শিরোনাম
◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে ১০ বছর আগে যা বলেছিলেন নরেন্দ্র মোদি ◈ জামায়াত কাদের সঙ্গে জোট করবে, জানালেন সেক্রেটারি গোলাম পরোয়ার ◈ ৫৩ বছর দেখেছি, আমরা আরও দু-এক বছর ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে দেখতে চাই:  নুরুল হক (ভিডিও) ◈ নবীনগরে বিপনী মার্কেটে আগুন, পুড়ে ছাই ১২ দোকান ◈ ‘ওরেশনিক’ রাশিয়ার নতুন ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে যা জানা গেল ◈ ফেসবুকে দাবি ‘মুগ্ধ ও স্নিগ্ধ একই ব্যক্তি’, যা বলছে ফ্যাক্ট চেক ◈ মাগুরায় উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গ্রেপ্তার ◈ জয়নাল থেকে বনে গেছেন ডা.আরিফ, নেই কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা (ভিডিও) ◈ গুমের বিচার ও গুম বিলুপ্ত করা আমাদের টপ প্রায়োরিটি : প্রেস সচিব ◈ ঢাকা মহানগরীতে মহাদুর্ভোগ

প্রকাশিত : ০৭ এপ্রিল, ২০১৯, ০৩:১৯ রাত
আপডেট : ০৭ এপ্রিল, ২০১৯, ০৩:১৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ঈমানকে সব ধরনের শিরক থেকে মুক্ত রাখার উপায়

ড. মুশতাক আহমদ : মুসলিম অমুসলিম নির্বিশেষে বিশ্ব মানবতার কাছে ইসলামের অন্যতম প্রধান আহবান হলো, শিরকমুক্ত ধার্মিকতা অবলম্বনের আহবান। হাবীবে কিবরিয়া রহমতে দোআলম হযরত রাসূলুল্লাহ সা. এর প্রধান মেহনত ছিল মানুষের মধ্যে শিরকমুক্ত ঈমান প্রতিষ্ঠা করা। শিরকের গুনাহ সবচে বড় গুনাহ। আল্লাহর হাবীব সা. শিরকের গুনাহকে ‘আকবারুল কাবায়ির’ বলে নির্দেশ করে গিয়েছেন। যুগে যুগে শিরকের বিষয়ে মানুষকে যারা সতর্ক করে থাকেন তারা মানবতার সবচেয়ে বড় হিতাকাঙ্খী। তাই আমার দোস্ত আহবাবের কাছে বিনীত অনুরোধ, আমরা যথাসাধ্য শিরকের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে চেষ্টা করবো।

মনে রাখবেন, হিম্মত করে শিরকের গুনাহ থেকে নিজকে পরিস্কার ও মুক্ত রাখা গেলে আশা করা যায় মহান আল্লাহ হয়ত আমাদের অন্যান্য ছোটখাট গুনাহ নিজ রহমতে মাফ করে দিবেন। জনৈক সুবিজ্ঞ আলিমের মতে দেওবন্দিয়্যাতের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল চারটি:

১. তাওহীদে খালিস।
২. ইত্তিবায়ে শরীঅত ও সুন্নাত।
৩. তাযকিয়্যায়ে নাফস ও ইনাবত ইলাল্লাহ।
৪. জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ।

তম্মধ্যে প্রথম বিষয়টি হল তাওহীদে খালিস। এর অর্থ হলো নিজকে সকল দিক থেকে শিরকের আশংকাজনক কাজ (জলি কিংবা খফি) থেকে সম্পূর্ণভাবে বিমুক্ত রাখা। এ কারনেই আহলে দেওবন্দের সকল বুযুর্গ হামেশা শিরক ও বিদআতের বিষয়ে সাবধান থাকতেন। দোস্ত আহবাবের সুবিধার নিয়্যতে নিম্মে নমুনাস্বরূপ মোটাদাগের কয়েকটি শিরকী কাজের বিবরণ তুলে ধরা হলো। খেয়াল করে পড়বেন ও আমল করবেন।

এক. গায়রুল্লাহকে সেজদা করা। মহান আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সেজদা করা যায় না। কিন্তু পৃথিবীর লোকেরা তা সত্বেও গায়রুল্লাহকে সেজদা করে, কুর্ণিশ করে, ভক্তি দেয়। যেমন-

