শিরোনাম
◈ বিমান বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের  উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ◈ নির্বাচনী মাঠ প্রস্তুত হচ্ছে, আস্থা রাখতে চায় দলগুলো ◈ বর্ডার-গাভাস্কার সিরিজ, ভারতের চাপে অস্ট্রেলিয়া ◈ কপ২৯: ২০০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দে ইইউর সমর্থন চাইল বাংলাদেশ ◈ মামলা করলে ৫ লাখ টাকা এবং প্রতি মাসে ২০ হাজার করে পাওয়া যাবে ◈ কলকাতার মেট্রোরেলে নারী যাত্রীকে বাংলা বাদ দিয়ে হিন্দিতে কথা বলা নিয়ে বাকবিতণ্ডা (ভিডিও) ◈ বাংলাদেশসহ ১২৪ দেশে পা রাখলেই গ্রেফতার হবেন নেতানিয়াহু, দেশগুলো হল.. ◈ ‘বুক কাঁপে না  মিথ্যাচার করতে?’ ট্রলের জবাবে  উপস্থাপিকা দীপ্তি ◈ এবার পশ্চিমাদের ওপর হামলার ইঙ্গিত পুতিনের ◈ পাঁচটি দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা

প্রকাশিত : ২৮ মার্চ, ২০১৯, ০৪:২৬ সকাল
আপডেট : ২৮ মার্চ, ২০১৯, ০৪:২৬ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আঙ্গুর একটা উসিলা

ইকবাল আনোয়ার : ছোট জামাই এসেছেন, আধা পোয়া আঙ্গুর নিয়ে, মৃত্যুসজ্জায়, নব্বই বছরের শশুরকে দেখতে। মাটির ঘর। ছাদ দরজা টিনের। দরজার খিলান খটখটে কাঠের। আঙ্গুর। অমূল্য ফল। শক্তিবর্ধক। রোগীর প্রধান পথ্য। রোগীকে খাওয়ালে তার তাগৎ বেড়ে যায়, অল্প রোগ হলে আঙ্গুরেই সেরে যায়। ভাগ্যবানরা কখনো এক দুটা খাওয়ার সৌভাগ্য পায়। আকারে গোল, বড়ো পাথরের তসবীর গোটার মতো। কিছুটা পচনে খয়ারী, কুচকানো। গন্ধে মাছি বসে। তবু আঙ্গুর বলে কথা। এ বাড়ি আজ ধন্য। সেই সম্পদ, আধাপোয়া! অনেক অনেক। পানিতে ধুয়ে নিয়ে রোগীকে দিতে হবে। সৌভাগ্যবান রোগী। দু’একটা শিশুদের দাও। ওরা আমাদের আদরের ধন, খেয়ে দেখুক। একদানা খেয়ে শিশুর জীবন ধন্য হোক। এতোদিন শুনেছে কেবল। আজ দেখেছে প্রথম এবং খেয়েছে। কি যে মিষ্টি। এ হলো বেহেশতের ফল।

বর্তনে নিয়ে পানি থেকে ধুয়ে রোগীর মুখে দেয়া হবে যখন, তিনি তখন দাঁতে দাঁত আটক হয়ে পড়েছেন এবং কিছুটা অচেতন। সব কিছু ঘোলা তার, দৃশ্য এবং চিন্তা, সবই আবছা কুয়াশা মোড়া। দাঁতের কপাট আঙ্গুলে খোলে মেয়ে তার বাবা বলে ডাকে। বাবা শুনে কি শুনে না! বাবা, আঙ্কুর। তুমি না আঙ্কুর খাইতে চাইছিলা। খাও, ছুইট্টা দুলাবাই আনছে। ওওম। একটা ইষৎ গমগমে আওয়াজ বের হয় বৃদ্ধের মুখ থেকে। আঙ্গুর চাবানোর শক্তি নেই তার। সুতরাং আঙ্গুলে চিপে তার মুখে রস দেয়া হয়। সে রস গাল বেয়ে গড়িয়ে পরে। ছোট খয়ারী মাছি গালে বসে যায়, কোথা থেকে চট করে এসে, মেয়েটি মাছি তাড়ায়। তারপর ঘাড় তার হঠাৎ কাত হয়ে গেলে, কান্নার রোল পড়ে যায় ঘরে। এ ঘর ও ঘর থেকে সবাই এসে মৃত্যু- যাত্রীর চারপাশে ভিড় করে। চলে হাউ-মাউ। কে একজন কলেমা পড়ে, স্মরণ করিয়ে দেয়। অন্যরা যার যার নাম করে তার মুখে এক একটা আঙ্গুরের রস চিপে দেয়। শেষ আপ্যায়ন। তার পর নিথর হতে আর সময় লাগে না।

অতঃপর দুঃখ করে পাড়াজন যার যার ঘরে আপাতত চলে যায়। আবার আসবে জরুরি কাজ সেরে। তখন মৃত্য ও মৃতজন নিয়ে কথা হবে বিনয়-স্মৃতি তর্পনে। তবে এখন পরম তৃপ্তিতে, এ কথা বলে বলে তারা যাচ্ছে যে, যাক, যাবার কালে আওস মিটাইয়া তাইনে আঙ্কুর খাইছেন। বড়ো ভাগ্যবান। জামাই আনছিলো বলে এনা খাইছেন। আঙ্কুর বড়ো শক্তিশালী। আঙ্কুর বড়ো মিডা, আঙ্কুর হইলো ফল ফ্রুটের রাজা, আঙ্কুর খায় ভাগ্যবানে, আঙ্কুর কি যা তা কথা! তাজিমের সাথে নাম নেবার সময় আঙ্গুরের সাথে ফল লাগায়ে বলতে হয়।

ডাক্তারি মতামত : আঙ্গুর ফল বটে তবে উচ্চ ফল নয়। যত দামে তারে কেনা হয়, তার চেয়ে পুষ্টিমান তার অনেক কম। আঙ্গুর চিনির বিকল্পের মতো, সাথে সামান্য কিছু মিনারেল আছে। এ গুণ প্রায় সব ফলেই আছে। দেশীয় ফলে অনেক বেশী। বিদেশে যেখানে আঙ্গুর বেশী ফলে সেখানে মানুষের চেয়ে ঘোড়ায় তা বেশী খায়। চিনি বলে তার থেকে ভালো মদ হতে পারে। মানুষটি রস গলায় আটকে শ্বাস রোধের কারণে হয়তো মরেছে। প্রায় অজ্ঞান বলে তার গিলার ক্ষমতা ছিলোনা, তাই রস সব শ্বাস নালীতে গেছে। শেষ কথা: আঙ্গুর খেতে চেয়েছিলেন তিনি। সে সাধ পুরণ হয়েছে। ‘হয়াত-মৌত’ আল্লাহর হাতে। আঙ্গুর একটা উসিলা মাত্র। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়