রমজান আলী : দিনে দিনে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে স্কুল ব্যাংকিং। আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কার্যক্রমের অন্যতম একটি পদক্ষেপ স্কুল ব্যাংকিং। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৮ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদের ব্যাংকিং সেবা ও আধুনিক ব্যাংকিং প্রযুক্তির সাথে পরিচিত করার পাশাপাশি সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে এ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় ২০১৮ সাল পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের হিসাব বা অ্যাকাউন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ১৮ হাজার ৪১৩টি। এতে জমার পরিমাণ ১ হাজার ৫১০ কোটি ৩২ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদেরকে দেশের আর্থিক সেবার আওতায় নিয়ে আসাই স্কুল ব্যাংকিংয়ের লক্ষ্য। আগের বছরের একই সময়ে একাউন্টের সংখ্যা ছিল ১৪ লাখ ৫৩ হাজার ৯৩৬টি এবং টাকার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৩৬২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম জনপ্রিয় করার জন্য নীতিমালার আলোকে ব্যাংকগুলো ন্যূনতম ১০০ টাকা জমা গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ব্যাংক হিসাব খুলছে। এছাড়াও ব্যাংক হিসাবে আকর্ষণীয় মুনাফা প্রদান, সার্ভিস চার্জ গ্রহণ না করা, এটিএম-ডেবিট কার্ড প্রদানসহ বিভিন্ন বিশেষ সুবিধা প্রদান এবং স্কুল কেন্দ্রিক আর্থিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করার মাধ্যমে বিভিন্ন স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রমের প্রসার ঘটছে।
৫৭টি তফসিলি ব্যাংকের মধ্যে মোট ৫৬টি ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আগের বছরের তুলনায় ২০১৮ সালে হিসাব খোলার হার বেড়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ। পাশাপাশি একাউন্টে জমার হার বেড়েছে প্রায় ১১ শতাংশ। তবে শহরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের চেয়ে গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা একটু পিছিয়ে।
মোট হিসাব সংখ্যার ৩৭ শতাংশ গ্রামের এবং ৬৩ শতাংশ শহরের শিক্ষার্থীদের দখলে। মোট অ্যাকাউন্টের বিপরীতে সঞ্চিত মূলধনের পরিমাণটাও শহরের শিক্ষার্থীদেরই বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী গ্রাম ও শহরের শিক্ষার্থীদের জমা করা মূলধনের অনুপাত ২৫ ও ৭৫ শতাংশ। বর্তমান মোট স্থিতির প্রায় ৮৪ শতাংশই বেসরকারি ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, একক ব্যাংক হিসেবে শিশুরা সবচেয়ে বেশি হিসাব খুলেছে বেসরকারি বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংকে। ব্যাংকটিতে হিসাবের সংখ্যা ৩ লাখ ২৩ হাজার ১৮৭টি। যা মোট হিসাবের ১৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ। তবে শিশুদের জমাকৃত টাকার দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড। আলোচ্য সময়ে ৪৫২ কোটি টাকা জমা পড়েছে ব্যাংকটির একাউন্টে। যা মোট জমার প্রায় ৩০ শতাংশ। জমাকৃত টাকার দিক থেকে এরপরে রয়েছে যথাক্রমে- ইসলামী ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ও রূপালী ব্যাংক লিমিটেড।
আপনার মতামত লিখুন :