নিউজ ডেস্ক: প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী শাহনাজ রহমতুল্লাহ আর নেই। কিংবদন্তী এ শিল্পী শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। চ্যালেন আই
বাংলাদেশের গানের জগতে অত্যন্ত পরিচিত একটি নাম শাহনাজ রহমতউল্লাহ। ১৯৫২ সালের ২ জানুয়ারি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। মায়ের অনুপ্রেরণায় তিন ভাই বোন গান শিখেছিলেন। তাঁর বড় ভাই আনোয়ার পারভেজ ছিলেন সুরকার, আরেক ভাই চিত্রনায়ক জাফর ইকবালও করতেন গান। তিনজনই স্ব স্ব ক্ষেত্রে খ্যাতি ছড়িয়ে গেছেন। আনোয়ার পারভেজ চলে গিয়েছেন ২০০৬ সালে। নায়ক জাফর ইকবালের অকাল মৃত্যু হয়েছে তারও আগে ১৯৯২ সালে। দুই ভাইয়ের মধ্যমণি বোনটিও বিদায় নিলেন।
১৯৬৩ সালে ১১ বছর বয়সে ‘নতুন সুর’ নামক চলচ্চিত্রে কণ্ঠ দেওয়ার মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু হয়। ১৯৬৪ সালে প্রথম টেলিভিশনে তার গাওয়া গান প্রচারিত হয়। তিনি গাজী মাজহারুল আনোয়ার, আলাউদ্দিন আলী, খান আতা প্রমুখের সুরে গান গেয়েছেন। পাকিস্তানে থাকার সুবাদে করাচী টিভিসহ উর্দু ছবিতেও গান করেছেন। এক নদী রক্ত পেরিয়ে, একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়ে, একতারা তুই দেশের কথা বলরে এবার বল্, প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ-এর মতো বেশকিছু দেশাত্মবোধক গান গেয়েছেন। বিবিসির জরিপে সর্বকালের সেরা ২০টি বাংলা গানের তালিকায় শাহনাজ রহমত উল্লাহ’র গাওয়া চারটি গান স্থান পায় গান গেয়ে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়ী এই সংগীতশিল্পীকে ১৯৯২ সালে একুশে পদক দেয়া হয়। ২০১৬ সালে ‘চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ড’-এর আয়োজনে আজীবন সম্মাননা জানানো হয় গুণী এই শিল্পীকে।
শাহনাজ রহমতুল্লাহর বড় ভাই আনোয়ার পারভেজ বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় একজন সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক, সঙ্গীতজ্ঞ ও শব্দসৈনিক। বিবিসির জরিপে যে ২০টি বাংলা গান সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বলে স্বীকৃতি পেয়েছে তার সুরকৃত তিনটি গান “জয় বাংলা বাংলার জয়”, “একবার যেতে দে না” এবং “একতারা তুই দেশের কথা”। তার সুরারোপিত ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গানটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত বিভিন্ন দেশাত্মবোধক গানের মধ্যে অনেক জনপ্রিয় ছিল৷ সঙ্গীতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ২০০৭ সালে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করে।
জাফর ইকবাল ছিলেন বাংলাদেশী অভিনেতা ও সংগীতশিল্পী। তিনি চিরসবুজ নায়ক হিসেবে পরিচিত। তিনি আশির দশকের বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। শহুরে রোমান্টিক ও রাগী তরুণের ভূমিকায় দারুণ মানালেও সব ধরনের চরিত্রে ছিল তার স্বাচ্ছদ্য বিচরণ। অভিনয়ের পাশাপাশি চমৎকার গান গাইতে পারা এ অভিনেতা বেশকিছু ছবিতে গায়ক চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।
আপনার মতামত লিখুন :