল ইসলাম তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ওই আদেশে বলা হয়েছে গত ১১ এপ্রিল থেকে আগামী ২৬ মে পর্যন্ত মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. এসএম ইমামুল হককে ব্যক্তিগত ও প্রশাসনিক প্রয়োজনে ৪৬দিনের ছুটি মঞ্জুর করেছেন।
উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. একেএম মাহাবুব হাসান অতিরিক্ত উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও এই আদেশ রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে জারি করা হয়েছে বলেও অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
সূত্রমতে, মুহুর্তের মধ্যে এ খবরে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পরলে তারা ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে আনন্দ উল্লাসে একে অপরকে মিষ্টি মুখ করিয়েছেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নেতা লোকমান হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের ত্যাগের ফল আমরা অনেক প্রতীক্ষার পর পেয়েছি। দুর্নীতিবাজ ও রাজাকার এই ভিসিকে তার মেয়াদকাল পর্যন্ত ছুটি দেওয়ায় সকল শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে পরম শ্রদ্ধার সাথে ধন্যবাদ জ্ঞাপন জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আয়োজন সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের না জানানোর কারণে প্রতিবাদ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে ভিসি ইমামুল হক ক্ষিপ্ত হয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেয়ায় প্রতিবাদের আন্দোলন বেগবান হয়। পরবর্তীতে ভিসির অপসারনের দাবিতে শিক্ষার্থীরা টানা ৩৫ দিন ধরে আন্দোলন করেন। পুরোটা সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাশ, পরীক্ষা ও কার্যক্রম বন্ধ ছিলো। আন্দোলন কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ভিসির পদত্যাগ, অপসারণ অথবা পূর্ণমেয়াদকাল পর্যন্ত ছুটির দাবিতে তিনদফা মহাসড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ, মশাল মিছিল, ভিসির কুশপুতুল দাহ, রক্ত দিয়ে ভিসি বিরোধী নানা শ্লোগান লেখা, গণস্বাক্ষর, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেন। সবশেষ গত দশদিন ধরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সম্মতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দরা অবস্থান কর্মসূচি ও মানববন্ধন পালন করেন। পরবর্তীতে শিক্ষক ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা যৌথভাবে ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেন।
আপনার মতামত লিখুন :