ডেস্ক রিপোর্ট : সন্ত্রাসবিরোধী আইনে প্রায় এক দশক আগে দায়ের হওয়া একটি মামলায় বেকসুর খালাস পেয়েছেন নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহ্রীরের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক মহিউদ্দিন আহমেদ ওরফে রয়েলসহ চারজন। এ মামলায় ছয় আসামির মধ্যে পলাতক দুজনকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সাত দফা পেছানোর পর গতকাল রবিবার সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনাল রায়ে বলেছেন, খালাসপ্রাপ্ত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হয়নি।
মহিউদ্দিন ছাড়া অন্য তিন খালাসপ্রাপ্ত হলেন হিযবুত তাহ্রীরের যুগ্ম সমন্বয়ক কাজী মোরশেদুল হক প্লাবন, সদস্য তানভীর আহম্মেদ ও আবু ইউসুফ আলী। খালাসপ্রাপ্ত চার আসামিই গতকাল ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর তাঁরা আদালত ত্যাগ করেন।
হিযবুত সদস্য সাইদুর রহমান ওরফে রাজীব ও তৌহিদুল আলম চঞ্চলকে দুই বছর করে কারাদণ্ডের পাশাপাশি পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। তাঁরা জরিমানার টাকা দিতে ব্যর্থ হলে আরো তিন মাস কারাভোগ করতে হবে বলে রায়ে বলা হয়। এ দুই আসামি জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছেন। তাঁদের গ্রেপ্তার বা আত্মসমর্পণের পর রায় কার্যকর হবে।
চার আসামিকে খালাস দেওয়ার পেছনে যুক্তি তুলে ধরে ট্রাইব্যুনাল রায়ে উল্লেখ করেন, চারজনের বিরুদ্ধে এজাহারে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। তা ছাড়া তাঁদের কী কারণে চার্জশিটভুক্ত করা হয়েছে, তাও অস্পস্ট।
তবে মামলার এজাহারে মহিউদ্দিন এজাহারভুক্ত ১ নম্বর আসামি। চার্জশিটেও উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিরা সরকারবিরোধী লিফলেট বিলিয়ে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত রয়েছেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১০ সালের ১৮ এপ্রিল উত্তরা থানার ৩ নম্বর সেক্টরে তাকওয়া মসজিদের পশ্চিম পাশে হিযবুত তাহ্রীরের সদস্যরা সরকারবিরোধী লিফলেট ও পোস্টার বিলি এবং জনজীবনে আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য পেট্রলবোমা নিয়ে আসেন। এ খবর পেয়ে উত্তরা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করে। সাইদুর রহমানের কাছ থেকে ৭০টি লিফলেট ও তৌহিদুলের কাছ থেকে দুটি বোতলে পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়। এরপর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়।
২০১৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ডিবি পুলিশ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলায় সাতজন সাক্ষ্য দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী রায়ের পর তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন দুজন। তাঁদের একজন সাক্ষ্য দিলেও অন্যজন দেননি। এ কারণে হয়তো হিযবুত তাহ্রীরের প্রধান সমন্বয়ক খালাস পেয়ে গেছেন। আমরা পূর্ণাঙ্গ রায় হাতে পাওয়ার পর আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’
সূত্র : কালের কন্ঠ
আপনার মতামত লিখুন :