আহমেদ শাহেদ : বাংলাদেশে কান্ট্রি ম্যানেজার নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে এ নিয়ে আলাপ-আলোচনাও চালিয়েছে তারা। দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে তারা সুপরিচিত নাম। দেশে কান্ট্রি ম্যানেজার নিয়োগের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে কোম্পানিটি খুব বেশি দেরিও করবে না বলে জানা গেছে। তবে প্রতিনিধি নিয়োগ দিলেও এখনই ঢাকায় ‘আনুষ্ঠানিক অফিস’ খুলছে না ফেসবুক।
দেশে অফিস খোলা বা প্রতিনিধি নিয়োগের বিষয়ে দীর্ঘ সময় ধরে ফেসবুককে বলে আসছে সরকার। মূলত চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি স্পেনের বার্সেলোনায় মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে ফেসবুক প্রতিনিধিদের সঙ্গে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের বৈঠকের পরও এই প্রক্রিয়ায় গতি আসে।
গত কয়েক বছরেই গুজব, নাশকতায় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর প্রোপাগান্ডা, পর্নোগ্রাফি, ভুয়া পেইজ, রাজনৈতিক ও দেশ বিরোধী অপপ্রচার, প্রশ্ন ফাঁসের মতো ইস্যুতে ফেসবুক ব্যবহারের বিষয়টি এসেছে। যেখানে সরকার এই সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্টটির দ্রুত রেন্সপন্স চেয়েছে সবসময়।
এছাড়া দেশে বিপুল পরিমাণ ব্যবসার বিপরীতে ফেসবুক যে ভ্যাট-ট্যাক্স দিচ্ছে না সেটিও গত বছর সামনে এসেছে। সরকার ইতোমধ্যে ফেসবুককে এই ভ্যাট-ট্যাক্স দিতে বলেছে। আর এসব কারণেই সরকারের চাপে শেষ পর্যন্ত দেশে কান্ট্রি ম্যানেজার নিয়োগ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে তারা।
বার্সেলোনার ওই বৈঠকে মোস্তাফা জব্বার ফেসবুক প্রতিনিধিদের হাতে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ধরিয়ে দিয়েছিলেন। ওই বৈঠকে তিনি ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশে আইন মোতাবেক ফেসবুককে কনটেন্ট এবং অন্যান্য বিষয়গুলো এক্সিকিউট করতে বলেন। ফেসবুকে ব্যবহার প্রেক্ষাপটে নাগরিক সুরক্ষার বিষয়টি সবার আগে গুরুত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশে ফেসবুকের যেসব বিজ্ঞাপন ও বুস্টিং হচ্ছে তার থেকে যে রেভিনিউ জেনারেট হচ্ছে সেটা যেন সরকারের ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়ে আসে তাও জানিয়ে দেন তিনি। সেখানে বাংলাদেশে ব্যবসার ভ্যাট-ট্যাক্স দেয়ার একটি ফ্রেমওয়ার্ক ফেসবুককে তৈরি করতে বলা হয়েছিল। বৈঠকে বাংলাদেশে তাদের প্রতিনিধি রাখা ও অফিসের খোলার বিষয়টিও আলোচনায় আসে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড হতে নেওয়া বিটিআরসির তথ্যে দেখা যায়, ২০১২ সালের পর থেকে ফেসবুক এ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে আট হাজার কোটি টাকা ব্যবসা করেছে। বিটিআরসির মতে ফেইসবুক বাংলাদেশে বছরে এখন দেড় হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করছে বাংলাদেশে। এখানকার জনগণও মাধ্যমটি ব্যবহার করে সেবা পাচ্ছে। তবে এখান থেকে ফেসবুকের প্রাপ্তিই বেশি।
সূত্র : ইত্তেফাক।
আপনার মতামত লিখুন :