শিরোনাম
◈ দেশবাসীর প্রতি মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারির আহ্বান ◈ অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য ও ব্যর্থতায় তিন মাস ◈ বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলে নানা মন্তব্য ◈ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কোনোভাবেই ব্যর্থ হতে দেয়া যাবে না : তারেক রহমান ◈ ‘আসিফ নজরুলের সঙ্গে আ. লীগ নেতাকর্মীদের আচরণ দেশের আত্মমর্যাদার ওপর আঘাত’ : তারেক রহমানের বিবৃতি ◈ কী হয়েছিল জেনেভা বিমানবন্দরে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সঙ্গে? ভিডিও ◈ হিলি স্থলবন্দরে একদিনেই এলো ১৮০০ মেট্রিক টন আলু, কিছুটা কমেছে দাম ◈ এমবাপ্পেকে ছাড়াই নেশন্স লিগের জন্য দল ঘোষণা করলো ফ্রান্স ◈ তৃণমূল থেকে ক্রিকেটার বের করার লক্ষ্যে জিয়া টুর্নামেন্ট সোমবার শুরু ◈ ইংলিশ ক্রিকেটার অ্যান্ডারসক কেন ৪২ বছর বয়সে আইপিএলে নাম দিলেন?

প্রকাশিত : ১৪ মার্চ, ২০১৯, ০৩:৪৭ রাত
আপডেট : ১৪ মার্চ, ২০১৯, ০৩:৪৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ও অবলোপনকৃত ঋণ ১ লাখ ৩৪ হাজার ১৩ কোটি টাকা

আবু বকর : ব্যাংকিং খাতে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট বিতরণকৃত ৯ লাখ ১১ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি ও অবলোপন করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার ১৩ কোটি টাকা। আগের বছর ২০১৭ সালের একই সময়ে খেলাপি ও অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ ছিলো ১ লাখ ১৩ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১ বছরে খেলাপি ও অবলোপনকৃত ঋণ বেড়েছে ২০ হাজার ৮২০ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডিসেম্বর শেষে ৫৭টি ব্যাংকের মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ১১ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণ ও অবলোপন (রাইট অফ) করা ঋণ যোগ করে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার ১৩ কোটি টাকা। ২০১৭ সালে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিলো ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৯ হাজার ৬০৮ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিলো ৬২ হাজার ১৭২ কোটি টাকা, ২০১৫ সালে এ পরিমাণ ছিলো ৫৯ হাজার ৪১০ কোটি টাকা, ২০১৪ সালে ছিলো ৫০ হাজার ১৬০ কোটি টাকা এবং ২০১৩ সালে খেলাপি ঋণ ছিলো ৪০ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা। এ হিসাবে গত বছরেই সবচেয়ে খেলাপি ঋণ বেড়েছে।

প্রান্তিকের হিসাব দেখলে সাধারণত, ডিসেম্বর প্রান্তিকে আগের প্রান্তিকের চেয়ে খেলাপি ঋণ কমে যায়। গত বছরেও একই ঘটনা ঘটেছে। তবে এবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলো জাতীয় নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচনের আগে খেলাপিদের থেকে বড় একটা অংশের ঋণ আদায় হয়। অবশ্য গত নির্বাচনের আগে একশ্রেণির ঋণ খেলাপির ব্যাপক হারে ঋণ নবায়ন করা হয়েছে। ফলে ডিসেম্বর প্রান্তিকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের চেয়ে খেলাপি ঋণ কিছুটা কমেছে। সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে খেলাপি ঋণ হয়েছিলো ৯৯ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। যা ছিলো মোট বিতরণ হওয়া ঋণের ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। ওই সময়ে ব্যাংকগুলো ৮ লাখ ৬৮ হাজার সাত কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছিলো। আর অবলোপনকৃত (রাইট অফ) ঋণ খেলাপির পরিমাণ ছিলো ৫২ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকা। খেলাপি ও অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ ছিলো ১ লাখ ৫২ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা।

ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজনৈতিক প্রভাব, ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের চাপ, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পেশাদারিত্বের অভাবে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। এক্ষেত্রে সুদের হারও খেলাপি ঋণ বাড়ানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। স¤প্রতি ব্যাংক খাতে সুদের হার কমেছে বলে ব্যাংকারদের পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও বাস্তবে তা খুব একটা কমেনি। যতটুকু কমেছে ব্যাংকের উদ্যোক্তারাই তার সুফল নিচ্ছে।

ব্যাংকের উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের মধ্যে যাদের ঋণ অন্য ব্যাংকে আছে তাদের সবার ঋণে সুদহার কমলেও সাধারণ গ্রাহকদের ঋণে সুদহার কমেনি। এসব কারণে লাগামহীন ভাবে বেড়ে চলছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ। সময় যত যাচ্ছে খেলাপি ঋণের নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব বলছে, মোট খেলাপি ঋণের অর্ধেকই রাষ্ট্রায়ত্ত ৬ বাণিজ্যিক ব্যাংকের। ডিসেম্বর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকা। এ সময় রাষ্ট্রীয় মালিকানার ব্যাংকগুলোর মোট বিতরণ করা ঋণ ১ লাখ ৬২ হাজার ৫২০ কোটি টাকা। বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের ২০১৮ শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৭৮৭ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ১৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এই সময় তাদের মোট ঋণ দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৬০২ কোটি টাকা।

অন্যদিকে, খেলাপি ঋণ বেড়েছে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতেও। ডিসেম্বর শেষে ৪০টি বেসরকারি ব্যাংকের মোট ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৮৮ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ৩৮ হাজার ১৪০ কোটি টাকা। অবশ্য আগের প্রান্তিক থেকে এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণ সামান্য কমেছে।

আর দেশে পরিচালিত ৯টি বিদেশি মালিকানার ব্যাংকে ২০১৮ শেষে মোট ৩৫ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা বিতরণ করে। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা। যা বিতরণ হওয়া ঋণের ৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়