মহিব আল হাসান : আজীবন অভিনয় দিয়ে মানুষকে হাসিয়েছেন, মুগ্ধ করেছেন গান গেয়েও। হাসির এই মানুষটা আমাদের কাঁদিয়ে এভাবে চলে যাবেন তা মেনে নেওয়াটা অনেক কষ্টের। তিনি চলচ্চিত্রের আপাদমস্ক একজন অভিনেতা। আমি নিজে দেখেছি তার জনপ্রিয়তা। তিনি আমাদের দেশের একজন লিজেন্ড। তিনিও চলে গেলেন। আমরা কাকে নিয়ে থাকবো। একে একে সব লিজেন্ডারা হারিয়ে যাচ্ছেন। টেলি সামাদকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে এসে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা অঞ্জনা।
তিনি বলেন, ‘ আমি দেখেছি যে এফডিসিতে টেলি সামাদের উপস্থিতি মানে ছিল সবার জন্য আনন্দ আর মজার ঘটনা, সেখানে আজ তিনি এলেন ,সেখানে আজ (৭ এপ্রিল) তিনি এলেন নিথর দেহ নিয়ে। আনন্দের বদলে প্রিয় এফডিসিতে ছড়িয়ে দিলেন নীল বেদনা।
অঞ্জনা বলেন, টেলি সামাদের সঙ্গে ১০০ এর বেশি সিনেমায় কাজ করেছি। দেশ ও দেশের বাইরে গিয়েছি অনেকবার। তাকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ আমার হয়েছে। তার সঙ্গে আমার পারিবারিক সম্পর্ক হয়ে গিয়েছিল। তিনি সবাইকে খুব ভালোবাসতে জানতেন। মানুষ পৃথিবীতে আসবে যাবে এটা সত্য। কিন্তু টেলি ভাই একটু আগেই চলে গেলেন।
প্রসঙ্গত, চার দশকের জনপ্রিয় অভিনেতা টেলি সামাদ ৬ এপ্রিল বেলা ১টা ৩০ মিনিটের দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তার চার ছেলে মেয়ে। দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে কাকলি ও ছোট বিন্দু। দুই ছেলে সুমন ও দিগন্ত। এর মধ্যে বড় ছেলে সুমন থাকেন যুক্তরাষ্ট্রে।
টেলি সামাদের জন্ম ১৯৪৫ সালের ৮ জানুয়ারি, মুন্সীগঞ্জের নয়াগাঁও গ্রামে। তার আসল নাম আবদুস সামাদ হলেও সিনেমায় এসে হয়ে যান টেলি সামাদ। তিনি পড়াশোনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায়। সংগীতেও রয়েছে এই গুণী অভিনেতার পারদর্শিতা। ‘মনা পাগলা’ ছবির সংগীত পরিচালনা করেছেন তিনি।
নজরুল ইসলামের পরিচালনায় ১৯৭৩ সালের দিকে ‘কার বৌ’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে এই অঙ্গনে পা রাখেন তিনি। তবে দর্শকের কাছে যে ছবিটির মাধ্যমে সর্বাধিক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন সেটি হলো ‘পায়ে চলার পথ’।
২০১৫ সালে টেলি সামাদ অভিনীত সর্বশেষ ছবি মুক্তি পায় অনিমেষ আইচের ‘জিরো ডিগ্রী’।
আপনার মতামত লিখুন :