নিউজ ডেস্ক : এক বছর ১০ মাসের শিশুর পেটে মিলল আড়াই বছরের ভ্রুণ। বৃহস্পতিবার ভারতের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হয় ওই শিশুটির। চিকিৎসকদের দাবি, মায়ের পেটে থাকাকালীন একসঙ্গে বেড়ে ওঠা আরেকটি ভ্রূণ কোনোভাবে ওই শিশুর দেহে ঢুকে যায়। পাঁচ লক্ষের মধ্যে একজনের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটে বলেও জানান চিকিৎসকরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২৩ মার্চ ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন বীরভূমের নানুর থানার পাকুড়হাস এলাকার বাসিন্দা বলরাম মাঝি। শিশুটির মা লক্ষ্মী মাঝি জানান, পাঁচ-ছ’মাস ধরে ছেলের পেট বড় হচ্ছিল বলে বুঝতে পারছিলেন তারা। তবে শুরুর দিকে ব্যথা বা অন্য কোনো উপসর্গ ছিল না। পরে পেটের একটা অংশ শক্ত হয়ে যায়। ছেলেকে নিয়ে প্রথমে সিয়ান হাসপাতালে যান তারা। সেখান থেকে রেফার হয়ে আসেন বর্ধমানে।
শিশুটির নানা পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা দেখেন, পেটের মধ্যে ভ্রুণের মতো মাংসপিণ্ড রয়েছে। এরপরই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন তারা। এ দিন চিকিৎসক নরেন মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ১০ চিকিৎসক ও কর্মীদের দল প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করেন।
মাংসপিণ্ডটি বের করে দেখা যায়, হাত-পা, চুল গজিয়ে গেছে। চিকিৎসকদের দাবি, আরও কিছুদিন দেরি হলে ভ্রূণটি বেড়ে ওই শিশুর পেটের অন্য অঙ্গের ক্ষতি হতে পারত। আপাতত বিপদ কাটলেও বেশ কয়েকদিন চিকিৎসকের অধীনে থাকতে হবে শিশুটিকে।
বলরামবাবু বলেন, ছেলে দিব্যি হেসে খেলে বেড়াত। ভেতরে যে এমন হয়ে রয়েছে বুঝিনি। ডাক্তারবাবুদের কী বলে ধন্যবাদ দেব জানি না।
চিকিৎসক নরেন মুখোপাধ্যায় জানান, এটাকে বলে ‘ফিটাস ইন ফিটু’। বর্ধমান মেডিক্যালে আগেও এ ধরনের অস্ত্রোপচার হয়েছে। ঘটনাটি বিরলতম না হলেও বেশ জটিল। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে সমস্যায় পড়ত শিশুটি।
হাসপাতালের ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহাও বলেন, এটি বিরল হলেও বর্ধমান হাসপাতালে আগে দু’তিনটি এ রকম ঘটনা পাওয়া গেছে। এ ক্ষেত্রেও আমাদের চিকিৎসকরা এই রোগ পেয়েছেন এবং সাফল্যের সঙ্গে তা সমাধান করেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :