আল-আমিন মাসুদ: (২) বিশ্ব পুতুল নাট্য দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীতে চলছে সপ্তাহব্যাপী পুতুল নাচ উৎসব। বাংলার হাজার বছরের নাট্যচর্চার ধারায় ‘পুতুল নাট্য’ আদি ও ঐতিহ্যের সাক্ষ্য বহন করে। বাংলাদেশের গ্রামে-গঞ্জে এক সময় পুতুল নাচের ব্যাপক জনপ্রিয়তা থাকলেও নগরায়ন ও প্রযুক্তির আধুনিকায়নের ফলে সেই জনপ্রিয়তা এখন অনেকটাই হারিয়ে গেছে। বিবিসি।
এ বিষয়ে বিশিষ্ট শিল্পী মুস্তফা মনোয়ার বলেন, পুতুল নাচ এক সময়ে সামাজিক বন্ধু ছিল। এর মাধ্যমে নীতি কথা, ধর্মের অ্যাখান বলা হতো। সমাজের যে প্রাত্যাহিক আনন্দ-দুঃখ, হাসি-তামাশা পুতুল নাচের মাধ্যমে প্রকাশ পেত। তার বিনিময়ে সংশ্লিষ্টদের চাল-ডাল ইত্যাদি দেয়া হতো।
তিনি বলেন, পুতুল নাচের ইতিহাস বহু দিনের। চার থেকে পাঁচ হাজার বছর আগেও ভারত উপমহাদেশে এর প্রচলন ছিল। আধুনিক প্রযুক্তির কারনে মনে হচ্ছে যে এর প্রচলন চলে গেছে। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে এর প্রচলন চলে যাওয়ার কারণ হলো পাকিস্তান আমলে হঠাৎ করেই বলা হলো এগুলো বিধর্মী। গ্রামে-গঞ্জে বিভিন্ন জায়গায় এগুলোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি হলো। সে সময়ে অনেক পুতুল নাচের শিল্পী ভারতে চলে যায় এবং অল্প কিছু এদেশে থেকে যায়। এত দিন তারাই এই শিল্পকে বাংলাদেশে বাঁচিয়ে রেখেছিল।
তিনি আরো বলেন, টেলিভিশন আসার ফলে যে পুতুল নাচ হারিয়ে যাচ্ছে ঠিক সেটাও বলা যাবে না। কারণ রাশিয়াসহ অন্যান্য দেশের টেলিভিশনে পুতুল নাচ দেখানো শুরু করার পর পুতুল নাচ শিল্পীদের আয় বহুগুনে বৃদ্ধি পেয়েছে।
উল্লেখ্য, পুতুল নাচের ঐতিহ্য ধরে রাখতে ২০১৩ থেকে প্রতি বছর ২১ মার্চ বিশ্ব পুতুলনাট্য দিবস উদযাপন এবং প্রতি বছর একজন শিল্পীকে সম্মাননা প্রদান করছে শিল্পকলা একাডেমি।
আপনার মতামত লিখুন :