শিরোনাম

প্রকাশিত : ১১ মার্চ, ২০১৯, ০২:৪৫ রাত
আপডেট : ১১ মার্চ, ২০১৯, ০২:৪৫ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জাপানে আমাদের মধু রপ্তানি হচ্ছে বললেন কৃষি মন্ত্রী

মতিনুজ্জামান মিটু: রোববার ( ১০ মার্চ) রাজধানীর ফার্মগেটে আ. কা. মু গিয়াস উদ্দীন মিলকী অডিটরিয়াম চত্বরে তিন দিনের জাতীয় মৌ মেলা ২০১৯ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ‘মৌচাষ ও মধুর বাজার সম্প্রসারণ, সমস্যা ও উত্তরণ’ বিষয়ে সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক আরো বললেন, আমাদের কৃষি পণ্য বহুমুখীকরণের মাধ্যমে জাপানসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রফতানি বাড়াতে হবে। খাবার মানসম্পন্ন, নিরাপদ ও সুস্বাদু হলে আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের রফতানি বাড়বে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, সরকারের উন্নয়নের যে ধারাবাহিকতা সৃষ্টি হয়েছে, তা অব্যাহত রাখতে হবে। কৃষিসহ ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধশালী করতে হবে। কৃষিকে প্রকৃত বাণিজ্যিক কৃষিতে রুপান্তর করতে হবে, এর জন্য বাজারজাতকরণ ও রপ্তানি অপরিহার্য।
তিনি বললেন, আমাদের জমি অনক ভালো। আমরা সারা বছর ধরে উৎপাদন করতে পারি। আমাদের দেশের মানুষের আয় কম। একটু বেশি উৎপাদন হলে আর তারা দাম পায় না। এসকল ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি নিতে হবে। প্রতিবছর প্রচুর মধু বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। মধুর বাণিজ্যিকীকরণের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি ও রফতানি প্রক্রিয়াকে সম্প্রসারণ করতে বিভিন্ন ক্ষেত্র খুঁজে বের করতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে আহবান জানান ।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মীর নূরুল আলমের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষি হর্টিকালচার উইংয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক শাহ মো. আকরামুল হক। মৌচাষ ও মধুর বাজার সম্প্রসারণ, সমস্যা ও উত্তরণ’ বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ব বিভাগের প্রফেসর মো. আহসানুল হক স্বপন। মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন বিসিকের মৌ চাষ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক জনাব খোন্দকার আমিনুজ্জামান ও বাংলাদেশ এগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) এর এ এফ এম ফখরুল ইসলাম মুন্সী।

কৃষি মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ বিভিন্ন সংস্থার উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ, আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ, বিজ্ঞানী, গণমাধ্যমকর্মী, বিসিক এবং দেশের বিভিন্ন এলাকার মৌখামারি এবং উদ্যোক্তাগণ সেমিনারে নেন। মেলায় সরকারি-বেসরকারি ৫৮টি প্রতিষ্ঠানের ৫৯ টি স্টল রয়েছে। দেশের বিভিন্ন অ লে চাষ করা সরিষা, ধনিয়া, তিল, কালিজিরা, খেসারী, লিচু এসব ফসলে মৌ-চাষ, মধু আহরন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারছেন মেলায় আসা দর্শনার্থীরা। সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সকলের জন্য খোলা থাকছে।

মাঠ ফসলসহ বিভিন্ন ফসলে মৌচাষ করলে মধু উৎপাদনের পাশাপাশি ফসলের উৎপাদন অনেকাংশে বেড়ে যাবে এবং পরিবেশবান্ধব খামার ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এ মেলার আয়োজন করা হয়। ‘পুষ্টি, আয় ও ফলন বাড়াবে মৌচাষ’ প্রতিপাদ্যে শুরু হওয়া জাতীয় মৌ মেলা চলবে ১২ মার্চ পর্যন্ত। মেলার আয়োজক কৃষি মন্ত্রণালয়।

উল্লেখ্য, মধু এখন রফতানি পণ্য তালিকায় নাম লিখিয়েছে। ফসলের মাঠে মৌমাছি বিচরণ করলে পরাগায়ণের কারণে ফসলের উৎপাদন ১৫-২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে। মৌচাষের মাধ্যমে মধু আহরণে সমৃদ্ধি ও শস্য বা মধুভিত্তিক কৃষিজ উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। মৌসুমে সরিষা, ধনিয়া, তিল, কালিজিরা, লিচুসহ আবাদ হয় মোট প্রায় ৭ লাখ হেক্টর জমিতে বা বাগানে। মাত্র ১০ শতাংশ জায়গায় মৌ বাক্স বসিয়ে মধু আহরণ করে। প্রায় ২৫ হাজার মৌ-চাষিসহ মধু শিল্পে জড়িত প্রায় ২ লাখ মানুষ। উৎপাদন প্রায় ৬ হাজার টন। ফসলের এই পুরো সেক্টরটিকে মধু আহরণের আওতায় আনতে পারলে ফসলের উৎপাদন দ্বিগুণেরও বেশি হবে। দেশে এখন প্রায় সাড়ে ছয় লাখ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়। পুরো সরিষার মাঠ মধু সংগ্রহের আওতায় আনা গেলে উৎপাদন যেমন বাড়বে, তেমনি ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতাও কমবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়