সৌরভ নূর : একাত্তর সালের ২৫ মার্চ রাতের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া না পাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির ব্যাপারটা হলো অনেকটা গাছের গোড়া কেটে মাথায় পানি দেয়ার মতো। যা প্রতিষ্ঠা দরকার তা না করে আমরা উল্টোটা করছি। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি দেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পরিচালিত হবে, কিন্তু দেশে কী এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলে কিছু আছে কী? যারা গণহত্যা চালিয়েছিলো সেই পাকিস্তানিদের মতো আচারণ করছে সরকার। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে সরে এসে মুক্তবাজার অর্থনীতি অনুসরণ করছে।
আমার মনে হয়, গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের চেয়ে গণহত্যার ইতিহাস মানুষের কাছে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা জরুরি। সাধারণ মানুষ যে বিশ্বাস নিয়ে, একটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য সামনে রেখে নির্ভিকভাবে যুদ্ধে করেছিলো, যে চেতনা বুকে ধারণ করেছিলো, যে চেতনায় দেশকে পরিচালিত হতে দেখতে চেয়েছিলো তাদের আকাক্সিক্ষত পথে দেশকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার দিকে আমাদের মনোযোগ দেয়া উচিত। এজন্য সমাজতান্ত্রিক সমাজ কাঠামো তৈরি করা দরকার।
তিনি আরও বলেন, আমি বুঝি না গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির বিষয়ে আলোচনার কী আছে। বরং আমাদের আলোচনা করা উচিত দেশের বিভিন্ন সমস্যা-সম্ভাবনা নিয়ে ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে। কোথায় কী সমস্যা, কীভাবে এর সমাধান করা যায় সেসব বিষয়ে। দেশে হাজার হাজার গার্মেন্টস কর্মী ন্যায্য মজুরির জন্য আন্দোলন করছে প্রতিনিয়তই, সেখানে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির আলোচনা কতোটুকু গুরুত্ব বহন করে? তবে হ্যাঁ কোনোটাকেই আমরা ফেলে দিতে পারি না। দুটোরই সমান প্রয়োজন রয়েছে।
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, কৃষক উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না, শ্রমিক ন্যায্য মজুরি পাচ্ছেন না। দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়েই চলেছে। মানুষ মৌলিক চাহিদাগুলো মেটাতে গিয়ে হাঁসফাঁস করছে। অনেক কষ্ট তাদের পোহাতে হচ্ছে। মানুষের সমস্যাগুলো সমাধানে আমাদের কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমার তো মনে হয় একমাত্র পাকিস্তান ছাড়া আর কোনো দেশই অস্বীকার করে না ২৫ মার্চের গণত্যার বিষয়টি। ২৫ মার্চ রাতের গণহত্যার ঘটনা বিশ^বাসী জানে, এখন আমাদের প্রচেষ্টা বাড়ানো উচিত যেন সে রাতের ভয়াবহতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারে বিশ্ব।
আপনার মতামত লিখুন :