সুজন কৈরী : রাজধানীর কলাবাগান থেকে অপহরণের ছয়দিন পর মেহেদি হাসান রায়হান নামে এক ব্যক্তিকে সাভারের আমিন বাজার থেকে উদ্ধার করেছে র্যাব-৪। এ সময় পাঁচ অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো- আজিজুল হাকিম (৪০), লিটন মোল্লা (২৬), কাজল বেগম (২৬), নজরুল ইসলাম বাবু (৪২) ও নুরু মিয়া অরফে নূর ইসলাম ওরফে কাকা অরফে মোল্লা (৬২)।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির জানান, রায়হানকে গত ১২ এপ্রিল সকালে কলাবাগান থেকে অপহরণ করে আমিনবাজারের নিয়ে আটকে রাখে অপহরণকারীরা। কাজল বেগম সম্পর্কের ফাঁদে ফেলে দেখা করার কথা বলে প্রাইভেটকারে উঠায়। চালকের সহযোগীতায় রায়হানকে অপহরণ করা নিয়ে যায়। অপহরণের পর পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা। না দিলে রায়হানকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরে মুক্তিপণ কমিয়ে চার লাখ টাকা দাবি করা হয়। এরইমধ্যে গত ১৫ এপ্রিল এক লাখ টাকা অপহরণকারীদের দেয়া হয়। মিরপুরের ষাটফিট ভাঙ্গা ব্রিজ এলাকা থেকে টাকাগুলো নেয় অপহরণকারীরা।
এই র্যাব কর্মকর্তা আরো জানান, ১৬ এপ্রিল ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ পেয়ে বুধবার রাত থেকে অভিযান চালিয়ে রায়হানকে উদ্ধারসহ অপহরণকারীদের গ্রেফতার করা হয়। তিনি বলেন, সুন্দরী মেয়েদের ছবি দিয়ে ফেসবুক আইডি খুলে ব্যবসায়ীসহ পেশাজীবীদের টার্গেট করে বন্ধুত্ব, ব্যক্তিগত নম্বর সংগ্রহ করতো চক্রের সদস্য কাজল। পরে মোবাইল ফোনে আলাপ শুরু, ধীরে ধীরে প্রেমের সম্পর্ক গভীর করে ডেটিংয়ের আমন্ত্রণ জানানো হয়। তার কাছে যাওয়ার পর প্রেমিককে অপহরণ করে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ আদায় করা হতো। শুধু প্রেমের ছলেই নয়, বিভিন্ন কৌশলে চক্রটি দীর্ঘ ১০ বছর ধরে পেশাজীবী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করছিল। ধনাঢ্য অবিবাহিত পুরুষদের টার্গেট করে কৌশলে অপহরণের পর তাদের হাত-পা বেঁধে পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করতো। অন্যথায় ভিকটিমকে খুন করার হুমকি দিতো। ঢাকাসহ আশপাশের বাসস্টেশন থেকে চক্রটি যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে মাইক্রোবাস বা প্রাইভেটকারে উঠিয়েও অপহরণ করতো চক্রটি।