শিরোনাম
◈ দেশের রাজনীতিতে নতুন ইসলামিক শক্তি ‘জামায়াত-চরমোনাই জোট’ ◈ কুয়াশায় ঢেকেছে ঢাকা, ফিরলো শীতের আমেজ ◈ ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপ: সৌদি আরবের ফের বিপুল বিনিয়োগের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রে ◈ ১৬ বছর পর কারামুক্ত হলেন বিডিআরের ১৬৮ সদস্য (সরাসরি) ◈ নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি গ্রেপ্তার ◈ ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আলোচনা ◈ ফিফা সভাপতি আসছেন মার্চে, নারী ফুটবলে অর্থায়নের সম্ভাবনা ◈ বাংলার বাঘের অপেক্ষায় পিএসএলের দল পাকিস্তানের পেশোয়ার জালমি ◈ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি, জার্সিতে পাকিস্তানের নাম লিখে খেলবে ভারত! ◈ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আফগানিস্তানকে বয়কট করলে সমস্যার সমাধান হবে না: জস বাটলার 

প্রকাশিত : ১১ এপ্রিল, ২০১৯, ০৫:৫২ সকাল
আপডেট : ১১ এপ্রিল, ২০১৯, ০৫:৫২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নুসরাত রাফির খাতায় হুজুরের লালসার বর্ণনা

ডেস্ক রিপোর্ট : ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসার লম্পট অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার হাতে যৌন হয়রানির পর সহপাঠি দুই বান্ধবীর উদ্দেশ্যে চিঠি লিখেছিলো নুসরাত জাহান রাফি। সেই লেখা চিঠি তার খাতা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে বাড়ি থেকে এগুলো উদ্ধার করেছে সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশ। চিঠিতে দিন-তারিখ লেখা না থাকলেও বিষয়বস্তু বিবেচনায় যৌন হয়রানির মামলা করার কিছুদিন পর এবং দগ্ধ হওয়ার কয়েকদিন আগের লেখা বলে মনে করছে তদন্তকারীরা।

ওই সূত্র জানায়, তার পড়ার টেবিলে খাতায় দুই পাতার ওই চিঠিতে তামান্না ও সাথী নামের দুই বান্ধবীকে উদ্দেশ্য করে লেখা হয়েছে। গত ২৭ মার্চ ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনাও দিয়েছে রাফি। ওই চিঠিতে রাফি আত্মহত্যা করবেনা বলেও উল্লেখ করে সে। তবে যৌন হয়রানির ঘটনার পর সিরাজ উদদৌলাহ গ্রেফতার হলে তার মুক্তির দাবীতে বান্ধবীদের অংশগ্রহণে ক্ষোভ প্রকাশ করে রাফি। তাকে নিয়ে বান্ধবীদের বিভিন্ন কটুক্তিতেও তার মর্মাহত কথা উল্লেখ করা হয় চিঠিতে।

মাদ্রাসার পিয়ন নুরুল আমিন জানান, শতাব্দী প্রাচীন মাদ্রাসাটিতে নীচতলায় ছিলো অধ্যক্ষের কক্ষ। তিন-চার বছর আগে অধ্যক্ষের কক্ষটি মাদ্রাসার একটি নির্জন কক্ষে স্থানান্তরিত করা হয়। দরজা বন্ধ করে রেখে সেখানেই ছাত্রীদের সঙ্গে অপকর্ম করতো অধ্যক্ষ সিরাজুদ্দৌলা। ঘটনার দিন সেই কক্ষে আরেক পিয়ন দিয়ে নুসরাতকে ডেকে আনা হয়।

চিঠিটি তুলে ধরা হলো:

‘‘তামান্না, সাথী,

তোরা আমার বোনের মতো এবং বোনই। ঔ দিন তামান্না আমায় বলেছিল, আমি নাকি নাটক করতেছি। তোর সামনেই বললো। আরো কি কি বললো, আর তুই নাকি নিশাতকে বলেছিস আমরা খারাপ মেয়ে। বোন প্রেম করলে কি সে খারাপ ??? তোরা সিরাজ উদ দৌলা সম্পর্কে সব জানার পরও কীভাবে তার মুক্তি চাইতেছিস। তোরা জানিস না, ওইদিন রুমে কি হইছে ? উনি আমার কোন জাগায় হাত দিয়েছে এবং আরো কোন জায়গায় হাত দেওয়ার চেষ্টা করেছে, উনি আমায় রুমের ভেতর বলতেছে— নুসরাত ডং করিসনা। তুই প্রেম করিসনা। ছেলেদের সাথে প্রেম করতে ভালো লাগে। ওরা তোরে কি দিতে পারবে? আমি তোকে পরীক্ষার সময় প্রশ্ন দেবো। আমি শুধু আমার শরীর দিতাম ওরে। বোন এই জবাবে উত্তর দিলাম। আমি একটা ছেলে না হাজারটা ছেলে...।

আমি লড়বো শেষ নি:শ্বাস পর্যন্ত। আমি প্রথমে যে ভুলটা করেছি আত্মহত্যা করতে গিয়ে। সেই ভুলটা দ্বিতীয়বার করবো না। মরে যাওয়া মানে তো হেরে যাওয়া। আমি মরবো না, আমি বাঁচবো। আমি তাকে শাস্তি দেবো। যে আমায় কষ্ট দিয়েছে। আমি তাকে এমন শাস্তি দেবো যে তাকে দেখে অন্যরা শিক্ষা নিবে। আমি তাকে কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি দেবো। ইনশাআল্লাহ।’’

নুসরাত রাফির খাতায় হুজুরের লালসার বর্ণনা

গত ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মামলা করেন মেয়েটির মা। মামলা প্রত্যাহারে রাজি না হওয়ায় ছাত্রীটির গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ওই দিনই গুরুতর আহত অবস্থায় ওই মাদ্রাসাছাত্রীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এখন ওই শিক্ষার্থীকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। তাঁর শরীরের ৭৫ শতাংশ আগুনে পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত মেয়েটির ফুসফুসকে সক্রিয় করতে গতকাল মঙ্গলবার অস্ত্রোপচার করা হয়।

নুসরাত রাফির খাতায় হুজুরের লালসার বর্ণনা

মঙ্গলবার সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মো. মোয়াজ্জেম হোসেন চিঠিটি উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এটিও ওই ঘটনার আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে। চিঠিতে উল্লেখিতদের প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে তিনি জানান।
সূত্র : ইত্তেফাক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়