নিউজ ডেস্ক: ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাইগামী ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজটিতে (রেজি. নং এস২এএইচভি) গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেনবাহিনীর কমান্ডো অভিযানের সময় এই গুলি বিদ্ধ হয়ে থাকতে পারে। ইতোমধ্যে মামলার তদন্ত সংস্থা চট্টগ্রামের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের একটি দল বিমানটি পরিদর্শন করেছে। এছাড়া বিমানের প্রকৌশল শাখার কর্মকর্তারাও বিমানটি পরিদর্শন করে একটি গুলির চিহ্ন পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। একারণে বিমানটি নতুন করে আবার কবে উড়তে পারবে তা বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা।
উড়োজাহাজটির ভেতরে গুলির চিহ্ন থাকার তথ্য নিশ্চিত করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড ম্যাটেরিয়াল ম্যানেজমেন্ট) গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অব.) খন্দকার সাজ্জাদুর রহিম বলেন, ‘বিমানটির প্রাথমিক একটি অ্যাসেসমেন্ট করা হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ অ্যাসেসমেন্ট করে ক্ষয়-ক্ষতি নিশ্চিত হওয়া যাবে। বিমানটির প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বোয়িং এর সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় মেরামত শেষে ফের অপারেশনে যাবে বিমানটি।
তিনি বলেন, ‘ঠিক কবে বিমানটি আকাশে উড়তে পারবে তা এখনই বলা সম্ভব না। আমরা চেষ্টা করছি যতদ্রুত সম্ভব বিমানটি যেন আবার উড়তে পারে।’
বিমান ও তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তদন্তভার হাতে পাওয়ার পরপরই চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা শাহ আমানত বিমানবন্দর এলাকায় গিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজটি পরিদর্শন করেন। উড়োজাহাজের ভেতর তারা একটি গুলির চিহ্ন পান। তাদের ধারণা, কমান্ডোরা যখন অভিযান চালায় তখন এই গুলি বিমানের বডিতে (যাত্রী বহনকারী অংশের বাইরের কাঠামোতে) বিদ্ধ হয়।
ওই সূত্র বলছে, উড়োজাহাজটি বর্তমানে সিভিল এভিয়েশনের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। কাগজে-কলমে এটি এখনও জব্দ দেখানো হয়নি। জব্দ দেখানো হলেও এটি সিভিল এভিয়েশনের তত্ত্বাবধানেই রাখা হবে বলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
এদিকে বিমানের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আগামী দুই-একদিনের মধ্যে আবারও উড়োজাহাজটি পরিদর্শন করে পূর্ণাঙ্গ আরেকটি অ্যাসেসমেন্ট করা হবে। পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পরই ঠিক কতদিন পর তা রিকভার করা যাবে সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে এজন্য খুব বেশি সময় লাগবেও না বলে তিনি জানান।
ওই কর্মকর্তা জানান, বিমানটি সার্ভিসে না থাকার জন্য বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে। ফলে ফ্লাইট শিডিউলেও কিছুটা হেরফের হতে পারে। তবে তারা ফ্লাইট শিডিউল ঠিক রাখতে চেষ্টা করছেন।
বিমান সূত্র জানায়, বর্তমানে বিমানের বহরে রয়েছে ১৩টি উড়োজাহাজ। ২০০৮ সালে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বোয়িং কোম্পানির সঙ্গে ২.১ বিলিয়ন ইউএস ডলারের ক্রয় চুক্তির অধীনে ১০টি উড়োজাহাজ ক্রয় আদেশ দিয়েছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এরমধ্যে ৮টি উড়োজাহাজ ইতোমধ্যে বিমান বহরে যুক্ত হয়েছে। বহরের চারটি উড়োজাহাজই বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের। যার মধ্যে একটি ছিনতাইচেষ্টার কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আপনার মতামত লিখুন :