হ্যাপি আক্তার : দেশে বর্তমানে ৯০ ভাগ রোগিই ডায়ালাইসিস সেবা নিতে পারেন না। ন্যাশনাল কিডনি ইনস্টিটিউটে মাত্র ৪০০ টাকায় মেলে ডায়ালাইসিস সুবিধা পাওয়া গেলেও, স্বাভাবিক নিয়মে পেতে সময় লাগে ছয় মাস থেকে তিন বছর। আর এমপি-মন্ত্রীর সুপারিশ-তদবির ছাড়া মেলে না ডায়ালাইসিসের সিরিয়াল। একই অবস্থা দেশের অন্যান্য সরকারি হাসপাতালগুলোতেও। এতে কিডনি বিকল হয়ে প্রতি ঘণ্টায় পাঁচ জন রোগি মারা যায় বলে তথ্য দিয়েছে কিডনি অ্যাওয়ারনেস মনিটরিং অ্যান্ড প্রিভেনশন সোসাইটি-ক্যাম্পস। ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন।
সঠিক তথ্য না থাকলেও ধরা হয় দেশে কিডনি রোগি দুই কোটি। এদের মধ্যে প্রতি বছরে ৬০ হাজার রোগি কিডনি বিকলের শিকার হয়। আর ৯০ ভাগ রোগিই ডায়ালাইসিস সেবা নিতে পারেন না। আর যারা ডায়ালাইসিস করান, তাদের মধ্যে চিকিৎসার ব্যয় ভার মেটাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে যান বেশির ভাগ মানুষ।
ন্যাশনাল কিডনি ইনস্টিটিউটে খরচ মাত্র ৪০০ টাকা হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে রোগি আসেন এখানে। ফলে সিরিয়াল পেতে লাগে দীর্ঘ সময়। সুপারিশ বা তদবির ছাড়া সিরিয়াল পাওয়া-ভাগ্য বলছেন রোগিরা।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা রোগিদের সরকারি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস করানোর জন্য ঘোরাঘুরি করে সিরিয়াল পেতে অপেক্ষা করতে হয় তিন বছর বা তারও বেশি। তবে এমপির সুপারিশে কাজ না হলেও, মন্ত্রীর সুপারিশে অনেকেই সিরিয়াল পেয়েছেন মাত্র ছয় মাসে। তারা বলছেন, এমপি না হয় মন্ত্রীকে ধরে তারপর এখানে আসা। অনেক লম্বা লাইনের কারণে সিরিয়াল পাওয়া যায় না। যারা পায় সেটা এক ধরনের লটারি, ভাগ্যের কারণে পায়।
ন্যাশনাল কিডনি ইনস্টিটিউট এর আবাসিক চিকিৎসক জাকির হোসেন বলেছেন, রোগি ভার্তির জন্য অনেক সময় দেখা যায়, অনেক তদবির আসে। তদবিরে মধ্যমে যে রোগিরা এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন, তাদের বেশির ভাগ রোগিরা সুপারিশকৃতদের।
প্রতি জেলায় ডায়ালাইসিস সেন্টার করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এতে ভোগান্তি কমে পরিস্থিতির উন্নতি হবে, বলছেন ন্যাশনাল কিডনি ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. নুরুল হুদা। তিনি বলেন, সরকার যে জেলা ভিত্তিক কিডনি ডায়ালাইসিস এর ব্যবস্থা করছে, এতে কয়েকটা লাভ আছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো ঢাকায় আসার প্রবণতা কমবে। যার ফলে যাতায়াতে যে খরচ তা কমবে। আরেকটি হলো নিজ জেলায় চিকিৎসা করে বাসায় চলে আসবে।
ঢাকার বাইরে মাত্র ১৫টি সরকারি হাসপাতালে ২০৪টি ডায়ালাইসিস সেন্টার চালু আছে। পিপিপির আওতায় ন্যাশনাল কিডনি ইনস্টিটিউট ও চট্টগ্রামে চালু আছে আরও ৯০টি।