১. তুলসি গাছ। অমুসলিমদের অনেকে এ গাছকে সেজদা করে, বরকাত জ্ঞান করে থাকে।
২. বট গাছ। অনুরূপ।
৩. নদ নদী, সাগর মহাসাগর। অনুরূপ।
৪. ইট পাথর। অনুরূপ।
৫. পাহাড় পর্বত। অনুরূপ।
৬. মুর্তি, দেবদেবী। অনুরূপ।
৭. মানব দানব/ রাজা বাদশা। অনুরূপ।
৮. ফেরেশতা, পয়গাম্বর। অনুরূপ।

পক্ষান্তরে ইসলামের পয়গাম হল, উপরোক্ত সবকিছু মহান আল্লাহর সৃষ্টিকৃত মাখলূক। কোন মাখলূককে মহান আল্লাহর এই পদে স্থাপন করা যায় না। কোন মাখলুককে সেজদা করা বা সেজদার ভান করা হারাম, হারাম, হারাম।

দুই. গায়রুল্লাহের কাছে পানাহ/ আশ্রয় চাওয়া। যেমন-
১. বিপদ আপদে রাম রাম; বলে ডাকা, হিন্দুরা কোন বিপদ দেখলে এরূপ ডাকে। পানাহ প্রার্থনা করে।
২. অনুরুপ কোন কোন মানুষ = বিপদে পড়ে অউম অউম, ইয়া খাজা; ইয়া খাজা, গাউসুল আজম, ‍যিশু ‍যিশু; ইত্যাদি শব্দ উচ্চারন করে পানাহ চায় কিংবা আশ্রয় প্রার্থনা করে থাকে।
পক্ষান্তরে ইসলামের পয়গাম হল, সর্বময় ক্ষমতার মালিক মহান আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে পানাহ প্রার্থনা করা যায় না। আর কেউ পানাহ দিতে পারেও না। মাখলূককে পানাহ বা আশ্রয় দেওয়ার মালিক একমাত্র মহান আল্লাহ। আল্লাহকে বাইপাস করে পানাহ প্রদানের সুযোগ অন্য কারোর হাতে নেই।

তিন. গায়রুল্লাহর নাম জপ করা। যেমন-
১. হরে হরে হরে রাম, হরে কৃষ্ঞ হরে রাম; জপ করা। উল্লেখ্য ব্রম্মাকে স্রষ্টা জ্ঞান করে অথচ তাকে ডাকা হয় না। ডাকা হয় তার সৃষ্টি শিব, বিষ্ম, রাম, কৃষ্ম প্রমুখকে।
২. অনুরুপ = ইয়া খাজা, ইয়া গাউসুল আযম, হে ত্রানকর্তা যিশু, হে ভগবান ইত্যাদি শব্দকে যিকির বা মুরাকাবা বানানো, ইত্যাদি।
পক্ষান্তরে ইসলামের পয়গাম হল, আল্লাহ ছাড়া কোন গায়রুল্লাহর যিকির বা মুরাকাবা করা যায় না। যিকির মুরাকাবা হবে একমাত্র মহান আল্লাহর। একমাত্র আল্লাহর। ইবাদত হবে একমাত্র আল্লাহর। আরাধনা হবে একমাত্র মহান আল্লাহর। এই আরাধনায় অন্য কাউকে অংশিদার রাখা যাবে না।

চার. গায়রুল্লাহকে কোন বিষয়ের প্রকৃত ক্ষমতার মালিক মনে করা। যেমন বিভিন্ন ধর্মে মনে করা হয়;
১. সৃষ্টির মালিক, দেবতা ভগবান ব্রহ্মা। যার অপর নাম ‘অউম’।
২. ধ্বংশের মালিক, দেবতা ভগবান শিব।
৩. লালনের মালিক, দেবতা ভগবান বিষ্ঞু।
৪. আকাশের মালিক, দেবতা ভগবান সুর্য।
৫. পাতালের মালিক, দেবতা ভগবান চন্দ্র।
৬. সাগরের মালিক দেবতা, ভগবান অ্যানড্রোমিডা (গ্রিক পুরান)
৭. পাহাড় পর্বত বন জঙ্গলের মালিক, দেবতা ভগবান শিব।
৮. শান্তি ও কল্যাণের মালিক দেবতা মা কালি।
৯. ধন দৌলতের মালিক দেবতা মা লক্ষী, ইত্যাদি।

পক্ষান্তরে ইসলামের ঘোষণা হল উপরোক্ত সবকিছুর কোন অংশিদারিত্ব বিহীন একচ্ছত্র মালিক একমাত্র ‘আল্লাহ’। সেই মহান আল্লাহর নিরংকুশ মালিকানা ও আধিপত্যের মধ্যে কারো কোন অংশিদারিত্ব নেই।

