নিজস্ব প্রতিবেদক: গতকাল শেষ হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে জমজমাট ওয়ানডে ম্যাচের ঘরোয়া লিগের খেলা ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ (ডিপিএল)। এই লিগে চ্যাম্পিয়ন দল পেতে সুপার লিগের একেবারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে। জমে উঠা পয়েন্ট টেবিলে নেট রানরেটে এগিয়ে ২০তম শিরোপা জিতেছে সৈকত, মাশরাফি, সৌম্যদের আবাহনী।
সুপার লিগ সহ সর্বোচ্চ ২৬ পয়েন্ট নিয়ে শিরোপা জেতা আবাহনীর ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলেছে দুইয়ে থেকে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিততে না পারা লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। তাদেরও পয়েন্ট আবাহনীর সমান ২৬, নেট রানরেটে পিছিয়ে ছিল দলটি।
১৬ ম্যাচ খেলে ২০ পয়েন্ট নিয়ে তিনে প্রাইম দোলেশ্বর, ১৮ পয়েন্ট নিয়ে চারে শেখ জামাল, ১৬ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে প্রাইম ব্যাংক আর ১৪ পয়েন্ট নিয়ে ছয়ে থেকে আসর শেষ করে মোহামেডান। এই শিরোপা জয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ২০তম শিরোপা ঘরে তুললো অপ্রতিরোধ্য আবাহনী লিমিটেড। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে তৃতীয় ও টানা দ্বিতীয়।
আসর শেষে দেখে নেওয়া যাক ব্যাটে-বলে কারা সেরা হলেন।
সর্বোচ্চ রান:
১। সাইফ হাসান (প্রাইম দোলেশ্বর): ১৬ ম্যাচে ৮১৪ রান, সর্বোচ্চ ১৪৮*, সেঞ্চুরি ৩টি, ফিফটি ৪টি
২। মোহাম্মদ নাঈম (রূপগঞ্জ): ১৬ ম্যাচে ৮০৭ রান, সর্বোচ্চ ১৩৬, সেঞ্চুরি ৩টি, ফিফটি ৫টি
৩। রাকিবুল হাসান (মোহামেডান): ১৬ ম্যাচে ৭৮১ রান, সর্বোচ্চ ১০২, সেঞ্চুরি একটি, ফিফটি ৮টি
৪। জহুরুল ইসলাম অমি (আবাহনী): ১৫ ম্যাচে ৭৩৫ রান, সর্বোচ্চ ১৩০, সেঞ্চুরি ৩টি, ফিফটি ৩টি
৫। ফজলে মাহমুদ (ব্রাদার্স): ১৩ ম্যাচে ৬০৩ রান, সর্বোচ্চ ১৪৯*, সেঞ্চুরি ৩টি, ফিফটি ২টি
সর্বোচ্চ উইকেট:
১। ফরহাদ রেজা (প্রাইম দোলেশ্বর): ১৬ ম্যাচে ৩৮ উইকেট
২। মোহাম্মদ শহীদ (রূপগঞ্জ): ১৫ ম্যাচে ২৭ উইকেট
৩। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন (আবাহনী): ১৩ ম্যাচে ২৫ উইকেট
৪। হাসান মুরাদ (বিকেএসপি): ১৩ ম্যাচে ২২ উইকেট
৫। রবিউল হক (খেলাঘর): ১১ ম্যাচে ২২ উইকেট
সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি: ফজলে মাহমুদ (ব্রাদার্স), জহুরুল ইসলাম (আবাহনী), আনামুল হক বিজয় (প্রাইম ব্যাংক), মোহাম্মদ নাঈম (রূপগঞ্জ) এবং সাইফ হাসান (প্রাইম দোলেশ্বর)। প্রত্যেকে করেছেন তিনটি করে সেঞ্চুরি।
