হ্যাপি আক্তার: বাবা বা স্বামীর সম্পদে নারীর অধিকার নিশ্চিত করতে আইনজীবী ও বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (২৮ এপ্রিল) বেলা ১১টায় রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস-২০১৯’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছি। ২০৪১ সালের মধ্যেই দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে চাই। এজন্য সমাজে প্রতিটি ক্ষেত্রে আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বর্তমানে আদালতগুলোতে মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপর দিকে আপোষ যোগ্য মামলাগুলো মধ্যস্ততার অভাবে দীর্ঘ সময়ের পর নিষ্পত্তি হচ্ছে। এই অবস্থান থেকে পরিত্রাণ পেতে সরকার বিকল্প পদ্ধতি মাধ্যমে নিষ্পত্তির জন্য উৎসাহিত করছে।
‘গ্রামের অনেক অসহায় মানুষই গ্রাম্য শালিশ বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের দারস্ত হন। কিন্তু শালিশকারিদের অনেকেরই আইন সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকায় নানা জটিলতা সৃষ্টি হয়। তাই ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে এই সেবা বাস্তাবায়নের উদ্দেশ্যে সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে। এবং আইন সম্পর্কে সাধারণ মানুষের যেন ধারণা অর্জন করতে পারে।সে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকার আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায় সম্বলহীন ও নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারণে দেশের কোনো নাগরিক যেন ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত না হয়, সে লক্ষ্যে আমরা ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০’ প্রণয়ন করেছি।’
অসহায়, দরিদ্র ও নিঃস্ব জনগণকে বিনা খরচে সরকারি আইন সহায়তা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জেলা লিগ্যাল এইড অফিসসমূহ ‘বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি’র কেন্দ্রস্থল হিসেবে মামলার পক্ষসমূহের মধ্যে আপোষ-মীমাংসার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করছে, যা সারাদেশের আদালতসমূহে মামলাজট হ্রাস করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম স্বপ্ন ছিল সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার ও সুবিচার নিশ্চিত করা। তিনি ১৯৭২ সালে মহান সংবিধানে মানুষের মৌলিক অধিকার এবং সব নাগরিকের আইনের আশ্রয় পাওয়ার সমানাধিকার নিশ্চিত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর দেশে আইনের শাসন ও মৌলিক অধিকার ভূলুণ্ঠিত হয়। ’৭৫ পরবর্তী বিএনপি-জামাত জোট সরকার হত্যা, দমন, নির্যাতন ও নিপীড়নের রাজত্ব কায়েম করে। সুবিচারের পথ রুদ্ধ করে দেয়। দেশের জনগণ আইনগত সহায়তা ও অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়।
আপনার মতামত লিখুন :