মহিব আল হাসান: ঢাকাই সিনেমার প্রিয়দর্শিনী নায়িকা মৌসুমী বলেছেন, মান্না ভাইকে নিয়ে বলতে গেলে কথা শেষ হবে না। মান্না ভাই আমার অনেক কাছের একজন বন্ধু ছিলেন। তার সাথে আমার প্রথম ছবিতে কাজ করা লটতরাজে। এরপর ৮০টি ছবিতে আমি আর মান্না ভাই জুটি হয়ে কাজ করি। আমাদের দুজনার মধ্যে বোঝাপড়াটা ছিল দারুণ, তেমনি ছিলো বন্ধুত্বটাও।
‘চলচ্চিত্রে একটা সময় ছিলো যখন অশ্লীলতার কারণে কাজের জায়গা কমে যাচ্ছিল, অন্যদিকে সানী (ওমর সানী ) কাজ কমিয়ে দিয়েছে। সেসময় যদি মান্না ভাই না থাকতো তাহলে সিনেমা থেকে সরে যেতে হতো। কিন্তু আমার বন্ধু মান্না ভাই সেটি হতে দেননি। একের পর এক ছবিতে কাজের জন্য নিয়েছেন, আর সুপার-ডুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়েছি।’
মৌসুমী স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কেঁদে বলেন, মান্না ভাইয়ের ভাবনা চিন্তা ছিলো সবসময় সিনেমাকে নিয়ে। ঘুম থেকে উঠে সকালবেলা, আবার রাতে ঘুমানো পর্যন্ত সব সময়ের চিন্তাই ছিল ছবি নিয়ে। গানের জন্য যেমন দরকার মনোরম লোকেশন, ফাইটিংয়ের যেমন লোকেশন দরকার তেমনটায় তিনি বেছে নিতেন। যাতে করে সিনেমাটি ভালো হয়। একটা শট দেওয়ার পর তিনি সেই শটটা নিয়েই আবারো ভাবতেন কেমন হবে শট এমন করে দিলে।
আজ মান্না ভাইয়ের চলে যাওয়ার এগারো বছর। ২০০৮ সালের এই দিনটি ছিল বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো। তার মৃত্যুর একদিন আগেই হাসিমুখে শুটিং করে এফডিসি থেকে বিদায় নিলেন। কিন্তু পরেরদিন শুনতে পেলাম তিনি আর নেই। সবাইকে শোকে স্তব্ধ করে চলে গেলেন মান্না ভাই। এমন দুঃসংবাদের জন্য আমরা কেউ প্রস্তুত ছিলাম না।
আজ এই মান্নার নাম সবার মনে পড়ে। চলচ্চিত্রের যেকোনও আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতেন তিনি। সেই কথা অনেকে অনেক জায়গায় বলেন। মান্না নেই জন্যে চলচ্চিত্রের এমন অবস্থা। আজও আমরা সবাই মান্না ভাইয়ের অভাবটা প্রতি মুহূর্তে অনুভব করি। মান্নাবিহীন ঢাকাই সিনেমা যেন অনেকটাই মলিন। মান্নাবিহীন পুরো চলচ্চিত্রটাই কেমন যেন ছন্নছাড়া। কারণ, মান্না ভাই শুধু একজন নায়ক কিংবা অভিনয় শিল্পীই ছিলেন না। তিনি ছিলেন আপাদমস্তক নিবেদিত প্রাণ একজন সিনেমাপ্রেমী, সিনেমাকর্মী।
উল্লেখ্য ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান ঢাকাই ছবির জনপ্রিয় নায়ক মান্না।
আপনার মতামত লিখুন :