নূর মাজিদ : জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন বিশ্বে কৃষিকাজ এবং শিল্পখাতে রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহার ক্রমেই বেড়ে চলেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাসায়নিকের ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে। যার সিংহভাগই হয়েছে এশিয়া এবং আফ্রিকা মহাদেশের উন্নয়নশীল এবং বিকাশমান অর্থনীতির দেশগুলোতে। ফলে এই দেশগুলোর প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং জনস্বাস্থ্যের ওপর ৫ লাখ কোটি ডলারের রাসায়নিক শিল্পের সরাসরি ক্ষতিকর প্রভাব বেড়েই চলেছে। ইয়ন, নিউজফোর ইউরোপ
গত সোমবার কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের পরিবেশ সম্মেলনের প্রথম দিনে বিশেষজ্ঞরা এসব কথা জানান। জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা গ্লোবাল কেমিক্যাল আউটলুক-২ শীর্ষক এক প্রতিবেদন চলমান অধিবেশনে উপস্থাপন করেন। সেখানে রাসায়নিক শিল্প সৃষ্ট বিভিন্ন প্রকার ক্ষতি এবং তা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে নানা প্রকার উদ্ভাবনী সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হয়। জাতিসংঘ প্রতিবেদনের উপসংহারে বলা হয়, রাসায়নিক দ্রব্যের ক্ষতিকর প্রভাব কমিয়ে আনার লক্ষ্যে গঠিত উদ্যোগ শুরতেই ১ হাজার কোটি ডলারের শিল্প হিসেবে দাঁড়িয়ে যাবে। ভবিষ্যতে এই ব্যবসায়ের পরিধি আরো বিস্তৃত হওয়ার অপার সম্ভাবনা রয়েছে।
জাতিসংঘের পরিবেশ দপ্তরের নির্বাহী পরিচালক জয়েস মসুয়া বলেন, ‘রাসায়নিক উপাদান মানুষের কল্যাণে আসবে নাকি সেটা মানবতার জন্য বিপর্যয় সৃষ্টি করেই চলবে, সেটা আমাদের প্রতিক্রিয়ার ওপর নির্ভর করছে। ক্ষতিকর রাসায়নিক শিল্প নিয়ন্ত্রণে আমাদের এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। এই জন্যে বিশ্ব সম্প্রদায়ের অনেক কিছুই করা বাকি আছে, এটা আমাদের প্রতিবেদনে ¯পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।’
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে প্রকাশ, রাসায়নিক শিল্প মানবতার কল্যাণে স্বাস্থ্য,পুষ্টি এবং উৎপাদন বৃদ্ধি করে খাদ্য নিরাপত্তা তৈরিতে ইতিবাচক অবদান রাখছে। তবে এর পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রক্রিয়াকে গতিশীল করেছে। শিল্পখাতে ক্ষতিকর রাসায়নিকের ব্যবহার কমিয়ে আনার লক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারি নীতিমালা থাকা সত্ত্বেও এগুলোর ব্যবহার দ্বিগুণ বেড়েছে। যার পরিমাণ সবচাইতে বেশি বেড়েছে আফ্রিকা মহাদেশে। কারণ আফ্রিকা কল্টান, কোবাল্টসহ ইলেকট্রনিক সামগ্রী নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের মূল যোগানদাতা। এই সকল খনিজ উত্তোলন এবং এর পরিশোধনের প্রক্রিয়ায় মহাদেশটির প্রাকৃতিক ভারসাম্য ব্যাপক হুমকির মুখে পড়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :