উত্তম কুমার হাওলাদার, কলাপাড়া(পটুয়াখালী) : বঙ্গোপসাগর থেকে অসংখ্য মৃত জলিফিশ ভেসে আসছে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সৈকতে। গত তিন দিন ধরে জোয়ারের সময় সাগরের ঢেউয়ে দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সৈকতের একাধিক পয়েন্টে ভেসে আসছে এসব জলজ প্রাণী আটকা পরছে। কোনটা আকারে ছোট। কোনটা বড়। দেখতে অনেকটা অক্টোপাসের মতো। তবে এগুলো কি কারণে মারা যাচ্ছে, এর সঠিক কারণ কেউ বলতে পারছে না।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিকাল থেকে স্থানীয় ও পর্যটকরা সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে এ জেলিফিশগুলো দেখতে পাচ্ছে। উত্তাল সাগরের ঢেউয়ে ভেসে তীরবর্তী এলাকায় এসে আটকা পড়ছে। ৪ বছর আগেও এমন মৃত জেলিফিশ কুয়াকাটা সি-বীচে দেখা যায়। তবে তা পরিমানে এত বেশি ছিল না। স্থানীয় জেলেদের কাছে জেলিফিশ সাগরের লোনা হিসেবে পরিচিত। গভীর সমুদ্রে জেলেদের জালে এসব জেলিফিশ আটকা পড়ে মারা যেতে পাড়ে বলে ধারনা স্থানীয়দের।
আগত পর্যটক রায়হান জানান, তিনি জেলিফিশের নাম শুনেছেন, এই প্রথম দেখেছি। এ গুলো দ্রুত সরিয়ে না নিলে পঁচে সৈকতের পরিবেশ দূষিত করবে।
জেলে মো.কাওসার হোসেন জানান, গত ৪/৫ বছর আগে তার জালে ব্যাপক পরিমান জেলিফিশ ধরা পড়েছিল। সে জাল পরে আর ব্যবহার করতে পারেননি।
কুয়াকাটা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো.কামরুজ্জামান বলেন, আমিও গত কয়েকদিন যাবৎ সৈকতের একাধিক পয়েন্টে অসংখ্য জেলিফিশ বালুতে আটকে পড়ে থাকতে দেখছি।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনোজ কুমার সাহা জানান, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে। তবে এ বিষয়ে কোন গবেষণা না থাকায় বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয় বলেও তিনি সাংবাদিকদের জানান।
কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আবদুল বারেক মোল্লা জানান, মৃত জেলিফিশের কারণে পর্যটকদের যাতে কোন ক্ষতি না হয়, সেজন্য এ গুলো সরিয়ে মাটিতে পুঁতে ফেলার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, জেলিফিশ বিভিন্ন প্রজাতির। দলবদ্ধভাবে চলাফেরার কারণে সমুদ্রে মৎস্য শিকারীদের জালে ধরা পড়ছে। জেলিফিশ কোনটি ডোরাকাটা আবার কোনটি একেবারে সাদা। এগুলোর শরীরের ৯০ ভাগই জল। জালে একবার আটকে গেলে তা ছাড়ানো সম্ভব হয় না। ফলে বেশিরভাগ সময়ই জেলেদের জাল সমুদ্র বক্ষে কেটে ফেলে দিতে বাধ্য হয়। কেননা, এসব জাল পুনরায় ব্যবহার উপযোগী থাকে না।
আপনার মতামত লিখুন :