জাবেদ হোসাইন মামুন, সোনাগাজী (ফেনী) প্রতিনিধি : গত ৬এপ্রিল সোনাগাজীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির গায়ে অগ্নিসংযোগের পর থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ১৭ দিনেও বিলাপ থামেনি নুসরাতের মমতাময়ী মা শিরিন আক্তারের। তোরা আমার নুসরাতকে আনি দে, ও আমার বুকের মণি নুসরাত, ও আমার চোখের মণি রাফি, আমার শূন্য বুকে ফিরে আয়, ও আমার রাফি তুই কই, ও আল্লাহ আমাকে নিয়ে আঁর নুসরাত কে ফিরিয়ে দাও। চোখে ঘুম এলে আর নুসরাতে দেখি। আঁই ঘুম যাইতান্ন, তোরা আঁর নুসরাতকে ফিরিয়ে দে।
এসব বলে নুসরাতের শয়ন কক্ষে তার খাটের উপর বসে এবং শুয়ে এইভাবে আহাজারি করছেন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার। ওই কক্ষে নুসরাত ছাড়া তার কাপড় ছোপড়, বই খাতা, আসবাবপত্র, সবই আছে। শুধু নেই নুসরাত। আর তারই কক্ষে অবস্থান নিয়েছেন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার। নুসরাতকে বুকে জড়িয়ে কক্ষেই তিনি ঘুমাতেন। মায়ের বুকে ঘুমানোর সময় নুসরাত বলতেন নানা গল্প। সেই খাটে শূন্য বুকে রাত্রি যাপন করছেন শিরিন আক্তার। কিছুতেই ঘুম আসেনা তার। হাজারো স্বজন এসে তাকে শান্তনা দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু কিছুতেই কেউ তার কান্না থামাতে পারছেন না।
তার দাবী চোখে ঘুম এলেই যেন নুসরাত তাকে মা বলে ডেকে উঠে। তখনই তিনি নুসরাতকে খুঁজতে থাকেন। কিছুতেই ভুলতে পারছেননা নুসরাতের অতীত স্মৃতি আর পোড়া গায়ে দু:সহ যন্ত্রণার কথা। নুসরাতের পোড়া গন্ধে যেন আজও তার নাকে লাগছে। নুসরাতের স্মৃতি স্মরণ করে বুক থাবড়িয়ে থাবড়িয়ে বিলাপ করছেন শিরিন। আত্মীয় স্বজনেরা যেন তাকে শান্তনা দেয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন।
নুসরাত তার শয়ন কক্ষের দেয়ালে লাল কাগজে লেখে রেখেছেন 'মা আমার চোখের মণি'। মায়ের উপর দুইটি কবিতাও লেখেছেন তিনি পাঠকদের পড়ার জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো ' আমি চাঁদকে বলি তুমি আমার মায়ের মত সুন্দর নও, গোলাপকে বলি তুমি আমার ময়ের মত মিষ্টি নও, মা যে আমার সবার সেরা বিধাতার শ্রষ্ঠ উপহার, হয়না বন্ধু কারো সাথে মায়ের তু্লনা। আই লাভ ইউ মা, আই মিস ইউ মা।