সর্বোচ্চ ছক্কা: সাইফ হাসান (প্রাইম দোলেশ্বর, ২৭টি), সোহাগ গাজী (মোহামেডান, ২৪টি), সৌম্য সরকার (আবাহনী, ২১টি), মিজানুর রহমান (ব্রাদার্স, ১৯টি) এবং আনিসুল ইসলাম ইমন (উত্তরা স্পোর্টিং, ১৮টি)।
বেস্ট বোলিং ফিগার: মাশরাফি বিন মর্তুজা (আবাহনী)- ১০ ওভারে ৪৬ রান ৬ উইকেট, ২৯ মার্চ বিকেএসপিতে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে। এই আসরে আর কেউ ইনিংসে ৬ উইকেট পাননি।
মোস্ট ডিসমিসাল: শেখ জামালের উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহান (২৩টি)। যেখানে ছিল ১৬টি ক্যাচ আর ৭টি স্ট্যাম্পিং। ১৮টি ডিসমিসালে নাম লিখিয়েছেন রূপগঞ্জের জাকের আলি, ১৭টি করে ডিসমিসালে নাম লেখান বিকেএসপির আকবর আলি এবং মোহামেডানের ইরফান শুক্কুর।
সর্বোচ্চ ক্যাচ: বিকেএসপির শামীম হোসেন, আবাহনীর সৌম্য সরকার, প্রাইম ব্যাংকের আল আমিন এবং রূপগঞ্জের নাঈম ইসলাম ১১টি করে ক্যাচ লুফে নিয়েছেন। এর মধ্যে রূপগঞ্জের তারকা মুমিনুল হক এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ৫টি ক্যাচ নিয়ে রেকর্ড গড়েছেন। তার মোট ক্যাচের সংখ্যা ১০টি।
সর্বোচ্চ জুটি: আবাহনীর দুই ওপেনার জহুরুল ইসলাম অমি এবং সৌম্য সরকার ওপেনিং জুটিতে তুলেছেন ৩১২ রান, শেখ জামালের বিপক্ষে। এই জুটিই লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের যে কোনো উইকেটে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০০৭ সালে ফতুল্লায় চট্টগ্রাম বিভাগের হয়ে রাজশাহী বিভাগের বিরুদ্ধে তৃতীয় উইকেটে ধীমান ঘোষ ও মাহবুবুল করিমের ২৯০ রানই এতদিন দেশের সর্বোচ্চ রানের জুটি ছিল।
এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কা: সৌম্য সরকার (আবাহনী)- ১৬টি ছক্কা, প্রতিপক্ষ শেখ জামাল। সাইফ হাসান (প্রাইম দোলেশ্বর) ১১টি ছক্কা, প্রতিপক্ষ শেখ জামাল। ১৬ ছক্কা মেরে দেশের লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে শীর্ষে আবাহনীর ওপেনার সৌম্য। ছাপিয়ে গেছেন নিজেকে, মাশরাফি ও সাইফকেও। এক ইনিংসে এই ফরম্যাটের ক্রিকেটে তাদের ১১টি ছক্কাই ছিল সর্বোচ্চ।
চার-ছক্কায় সর্বোচ্চ: শেখ জামালের বিপক্ষে বাংলাদেশের একমাত্র ডাবল সেঞ্চুরিয়ান (লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে) সৌম্য সরকার ১৪টি চারের পাশাপাশি হাঁকিয়েছেন রেকর্ড গড়া সর্বোচ্চ ১৬টি ছক্কা। বাউন্ডারিতে তার ব্যাট থেকেই এসেছে ১৫২ রান। ১৫৩ বল খেলে তিনি অপরাজিত ছিলেন ২০৮ রানে। এর আগে প্রাইম দোলেশ্বরের সাইফ হাসান ১০ চার আর ১১ ছক্কায় ১১৬ বলে করেছিলেন অপরাজিত ১৪৮ রান। যেখানে বাউন্ডারিতে আসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০৬ রান।
আপনার মতামত লিখুন :