পাঁচ. গায়রুল্লাহর নাম বুলন্দ করা। লোকেরা বিভিন্ন ভাবে গায়রুল্লাহর নাম বুলন্দ করে, যেমন-
১. আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে কসম করা, কিরা কাটা, শপথ গ্রহণ করা;
২. আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে দোহাই দেওয়া;
৩. আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে পশু যবাহ করা;
৪. আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে মান্নত করা; পীর বা মাজারের নামে কিংবা মন্দিরের নামে মান্নত করা;
৫. আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে শিরনী দেওয়া; ইত্যাদি।

পক্ষান্তরে ইসলামের ঘোষণা হল, উপরোক্ত সকল ক্ষেত্রে নাম বুলন্দ হবে একমাত্র মহান আল্লাহর। শান প্রদর্শিত হবে একমাত্র আল্লাহর। আধিপত্য ঘোষিত হবে একমাত্র আল্লাহর। কসম, দোহাই, পশু যবাহ, মান্নত ও শিরনী হবে একমাত্র মহান আল্লাহর নামে। এ সব ক্ষেত্রে অন্য কারো নাম আনা যাবে না।

ছয়. গায়রুল্লাহকে আল্লাহর গুণাবলীর সাথে মিশিয়ে ফেলা। যেমন-
১. মানুষ জিন্ন বা কোন সৃষ্টিকে আলিমুল গায়ব মনে করা,
২. কোন সৃষ্টিকে হাজির নাজির জ্ঞান করা,
৩. কোন সৃষ্টিকে হাজতরওয়া, মশকিলকুশা, নেগাহবান জ্ঞান করা,
৪. কোন সৃষ্টিকে মুক্তিদাতা, ত্রানকর্তা, সন্তানদাতা মনে করা,
৫. গনক বা জ্যোতিষীর কথা বিশ্বাস করা, ইত্যাদি।

পক্ষান্তরে ইসলামের পয়গাম হল, মহান আল্লাহর খাস কিছু ইসম আছে, খাস কিছু সিফাত আছে। এ সকল ইসম ও সিফতের ক্ষেত্রে কোন মাখলূককে শরীক জ্ঞান করা যাবে না।

সাত. গায়রুল্লাহর (কাবাগৃহ ছাড়া) তওয়াফ করা। যেমন-
১. পুরহিতের কিংবা মন্দিরের চতুর্দিকে প্রদক্ষিন করা, হিন্দু ধর্মে প্রচলিত আছে।
২. অনুরূপে কোন মাজার কিংবা অন্য কোন বিশেষ স্থানকে মধ্যখানে রেখে কাবা শরীফের মত চতুর্দিক প্রদক্ষিণ করা।

ইসলামের ঘোষণা হল, মহাবিশ্বে তাওয়াফের অনুমতি কেবল কাবা শরীফের ক্ষেত্রে আছে। মনে রাখতে হবে কাবা শরীফের তাওয়াফও মূলত সিম্বলিক বিষয়। পবিত্র কাবা কারো খোদা নয়, পবিত্র কাবা বস্তুত ইবাদতে মানুষের অভিন্ন কেন্দ্রিকতা সৃষ্টি ও মনোযোগের প্রতীক মাত্র। কাবা শরীফ ছাড়া সৃষ্টির অন্য কোন জিনিসকে তাওয়াফ করার অনুমতি শরীঅতে নেই। জীবিত কিংবা মৃত কোন মাখলূক কিংবা কোন ব্যক্তি কিংবা কোন নেতা কিংবা কোন স্থান বা জিনিসকে মধ্যখানে রেখে কাবা শরীফের বিকল্প জ্ঞান করে চতুর্দিক তাওয়াফ করা যায় না।

আট. গায়রুল্লাহর সামনে মাথা ঝুকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা। যেমন-
১. দেবতার সামনে মাথা ঝুকিয়ে দাড়িয়ে থাকা, মন্দির ও গীর্জায় এভাবে মুর্তি কিংবা পুরহিতকে পুজা করা হয়।
২. অনুরূপে কোন লেংটা বা পাগলা বাবার সামনে মস্তক ঝুকিয়ে রেখে দাঁড়িয়ে থাকা। পক্ষান্তরে ইসলামের আহবান হলো, মানুষের মস্তক একমাত্র আল্লাহর সমীপে তাঁর হুকুম মোতাবেক অবনমিত হবে; অন্য কারো সমীপে নয়।

