ডা. জাকির হোসেন
পুরুষের র্বীযপাত এবং প্র¯্রাব নির্গমন একই পথে সংঘটিত হয়ে থাকে। তাই স্বাভাবিকভাবেই পুরুষের যখন বীর্যপাত ঘটে তখন সেটা মূত্রনালি দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে, কিন্তু এই প্রক্রিয়াটি যদি স্বাভাবিকভাবে না হয়ে উল্টোপথে বা পেছনের দিকে গিয়ে মূলথলিতে চলে যায় তাহলে তাকে রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশন বলে। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় পুরুষের বীর্যপাতের সময় মূত্রথলির স্ফিংটার বা ইন্টারন্যাল স্ফিংটার সংকুচিত হয়, যার ফলে সিমেন শুক্রাণু সহকারে মূত্রনালিতে ধাবিত হয় এবং এক্সটারনাল স্ফিংটার প্রসারিত হয়ে নারীর প্রজনন অঙ্গের মুখে পতিত হয়। রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশনের ক্ষেত্রে পুরুষের মূত্রথলির মুখের স্ফিংটার ঠিকমতো কাজ করে না।রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশনের অন্যতম কারণ হলো অটোনমিক ¯œায়ুতন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়া। তাছাড়া আরো কিছু কারণে রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশন হয়ে থাকে এর মধ্যে অন্যতম হলো পুরুষের প্রোস্টেট গ্রন্থির অপারেশন যাকে সংক্ষেপে টিইউআরপি বলে। তাছাড়া কিছু ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় এই ধরনের সমস্যা হযে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে টমসোলুসিন যা সাধারণত মূত্রথলির মুখ প্রসারণের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। টমসোলুসিন মূত্রপথের মাংসপেশিগুলোকে সংকোচন প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। আরো কিছু ঔষধ আছে যেমন অ্যান্টি ডিপ্রেস্ট্যান্ট ও অ্যান্টি সাইকোটিক গ্রুপের ঔষধ। এই ধরনের ঔষধগুলো এখন হরহামেশাই ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশেষ করে ঔষধের দোকানে একটু বয়স্ক কিংবা মধ্যবয়সী রোগীরা ঘুম না হওয়ার সমস্যা নিয়ে গেলেই দোকানি রোগীকে না জেনে না বুঝে এ ধরনের ঔষধ ধরিযে দেন। ঔষধ সেবন করার পর বিশেষ করে র্দীঘদিন ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীরা বেশি সমস্যায় পতিত হন। এসব ঔষধ সেবনের ফলে রোগীরা সাধারণত প্র¯্রাবের সঙ্গে র্বীয নির্গত হওয়ার সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। এ ধরনের রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির দাম্পত্য জীবনে সমস্যা দেখা দেয়। তারা সাধারণত বন্ধ্যা হয়ে যায়। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির প্র¯্রাব পরীক্ষা করলেই বোঝা যায় রোগীর এই সমস্যা আছে কিনা। প্র¯্রাবে সাধারণ শুক্রাণু পাওয়া যায় এবং সিমেনের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এ ধরনের সমস্যা থেকে বাঁচতে হলে ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করে জীবন পরিচালনা করতে হবে। বিশেষ করে যেসব পুরুষরা অল্প বয়সে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাদের সবসময় চিকিৎসকের পর্রামশ মোতাবেক জীবন ধারণ করা বাঞ্ছনীয়। বয়স্ক রোগীরা প্রোস্টেট গ্রন্থির রোগ যেমন বিনাইন ইনলারজমেন্ট অব প্রোস্টেট এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর পরবর্তী চিকিৎসার জন্য অবশ্যই ধাপে ধাপে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে। লেখক : চিকিৎসক ও কলামিস্ট
আপনার মতামত লিখুন :