মঈন মোশাররফ : নিহত ব্লগার অভিজিতের স্ত্রী বন্যা আহমেদ বলেন, আমাদের উপর আক্রমণের পর ক্রমাগতভাবে শুনে আসছিলাম, প্রশাসন আসামীদের ধরে ফেলেছে এবং যাদের ধরেছে তারাই আসল আসামী। কিন্তু কয়েক মাস পর এই গল্প পাল্টে আবার নতুন গল্পের সৃষ্টি হয়। এগুলো নাটক ছাড়া আর কিছুই নয়।
মঙ্গলবার বিবিসি বাংলাকে তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে বাকস্বাধীনতা পরের কথা সরকারের বিরুদ্ধে কেউ কোনো শব্দ উচ্চারণ করতে পারে না। ক্রস ফায়ারের ভয় এবং যে কোনো সময় তুলে নেয়ার ভয় আছে। বর্তমানে শুধু ধর্ম নিয়ে নয়, রাজনৈতিকভাবে কেউ তার মতপ্রকাশ করতে পারে না। বাংলাদেশ একটা পুলিশি স্টেটে পরিণত হয়েছে। আজকে শুধু লেখক বøগারই নয়, কারো কোনো নিরাপত্তা নেই। আপনি যদি সরকারের কাছের এবং সরকারের লোক হয়ে থাকেন তাহলে আপনার নিরাপত্তা থাকবে।
তিনি বলেন, আমি অভিজিৎ হত্যা ঘটনার একজন ভিকটিম এবং একজন প্রত্যক্ষ সাক্ষি কিন্তু আমার সাথে বাংলাদেশের সরকার ও গোয়েন্দা বিভাগের কেউ কখনো যোগাযোগ করেনি। আমার কোনো জবানবন্দি নেয়নি। এই বিচার নিয়ে আমি কিছুই আশা করি না।
তিনি জানান, পুলিশের মতে, প্রধান আসামী মেজর জিয়া এবং প্রধান আরেকজনকে গ্রেফতার করেনি। তিন নাম্বার আসামী যাকে পুলিশ মাস্টার মাইন্ড বলে, তাকেও পুলিশ কাস্টরিতে রেখ ক্রসফায়ারে মেরে ফেলছে। আমি এই সরকারের কাছ থেকে কোনো কিছুই আশা করছিলাম না। এই তিনজনকে নিয়েই সরকার নাটক করছে, এটা না করলেও আমি অবাক হতাম না ।
বর্ণা বলেন, অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের পর আমি রয়টারর্স এর সাঙ্গে এক সাক্ষাৎকার দিয়েছিলাম। তখন প্রধানমন্ত্রীর ছেলে জয় বলেছিলো, ওরা এথিস্ট ব্লগারদের প্রটেকশন দেয়ার ব্যাপারে কোনো কিছু প্রকাশ্যে বলতে চান না।
বন্যা আরো বলেন, সবকিছু এখন রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার হবে। এসব কিছুই হচ্ছে রাজনৈতিক খেলার অংশ। সরকার রাজনৈতিক খেলার অংশ হিসেবে কখন কি সাজিয়ে দেখাবে, সেটা নিয়ে আমি কখনো চিন্তিত ছিলাম না। সরকার যখন প্রথম কথা বললে, এই ঘটনা প্রসঙ্গে আইজি এবং প্রধানমন্ত্রী দুজনেই বলেছিলেন আমরা এই হত্যাকাণ্ড কে সমর্থন করি না, কিন্তু যারা ধর্ম নিয়ে লিখছে তাদেরকেও সমর্থন করি না। এই বিষয়ে প্রতিকার করার ইচ্ছা কখনো ছিলো না। তাই তার ব্লগারদের প্রটেকশন দিলে রাজনীতি তাদের বিপক্ষে যাবে । কিন্তু একটা দেশের সরকারের দায়িত্ব দেশের সকলের নিরাপত্তা প্রদান করা ।
আপনার মতামত লিখুন :