আলী রীয়াজ : গত প্রায় একমাস ধরে আলজেরিয়ায় যে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলন হচ্ছে তা একটি বাঁকে এসে পৌঁছেছে, প্রেসিডেন্ট বুতাফলিকা একটি নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণা করেছেন, অনুমান করা যায় ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী বা রেজিম চাইছে এই মন্ত্রিসভা তত্ত্বাবধায়কের ভূমিকা পালন করুক, কেননা সম্ভবত বুতাফলিকা পদত্যাগ করবেন।
কুড়ি বছরের অগণতান্ত্রিক, একনায়কী শাসনের অবসান হবে, নাকি বুতাফলিকার বদলে আরেকজনকে ক্ষমতায় বসিয়ে আলজেরীয় জনগণকে ধোঁকা দিয়ে রেজিম তার ক্ষমতা অক্ষুণœ রাখতে সক্ষম হবে সেটাই দেখার বিষয়। ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর প্রধান আহমেদ সালাহ প্রেসিডেন্ট বুতাফলিকার পদত্যাগের দাবি জানানোর ফলে বোঝা যাচ্ছে যে, ক্ষমতাসীনদের একাংশ উপলব্ধি করেছেন যে পরিবর্তন ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু নতুন মন্ত্রিসভায় তার উপস্থিতি এক ধরনের আশঙ্কার জন্ম দেয়।
গত এক মাসের এই আন্দোলনে আলজেরিয়ার জনগণ ও সরকার বিরোধীরা যে কয়েকটি বিষয় স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন তা হচ্ছে সকল মত ও পথের ঐক্যের মাধ্যমেই তারা ক্ষমতাসীন রেজিমের ভিত টলিয়ে দিতে পেরেছেন। গণতন্ত্রের সংগ্রাম এবং নিরাপত্তা ও রুটি-রুজির সংগ্রামের মধ্যে চীনের প্রাচীর নেই বরঞ্চ এগুলো পরস্পর সংশ্লিষ্ট, বিদেশি সমর্থনের চেয়ে নিজেদের শক্তির ওপরে নির্ভর করা জরুরি।
তারা সকল ধরনের উসকানি ও প্ররোচনা সত্ত্বেও আন্দোলনকে সহিংস হতে দেননি। এ যাবৎ তাদের সাফল্য গণতন্ত্রায়নের পথে অগ্রসরের আশা তৈরি করে, কিন্তু সামনের দিনগুলো তাদের আরো কঠোর পরীক্ষার মুখোমুখি করবে। আলজেরিয়ার রক্তাক্ত ইতিহাসের কারণে যারা এতোদিন ‘নিরাপত্তা অথবা গণতন্ত্র’ এই কথাকে চালু রেখেছিলেন তাদের মত পর্যুদস্ত হয়েছে, এখন পর্যন্ত তাই সহজে দেখা যাচ্ছে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :