রাশিদ রিয়াজ : অন্দরসজ্জা থেকে পোশাক, বাথ থেকে বিউটির সব পণ্যের ক্ষেত্রেই সাফল্যের ছাপ রাখছেন নারীরা। এমন কয়েকজন নারী যারা বিনিয়োগের কঠিন রাস্তা বেছে নিয়েই ব্যবসা ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন। এধরনের সফল উদ্যোক্তাদের মধ্যে তারা নারী কি পুরুষ এমন যদি তুলনা করা হয়, তবে নারীদের এগিয়ে থাকা একাধিক বিষয়ের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মাল্টিটাস্কিং। বাড়িতে একসঙ্গে ডজন বিষয়ে নজর রাখা থেকে বাড়ি বাইরেও বিবিধ ভাবে সফল চাট্টিখানি কথা নয়। পরিচিত ছক ভেঙে, সীমা অতিক্রম করে এভাবেই এগিয়ে চলেছে বিশ্বের নারী-শক্তি। বিনিয়োগকারী হিসেবে, শিল্পোদ্যোগী হিসেবে অধুনা প্রতিবেশি দেশ ভারতে সম্মান পাচ্ছেন নারীরা। তাদের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এবং লক্ষাধিক আরও নারীশক্তির যোগান দিচ্ছে তাদের সাফল্যের কাহিনি। ব্যবসায় নারী-সংখ্যা বৃদ্ধির সময়ই, তাদের নিজস্ব পণ্যের ব্র্যান্ডিং ও বিক্রির সুযোগ করে দিচ্ছে কিউ ট্রভ ডটকম।
এদের একজন সঙ্গীতা দেসাই, (র্যনেচার)। ফ্যাশন ডিজাইনার, নারী া ব্যবসায়ী, শিল্পোদ্যোগী। বিগত ২৫ বছর ধরে প্রত্যেক ক্ষেত্রেই সফল হয়েছেন সঙ্গীতা। তিনি র্যনেচার সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা। প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহারে সুপারফুড ও বিউটি প্রোডাক্ট উৎপাদন করে তার সংস্থা। এই প্রোডাক্টগুলি রং এবং রাসায়নিক-মুক্ত হয়। ২০১৭ সালে ‘অ্যাসথেটিকস’ নয়া পড়াশোনা শেষ করে র্যনেচার-এর সূচনা করেন সঙ্গীতা। তার উদ্যোগের কারণেই রূপচর্চায় নিরাপদ উপকরণ বেছে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন ক্রেতারা। গ্রুমিং প্রোডাক্টে ক্ষতিকারক রাসায়নিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়ে নজির গড়েছেন বিরল প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জন্মানো সঙ্গীতা। জন্ম থেকেই এক হাতের একটি আঙুল ছিল না তার। তবে সেই বাধাকে পিছনে ফেলে জীবন যুদ্ধে সফল হয়েছেন সঙ্গীতা দেসাই।
তাদের আরেকজন শীতল কাবরা, (আর্থি সাপো)। ৯ বছর কর্পোরেট দুনিয়ায় দাপিয়ে কাজ করার পর ব্রেক নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন শীতল কাবরা। এই ব্রেকের সময়ই নিজের হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসা খুঁজে পান তিনি। একইসময়ে প্রাকৃতিক প্রোডাক্টের গুরুত্ব ও প্রয়োজন সম্পর্কে ধারণা হয় তার। বিশেষত পার্সোনাল কেয়ার বা ব্যক্তিগত রূপচর্চার ক্ষেত্রে। শিশুদের জন্য সাবান বা বেবিসোপ ব্যবহারের সময় নিজের সন্তানের সমস্যা বুঝে নিজেই সাবান তৈরি করেন শীতল। তার বানানো সাবান ও বাজারের বেবিসোপ-এর মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পেরেই এই ব্যবসাতেই পা রাখেন শীতল। প্রথমে পরিবার ও বন্ধুদের মধ্যেই সেই সাবান বিক্রি শুরু করেন তিনি। এবং এভাবেই আর্থি সোপ-এর জন্ম হয়। আজ প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি সাবান, তেল, শ্যাম্পু, কন্ডিশনার ইত্যাদি প্রোডাক্ট বিক্রি করে তারা।
কাঞ্চন রাকেশ, (দাদিস হ্যান্ডমেড পিকল)। ভারতীয় রান্নাঘরে আচারের আলাদা গুরুত্ব থাকে। যে কোনও খাবারের শেষে আচার আলাদা স্বাদ যোগ করে। প্রায় প্রতি পরিবারেরই নিজস্ব আচারের তৈরির সিক্রেট থাকে। যা চলে আসছে প্রজন্ম ধরে। পরিবারের এই সিক্রেটকেই বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছেন কাঞ্চন রাকেশ। তৈরি করেছেন, ‘দাদিস হ্যান্ডমেড পিকল।’ আম থেকে লঙ্কা, আচার-প্রেম জিইয়ে রেখেছেন কাঞ্চন।
সোমিয়া খান্না, (দ্য সোপ কোম্পানি ইন্ডিয়া)। আলওয়ার থেকে বেঙ্গালুর- জীবনে এভাবেই পরিবর্তন এনেছেন সোমিয়া খান্না। স্বামী পবন আহুজাকে নিয়ে দ্য সোপ কোম্পানি ইন্ডিয়া চালু করেন সোমিয়া। রাজস্থানের গ্রামের নারীদের ট্রেনিং দিয়ে স্নেহ-সমৃদ্ধ বিশেষ সাবান তৈরির কাজে নিযুক্ত করেছেন তিনি। ব্র্যান্ডের বৃদ্ধি যাতে গ্রামের নারীরাও পান, তা নিশ্চিত করেছেন সোমিয়া।
কিউ ট্রভ.কম যে আদর্শে বিশ্বাস করে, তার প্রতিফলন যে হাজার হাজার নারীর জীবনে রয়েছে, তাদের মধ্যে এরা হচ্ছেন কয়েকজন। প্রাকৃতিক পণ্যের বৃদ্ধি এবং মানুষের কাছে এই ধরনের পণ্য ব্যবহারের সুযোগ তুলে ধরেই নিজেদের সাফল্যের কাহিনি লিখেছেন এই নারী ব্যবসায়ীরা।
আপনার মতামত লিখুন :