নয়. গায়রুল্লাহকে অনুমতি প্রাপ্তি ছাড়া নিজস্ব শক্তিতে সুপারিশকারী জ্ঞান করা। যেমন-
১. কিয়ামতের দিন দেবদেবী সুপারিশ করবে বলে জ্ঞান করা; (মুশরিকীনে মক্কা)
২. পীর পয়গাম্বর নিজস্ব শক্তিতে সুপারিশ করে পার করে দিবেন বলে জ্ঞান করা।ইসলামের আহবান হলো, মহান আল্লাহকে বাইপাস করে অন্য কেউ তাঁর সমীপে সুপারিশ করার কোন সুযোগ নেই, ক্ষমতা নেই। হ্যাঁ, কিয়ামত দিবসে তাঁর পক্ষ থেকে অনুমতি পাপ্তির পরই কিনা কোন মাখলূক অন্যের জন্য সুপারিশ করবেন।

দশ. মহান আল্লাহকে মানুষের সদৃশ জ্ঞান করা। যেমন-
১. পানাহার করার ক্ষেত্রে, হিন্দু ধর্মে দেবতার জন্য ভোগ দিতে হয়।
২. সন্তান সন্ততি গ্রহণের ক্ষেত্রে, ইয়াহূদ নাসারা ও হিন্দু ধর্মে স্রষ্টার জন্য স্ত্রী সন্তান গ্রহণ স্বীকৃত।
৩. জন্ম মৃত্যুর ক্ষেত্রে, ইত্যাদি। পক্ষান্তরে ইসলামের আহবান হলো, মহান আল্লাহ হলেন ওয়াজিবুল অজূদ। তাঁর স্বত্তা কোন মাখলূকের মত নয়। মাখলূক হল মুমকিনুল অজূদ। মাখলূকের মধ্যে অবস্থিত যাবতীয় দুর্বলতা থেকে তিনি পবিত্র ও উর্ধে। তিনি চিরস্থায়ী ও চিরঞ্জীব। নিদ্রা ও তন্দ্রা তাঁকে আচ্ছন্ন করে না। জন্ম মৃত্যু, সন্তান গ্রহণ, পানাহার ইত্যকার জিনিস তাঁর স্বত্তার মধ্যে নেই। তিনি অনাদি ও অনন্ত।

এগার. মহান আল্লাহকে সৃষ্টির কোন নাপাক বিশেষণের সাথে সংযুক্ত জ্ঞান করা। যেমন-
১. যৌনতা, স্রষ্টার স্ত্রী হিসাবে শ্বরশ্বতীকে, কিংবা মরিয়মকে দেখানো হয়, মাআজাল্লাহ।
২. ঔরশজাত সন্তান হিসাবে হযরত ঈসা, হযরত উযায়রকে কিংবা মনুকে দেখানো হয়।
২. মিথ্যা বলা, মিথ্যার আশ্রয় নেয়ার কারনে জগতে তাকে পুজা করা হয় না বলে হিন্দুদের বিশ্বাস।
৩. পরাজিত হওয়া, তিনি দেবতাদের সাথে শক্তি পরীক্ষায় পরাজিত হয়েছেন বলেও হিন্দুরা বিশ্বাস করে, ইত্যাদি।

ইসলামের সাফ পয়গাম হলো, কোন কিছু সৃষ্টির জন্য স্রষ্টাকে যৌন সংযোগের সাহায্য নিতে হবে কেন? তাঁর হুকুমই তো যথেষ্ট। যৌন সাহায্য নিলে তিনি আর স্রষ্টা থাকেন না। থাকতে পারেন না। মহান স্রষ্টা সব কিছু সৃষ্টি করেছেন তার হুকুমের মাধ্যমে। তাঁর কুদরতের মাধ্যমে। উপরোক্ত মানবীয় দুর্বলতার সাথে মহান আল্লাহকে যুক্ত করা বস্তুত শিরক, নেহায়েত অজ্ঞতা, মুর্খতা ও মহা গুনাহের কাজ।

আমার প্রিয় দোস্ত আহবাব! বিশেষত আমার সেসব বন্ধুগণ যারা ‘খানকা শায়খ যাকারিয়্যা’র সাথে সম্পর্কিত আছেন, আপনাদের কাছে বিনীত অনুরোধ; প্রতিজ্ঞা করুন যে, আমরা সর্বদা সাবধান থাকবো, সর্বদা চেষ্টা করবো যেন কোন ধরনের শিরক আমাদের মধ্যে ঢুকে না যায়। হিম্মত রাখুন, সচেষ্ট থাকুন। দোয়া করি, মহান আল্লাহ আমাদের সকলকে সব ধরনের শিরক (জলি কিংবা খফি) থেকে হেফাযত ফরমান। আমীন, ছুম্মা আমীন।

লেখক : খতিব, তেজগাঁও রেলওয়ে জামে মসজিদ কমপ্লেক্স ঢাকা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়