শিরোনাম
◈ শিক্ষা উপদেষ্টার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান, কঠোর আন্দোলনের হুঁ.শিয়ারি শিক্ষার্থীদের (ভিডিও) ◈ রাজশাহীর বিদেশি ক্রিকেটাররা টাকা না পাওয়ায় হোটেল ছাড়ছেন না ◈ ভারত থেকে চালবাহী দুটি জাহাজ এল মোংলা বন্দরে ◈ প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের বিদেশগামীদের জন্য সতর্কবার্তা ◈ তিতুমীর কলেজকে বিশেষ কোনও সুবিধা দেওয়ার সুযোগ নেই: শিক্ষা উপদেষ্টা ◈ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা নিয়ে নতুন তথ্য জানালেন জনপ্রশাসন সচিব ◈ ঢাকার হোটেলে আটকে আছেন রাজশাহীর বিদেশি ক্রিকেটাররা ◈ পঞ্চম দিনের মতো অনশনে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা ◈ জাতীয় দলের নির্বাচকের দায়িত্ব ছাড়লেন হান্নান সরকার ◈ ক্রীড়া উপদেষ্টা ও বিসিবি সভাপতি বিপিএলে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করলেন

প্রকাশিত : ১৩ মার্চ, ২০১৯, ০৫:৩৪ সকাল
আপডেট : ১৩ মার্চ, ২০১৯, ০৫:৩৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বই নিয়েও যতো বাধা বিপত্তি

ভজন সরকার

একসময় দাবি উঠেছিলো, এখনো আছে, ওপার বাংলার বাংলা বই- পত্রিকা বন্ধ করতে হবে। কেন? আমরা গুণগত মানে কুলিয়ে উঠতে পারছি না সেই অক্ষমতায়? ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়ে যদি ইংরেজি সাহিত্য আসে তবে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ভ্যাট ট্যাক্স দিয়ে বাংলা সাহিত্য এলে অসুবিধা কোথায়?

উদ্দেশ্য কী এটা যে, আমাদের তথাকথিত সর্বাধিক পঠিত লেখকরা নিম্ন ও মাঝারি মার্কা সাহিত্যের নামে যা প্রসব করছেন, সেই বাজার ধরে রাখতে বাংলাদেশের পাঠককে বোঝাতে হবে যে, এখানে যা লেখা হচ্ছে সেগুলোই শ্রেষ্ঠ বাংলা সাহিত্য?

বাংলাদেশের অন্য লেখকদের কিংবা ওপার বাংলার লেখকদের রচনার সাথে যেন কিছুতেই পাঠক পরিচিত হতে না পারে সেই অপচেষ্টায় অচলায়তন বানানোই কী সাহিত্য জগতের বেনিয়াদের উদ্দেশ্য? অথচ বাংলাদেশে অনেক লেখক আছেন, যাদের বই পাশের দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের কাছে অসম্ভব জনপ্রিয়। ওপার বাংলায় বাংলাদেশের অনেক লেখকের বই সর্বাধিক বিক্রির তালিকাতেও নিয়মিত স্থান পায়। তাহলে পশ্চিমবঙ্গের লেখকদের বই বাংলাদেশে বিক্রি হতে অসুবিধা কোথায়? শিল্প-সাহিত্য নিয়ে অর্থনীতির আপাত লাভ-ক্ষতির এ সংকীর্ণ ধারণা অপরিণামদর্শীই শুধু নয়, আগামী প্রজন্মের জন্য ভয়ংকরও বটে। তবে অসুবিধাটা কী এটা যে, শক্তি চট্টোপ্যাধায়, বিনয় মজুমদার কিংবা জয় গোস্বামীদের কবিতা পড়ে আমাদের  তথাকথিত নন্দিতের নামাবলি মার্কা কবিদের কবিতার মান পাঠক যেন বুঝতে না পারেন সে-ই চেষ্টা এখনো অব্যাহত আছে?

অথচ  এখন যেখানে অনলাইনে  ঘরে বসেই যে কেউ সারাবিশ্বের সকল ভাষার বই পড়তে পারেন,  সেখানে বাজারে মলাটবদ্ধ বই পড়তে সমস্যার কারণটি কোথায়? এটা কী তবে সমাজের অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো সাম্প্রদায়িকতারই অন্য নাম? তাই যদি হয়ে থাকে, তবে যারা রবীন্দ্রনাথকে হিন্দু বলে একসময় নিষিদ্ধ করতে চেয়েছিলেন, তাদের সে প্রয়াসের সাথে এদের কোনো পার্থক্য আছে কী?

আগে সাহিত্য সংস্কৃতি জগতের দুঃশাসকদের চেনা যেতো সহজেই। আল মাহমুদ আর যাই করেছেন, ভনিতা করেননি। তিনি জামায়াত সমর্থক মৌলবাদী এটা তার মুখ, মুখোশ নয়। কিন্তু কতো ডজন আল মাহমুদ মুখোশের আড়ালে আছে, সেটার খবর কী আছে আমাদের কাছে? সুবেশ সফেদ পাঞ্জাবি গায়ে পান-জর্দায় ঠোঁট লাল করে ঘাড়ে চটের ব্যাগ নিয়ে আল মাহমুদের শ্মশ্রুম-িত যে সাগরেদরা ঢাকার সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনে কবিতা-নাটকপাড়ায় ঘুরছে, তারা আল মাহমুদদের চেয়েও কী ভয়ংকর নয়? সাহিত্য-শিল্প-সংগীতকে সীমান্তের বাতাবরণে আবদ্ধ করা আত্মঘাতী প্রয়াস। এমনিতেই বই প্রকাশনার বিষয়টি মলাটের সীমাবদ্ধতা থেকে মুক্ত হয়ে ইলেকট্রনিক মাধ্যমে ঢুকে পড়েছে। বিশ্বের বিখ্যাত বিখ্যাত সব প্রকাশনা সংস্থা বন্ধ হতে চলেছে। বাংলাদেশেও এ নিয়ে চিন্তাভাবনা করা উচিত।

প্রকাশকসহ বাংলা একাডেমি এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় কী উদ্যোগ নিচ্ছেন জানি না। তবে আপাতত দাবি জানাচ্ছি, ‘অমর একুশে বইমেলা’কে আগামী বছর থেকে পশ্চিমবঙ্গের বাংলা বইসহ বিশ্বসাহিত্যের সকল বইয়ের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হোক।

আমি ব্যক্তিগতভাবে যতোটুকু জানি, বাংলা একাডেমিতে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত মহাপরিচালক কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী কর্মসূত্রে বিশ্বের নানা দেশে বাস করা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন একজন আধুনিক মানুষ, তিনি অবশ্যই বাংলা একাডেমি ও একুশে বইমেলাকে কূপম-ুকতার অচলায়তন ভেঙে বাইরে বের করবেন।

লেখক : বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী, কবি ও কথাসাহিত্যিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়