অলক কুমার দাস, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইল শহরের বিশ্বাস বেতকায় অবস্থিত সৃষ্টি রেসিডেনসিয়াল স্কুলের ১১ জন ছাত্রকে মেঝেতে ফেলে হাত-পা বেঁধে ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত এক ছাত্রকে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সিগারেট খাওয়ার পর একটি সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর ও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের গ্যাস ছেড়ে দেওয়ার অপরাধে স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক তাদের মারধর করে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত ছাত্ররা পরদিন আবাসিক ভবনে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, শুক্রবার রাতে সৃষ্টি রেসিডেনসিয়াল স্কুলের নবম শ্রেণির কয়েকজন ছাত্র ধুমপান করে। এ খবর জানতে পেরে আবাসিক শিক্ষক তাদের ডেকে শাসিয়ে দেন এবং বিষয়টি অভিভাবকদের জানান। শাসানোর পরও বিষয়টি অভিভাবকদের জানানোয় ছাত্ররা ক্ষিপ্ত হয়ে ভবনের ভেতরে একটি সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে। তা ছাড়া বারান্দায় অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের গ্যাস ছেড়ে দেয়। এ ঘটনায় ১১ জন ছাত্রকে ডেকে নিয়ে হাত-পা বেঁধে মেঝেতে ফেলে স্টাম্প দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়।
পরদিন শনিবার সকালে অভিভাবকদের খবর দিলে তাঁরা ঐ ছাত্রদের নিয়ে যান। এরপর শনিবার রাতে আবাসিকের অন্যান্য ছাত্ররা ভবনে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
রোববার কর্তৃপক্ষ স্কুল বন্ধ ঘোষণা করলে আবাসিক ছাত্ররা ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যায়। সোমবার আহত ছাত্রদের অভিভাবকদের নিয়ে সমঝোতা বৈঠকের আয়োজন করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সব অভিভাবক না আসায় বুধবার সেই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে আবাসিকের এক ছাত্রের বাবা মির্জাপুর প্রেসক্লাবে এসে জানান, ছেলেদের এখানে লেখাপড়া করতে পাঠিয়েছি। কেন তাদের ওপর অমানুষিক শারীরিক নির্যাতন করা হলো? আমরা এর বিচার চাই।’ থানায় গিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি বলে তিনি অভিযোগ করেন।
অভিভাবকদের অভিযোগ, শনিবার সকালে আহত ছাত্রদের নিয়ে যাওয়ার পর কিভাবে ভবনে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে! তা ছাড়া ভাঙচুরের সময় স্কুল কর্তৃপক্ষসহ পুলিশও উপস্থিত ছিল। মারধরের ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য অন্য ছাত্রদের দিয়ে ভাঙচুরের ‘নাটক’ সাজানো হয়ে থাকতে পারে বলে তাঁদের ধারণা।
এ বিষয়ে সৃষ্টি শিক্ষা পরিবারের চেয়ারম্যান ড. শরিফুল ইসলাম রিপনের সাথে যোগাযোগ করলে মন খারাপ বলে এরিয়ে যান। অপরদিকে সৃষ্টি রেসিডেনসিয়াল স্কুলের নির্বাহী প্রধান লিয়াকত আলী লিটনের মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করেও তার সাথে কথা বলা যায়নি।
টাঙ্গাইল মডেল থানার ওসি মো. সায়েদুর রহমান বলেন, স্কুলের ছাত্ররা ভবনে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আর অভিভাবকরা থানায় অভিযোগ দিতে এলে তাঁদের কথা শোনা হয়নি এ অভিযোগ সত্য নয়। কেউ অভিযোগ দিতে এলে অবশ্যই তা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :