নিউজ ডেস্ক : পাবনার চাটমোহরে তুচ্ছ ঘটনায় অভিযুক্ত করে রবিউল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে গলায় ঝাড়ু ও জুতার মালা পড়িয়ে গ্রাম ঘোরালেন গ্রাম্য প্রধানরা। শনিবার বিকেলে পাবনার চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা কারিগরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে ঘটনার সময় মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিওটি ফেসবুকে দিলে বিষয়টি ভাইরাল হওয়ায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। রবিউল ওই গ্রামের মৃত আরশেদ সরদারের ছেলে। তবে এ নিয়ে ওই এলাকায় অনেকের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। গলায় জুতার মালা ও ঝাড়ু পড়িয়ে গ্রাম ঘোরানোর ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পেশায় দর্জি ও ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম শুক্রবার রাতে তার প্রতিবেশী নাজিম নামে এক দিনমজুরের শোবার ঘরের জানালা দিয়ে উঁকি মারে। এ সময় নাজিমের স্ত্রী (নাম জানা যায়নি) ঘরে একাই ছিল। উঁকি দেওয়ার বিষয়টি প্রতিবেশী এক নারী দেখে ফেলে এবং এর প্রতিবাদ করলে রবিউল তার গলা চেপে ধরে। পরে ওই নারীর চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে পালিয়ে যায় রবিউল।
এ ঘটনার পর নাজিম স্থানীয় গ্রাম প্রধানদের কাছে অভিযোগ দিলে শনিবার বিকেলে সাবেক ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন গ্রাম প্রধান দুই পক্ষকে নিয়ে সালিস বৈঠক বসায়। পরে উঁকি দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করায় গ্রাম প্রধানরা রবিউলকে গলায় জুতার মালা ও ঝাড়ু পড়িয়ে ঘোরাতে হবে বলে রায় দেন। এরপর ছাইকোলা ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার তৈয়ব হোসেন হাতে একটি লাঠি নিয়ে রবিউল ইসলামকে গলায় জুতার মালা পড়িয়ে পুরো পাড়া ঘোরান। তবে গলায় জুতার মালা ও ঝাড়ু পড়ানোর ঘটনাকে অমানবিক বলে আখ্যায়িত করেছেন অনেকেই। এদিকে ঘটনার সময় বেশ কয়েকজন মোবাইলে ভিডিওটি ধারণ করে ফেসবুকে পোস্ট দিলে বিষয়টি ভাইরাল হয়ে যায়।
বিষয়টি জানতে চেয়ে রবিবার দুপুরে রবিউল ইসলামের মোবাইলে ফোন দিলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ‘আমি একটু পরে কথা বলছি’ বলে লাইন কেটে দেন। পরে কয়েকবার ফোন দিলেও তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে গ্রাম প্রধান ও সাবেক ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম জানান, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর দুই পক্ষকে নিয়ে বসেছিলাম। সালিসে রবিউল অভিযোগ স্বীকার করায় প্রধানরা রবিউলকে জুতার মালা পড়িয়ে পাড়া ঘোরাতে হবে রায় দেন।’
পুলিশকে না জানিয়ে বিচার-সালিস করে এমন রায় দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তো একা এই রায় দেইনি। সবাই মিলে এই রায় দিয়েছেন। ভিডিও’র বিষয়টি আমার জানা নেই।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ছাইকোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম জানান, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি গত তিন দিন ধরে ঢাকায় আছি।’
ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে চাটমোহর থানার ওসি সেখ মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘কেউ আমাকে এমন কিছু জানায়নি বা অভিযোগ দেয়নি। আমি ঘটনাস্থলে এখনই পুলিশ পাঠাচ্ছি।’ কালের কণ্ঠ
আপনার মতামত লিখুন :