সাত্তার আজাদ, সিলেট: প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটের মানুষ এক সময় কৃষি বিমুখ ছিল। জমি পতিত পড়ে থাকত। সিলেটে তখন কৃষি উৎপাদনের হার ছিল দেশের সর্বনিম্ন। সেই সিলেটে এখন বদলে গেছে কৃষি চিত্র। প্রযুক্তির ব্যবহারে আধুনিক কৃষি ব্যবস্থার বিস্তার ঘটেছে পুরো সিলেট জুড়ে। প্রযুক্তির কল্যাণে কম কষ্টে বেশি ফসল উৎপাদনের কারণে এখন অনেকেই কৃষি কাজে মনোযোগী হচ্ছেন।
সিলেটে কৃষি কাজে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে ঝুঁকছেন মফস্বলের কৃষকরা। এতে করে যেমন সুফল পাচ্ছেন কৃষক পাশাপাশি পতিত জমির পরিমাণও কমে আসছে। বীজতলা তৈরি, চারা উৎপাদন, রোপণ, ধান কাটা ও মাড়াইয়ে এখন আর কষ্ট করতে হয়না। সবই প্রযুক্তির কল্যাণে সহজ উপায়ে করা যাচ্ছে। তাই কম কষ্টে বেশি ফসল উৎপাদন হওয়াতে অনেকেই জীবন জীবিকার মাধ্যম হিসেবে কৃষিকাজকে বেছে নিচ্ছেন। কম কষ্টে, কম জনবল দিয়ে বেশি ফসল উৎপাদনে লাভের মুখ দেখতে পাওয়ায় কৃষিতে আগ্রহী হচ্ছেন তরুণরাও।
সরকার কৃষি উৎপাদন বাড়াতে ও কৃষকদের প্রযুক্তির ব্যবহারে উৎসাহিত করতে এ খাতে ভর্তুকি দিচ্ছে। ৫০-৭০ ভাগ পর্যন্ত সরকারি ভর্তুকিতে এসব কৃষিযন্ত্রের সুবিধা ভোগ করছেন কৃষকরা।
সিলেটে কৃষিখাতে কম্বাইন হারভেস্টার, রিপার, রাইস ট্রান্সপ্লান্টার ব্যবহার করছেন আধুনিক কৃষকরা। কম্বাইন হারভেস্টার ও রিপার দিয়ে জমির ধান কাটা সহজ। ভেলার মেশিনের সাহায্যে খড়ের রোল বানিয়ে সংরক্ষণের জন্যে রাখা যায়। রাইস ট্রান্সপ্লান্টার দিয়ে জমিতে সহজে ও দ্রুত সময়ে ধান গাছ রোপণ করা যায়।
স্থানীয় অনেক কৃষকই জানান, কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহারে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। আরও প্রশিক্ষণ ও যন্ত্রপাতি পেলে সিলেটে অনাবাদি জমি হ্রাস পাবে। সিলেট কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের আঞ্চলিক কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আলতাবুর রহমান বলেন, যন্ত্রের মাধ্যমে খুব সহজেই কৃষিকাজ সম্পন্ন করা যায়। সরকারের প্রতিশ্রুতিই হচ্ছে কৃষিতে যান্ত্রিকিকরণ। এরই ধারাবাহিকতায় যন্ত্রপাতিতে ভর্তুকি’র মাধ্যমে কৃষকদের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এতে কমেছে কৃষকের ব্যয়ভারও।
সিলেট কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ পরিচালক এম ইলিয়াস জানালেন, বাংলাদেশের কৃষি ব্যবস্থার আধুনিকায়নে সরকার ভর্তুকিতে কৃষকদের কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহারে উৎসাহিত করছে। কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহারে সিলেটে উৎপাদন বাড়ার সাথে কমছে পতিত জমির পরিমাণ। এটা সিলেটের জন্য বড় সুখবর।
আপনার মতামত লিখুন :